জুনায়েদ বাবুনগরীকে হাটহাজারী মাদ্রাসা সংলগ্ন কবরস্থানেই দাফন

জুনায়েদ বাবুনগরী
ফাইল ছবি

হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরীকে চট্টগ্রামের দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসা সংলগ্ন কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। আজ রাত পৌনে ১২টার দিকে হেফাজতের প্রতিষ্ঠাতা আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর কবরের পাশে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়।

এর আগে জুনায়েদ বাবুনগরীকে তাঁর গ্রামের বাড়ি ফটিকছড়ির বাবুনগরে দাফন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। হাটহাজারী মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষা পরিচালক মাওলানা শুয়াইব প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘মাদ্রাসার শিক্ষক ও পরিবারের লোকজন বৈঠক করে জুনায়েদ বাবুনগরীকে গ্রামের বাড়ি ফটিকছড়ির বাবুনগরে দাফন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’

তবে হাটহাজারী মাদ্রাসায় রাত সোয়া ১১টার দিকে জানাজার পর বাবুনগরীর মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি ফটিকছড়ির দিকে যেতে চাইলে মাদ্রাসার ছাত্ররা ঘিরে ধরেন। তাঁরা হাটহাজারী মাদ্রাসা সংলগ্ন কবরস্থানেই দাফনের জন্য দাবি জানাতে থাকে। একপর্যায়ে অনেকে অ্যাম্বুলেন্সটির সামনে শুয়ে পড়েন। এই পরিস্থিতিতে হাটহাজারীতেই দাফন করা হয় জুনায়েদ বাবুনগরীকে।

এর আগে হাটহাজারী মাদ্রাসায় জানাজা সম্পন্ন হয়। স্থানীয় সাংসদ আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালামসহ স্থানীয় রাজনীতিবিদ ও গণ্যমান্য লোকজন ছাড়াও হাজারো মানুষ জানাজায় অংশ নেন। মাদ্রাসার মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে মাদ্রাসা সংলগ্ন হাটহাজারী-খাগড়াছড়ি সড়কসহ আশপাশের এলাকায় জানাজায় অংশ নেন মানুষ। এ সময় ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। জানাজায় ইমামতি করেন হেফাজতে ইসলামের সদ্য নিযুক্ত আমির মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। তিনি জুনায়েদ বাবুনগরীর মামা।

জুনায়েদ বাবুনগরী দীর্ঘদিন ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে ভুগছিলেন। এরপর বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে চট্টগ্রাম নগরের বেসরকারি হাসপাতাল সিএসসিআরে নেওয়া হয়। সেখানে নেওয়ার পর দুপুর ১২টার দিকে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

জুনায়েদ বাবুনগরী দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষা পরিচালক ছিলেন। গত বছরের ১৫ নভেম্বর তিনি হেফাজতের আমির নির্বাচিত হন। এর আগে ২০১৩ সালে হেফাজত প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে তিনি মহাসচিব ছিলেন।

চলতি বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ২৬ মার্চের সহিংসতার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে জুনায়েদ বাবুনগরীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়। ২২ এপ্রিল হাটহাজারী থানায় মামলাগুলো করা হয়।

এর আগে শাপলা চত্বরের ঘটনায় মারধর, লুটতরাজ ও হত্যার অভিযোগ এনে মতিঝিল থানায়ও মামলা হয় বাবুনগরীর বিরুদ্ধে। সে মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল এবং পরে জামিন পান।