ঝুমন দাশের জামিন না হওয়া দুঃখজনক: রানা দাশগুপ্ত

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে হামলার পর ঝুমন দাশের ঘরের ভেতরে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে থাকা মালামাল
ফাইল ছবি

সুনামগঞ্জের শাল্লায় যুবক ঝুমন দাশের জামিন না হওয়া দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত।

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সংগঠনসমূহের ঐক্য মোর্চার সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ফেসবুকে হেফাজতে ইসলামের নেতা মাওলানা মামুনুল হককে নিয়ে শাল্লার নোয়াগাঁও গ্রামের ঝুমন দাস আপত্তিকর পোস্ট দিয়েছেন, এমন অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিলে গত ১৬ মার্চ রাতে নোয়াগাঁও গ্রামবাসীই ঝুমনকে পুলিশে ধরিয়ে দেন। কিন্তু তারপরও পরদিন পার্শ্ববর্তী চারটি গ্রামের লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে এ গ্রামে হামলা করেন। এতে ৯০টি ঘরবাড়ি, ১টি মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হামলাকারীরা এ সময় লুটপাট চালান। ঘরের জিনিসপত্র ও টাকাপয়সা নিয়ে যান। সেদিনই শাল্লা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে ঝুমনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন।

আরও পড়ুন

রানা দাশগুপ্ত বলেন, আমরা সুনামগঞ্জের শাল্লার ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণ করছি। যাঁরা এই ঘটনার জন্য দায়ী, তাঁরা জামিনে আছেন কিন্তু ঝুমন নির্দোষ হওয়া সত্ত্বেও আজও তাঁর জামিন দেওয়া হলো না। ঝুমন দাস অনতিবিলম্বে জামিন পাবেন বলেও আশা করেন তিনি।

জাতীয় প্রেসক্লাবে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সংগঠনসমূহের ঐক্য মোর্চার সংবাদ সম্মেলন। ১৬ সেপ্টেম্বর
ছবি: প্রথম আলো

এর আগে সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য পাঠ করেন রানা দাশগুপ্ত। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, দেশে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি ঘাপটি মেরে বসে আছে এবং প্রবল শক্তি সঞ্চয় করছে। গত এক-দেড় বছর এ দেশের বিভিন্ন জেলায় সাম্প্রদায়িক হামলা ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ধারাবাহিকভাবে ঘটে চলেছে।

সংবাদ সম্মেলন থেকে অনতিবিলম্বে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করার দাবি জানানো হয়। এ ছাড়া জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশনার অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন বাস্তবায়ন, পার্বত্য চুক্তি ও পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন এর যথাযথ বাস্তবায়ন ও সমতলের সংখ্যালঘু জাতিসত্তাগুলোর ভূমি রক্ষায় স্বতন্ত্র ভূমি কমিশন গঠন এবং আইনের ৯৭ ধারা বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলন শেষে দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি উদ্বোধন করা হয়। রানা দাশগুপ্ত জানান, আগামী নভেম্বরে ১ লাখ গণস্বাক্ষরসংবলিত স্মারকলিপি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় দেওয়া হবে। একই দাবিতে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সারা দেশ থেকে লংমার্চ করে ঢাকায় সমাবেশ করা হবে বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন