টানা ১৫ দিন ইন্টারনেট না থাকলে বিল দিতে হবে না

প্রতীকী ছবি: রয়টার্স

এক মাসের মাথায় দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবার নিয়ম সংশোধন করে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
আজ বৃহস্পতিবার কমিশনের সংশোধিত নির্দেশনায় জানিয়েছে, টানা ১৫ দিন ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকলে গ্রাহককে ওই মাসে সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানকে কোনো বিল দিতে হবে না। এর আগে গত ৫ অক্টোবর বিটিআরসি তাদের নির্দেশনায় বলেছিল টানা তিন দিন ইন্টারনেট না থাকলে সে মাসে বিল দিতে হবে না।

বিটিআরসির এ নির্দেশনা সব ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের (আইএসপি) কাছে পাঠানো হয়। সংস্থাটি জানিয়েছে, গত ৬ জুন চালু করা ‘এক দেশ, এক রেট’ কর্মসূচির আওতায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের সেবামূল্য ঘোষণা করা হয়। এবার আগের সেবার মানদণ্ডের ঘোষণার সংশোধিত নির্দেশনা দেওয়া হলো।

নির্দেশনায় বলা হয়, টানা পাঁচ দিন ইন্টারনেট সেবা বিচ্ছিন্ন থাকলে গ্রাহকের কাছ থেকে ওই মাসে মোট বিলের ৫০ শতাংশ নেওয়া যাবে। টানা ১০ দিন ইন্টারনেট না থাকলে নেওয়া যাবে মাসিক বিলের ২৫ শতাংশ। আর ১৫ দিন ইন্টারনেট না থাকলে সে মাসে কোনো বিলই নেওয়া যাবে না।

বিটিআরসি গত অক্টোবরে ইন্টারনেট সেবার নিয়ম বেঁধে দিলে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সরবরাহকারীদের সংগঠন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) সময়সীমা আরও বাড়ানোর অনুরোধ জানায়। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, বিভিন্ন এলাকায় পেশিশক্তিধারীরা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট লাইন নিয়ন্ত্রণ করেন। এ ছাড়া উন্নয়ন কাজ বা কোনো কারণে লাইন কেটে গেলে তা ঠিক করতে দু তিন দিন লেগে যায়। সেক্ষেত্রে বিটিআরসির আগের নিয়ম অনুযায়ী সেবাদাতাদের জন্য ঝামেলা হয়ে যেত। তাই আইএসপিএবি বিটিআরসির কাছে ইন্টারনেট সেবা বিঘ্ন হলে বিলের সমন্বয়ের জন্য সময় বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছিল। তবে তারা আরও বেশি সময় বাড়ানোর অনুরোধ করেছিল। বিটিআরসি তার চেয়ে কিছুটা কমিয়েছে বলে জানান এমদাদুল হক। নতুন নির্দেশনা ‘এক দেশ, এক রেট’ কার্যকর করতে সহায়তা করবে বলে জানান তিনি।

‘এক দেশ, এক রেট’ কর্মসূচির আওতায় গত জুনে তিনটি প্যাকেজ ঘোষণা করে বিটিআরসি। প্রথম প্যাকেজের মূল্য মাসে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা, গতি হবে ৫ এমবিপিএস (মেগাবিট পার সেকেন্ড)। দ্বিতীয় প্যাকেজের মূল্য মাসে সর্বোচ্চ ৮০০ টাকা, এর গতি ১০ এমবিপিএস। আর তৃতীয় প্যাকেজের গতি ২০ এমবিপিএস, দাম মাসে সর্বোচ্চ ১ হাজার ২০০ টাকা। মহানগর, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নে একই মূল্যে ইন্টারনেট দিতে হবে। এই দাম নির্ধারণ করা হয়েছে শেয়ারড বা ভাগাভাগির (১: ৮) ব্যান্ডউইডথের ক্ষেত্রে।

বিটিআরসি সংশোধিত নির্দেশনাতেও বলেছে, সেবাদাতারা নতুন নতুন প্যাকেজ দিতে পারবে। তবে সেটা হতে হবে অনুমোদিত প্যাকেজের আদলে এবং গতির সর্বনিম্ন সীমা ৫ এমবিপিএস ঠিক রাখতে হবে। নতুন প্যাকেজের জন্যও অনুমোদন নিতে হবে। এর বাইরে কোনো প্যাকেজ দিলে কমিশন ব্যবস্থা নেবে। অনুমোদিত সেবামূল্য আইএসপির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।

বিটিআরসি নতুন নির্দেশনায় আরও বলেছে, গ্রাহকের অভিযোগ (টিকেটিং নম্বরসহ) দ্রুত সমাধান করতে হবে এবং তথ্য অন্তত ছয় মাসের জন্য সংরক্ষণ করতে হবে।
বিটিআরসির হিসাবে, গত সেপ্টেম্বর মাস শেষে দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারকারী দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৭০ হাজার।