টিকা না আসা পর্যন্ত প্রত্যেকের মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে

অক্টোবর থেকে দেশে আবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের হার বেড়েছে। বেড়েছে নতুন আক্রান্ত ও মৃত্যুর হারও। এ অবস্থায় করোনার টিকা না আসা পর্যন্ত প্রত্যেকের মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। জীবন ও জীবিকার পাশাপাশি সবার স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতের জন্য সচেতন হতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে বুয়েট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে ‘কোভিড মহামারির বিরুদ্ধে সুরক্ষা শক্তিশালী’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা। সেমিনারে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বুয়েট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুনির উদ্দিন আাহমেদ।

মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংগঠনের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক কাজী এম আরিফ। তিনি প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীকে স্মরণ করে বলেন, দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পরই তাঁর নেতৃত্বে বুয়েট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন করোনা মোকাবিলায় কাজ শুরু করেছিল। সেই কার্যক্রম অব্যাহত আছে।

সেমিনারে বুয়েটের উপাচার্য সত্যপ্রসাদ মজুমদার বলেন, করোনাকালে ছাত্রছাত্রীরা বাড়িতে পড়াশোনার বাইরে কিছু করতে পারছে না। তারা আর্থিক সংকটে আছে। অনেকে মানসিক বিষাদগ্রস্ত হয়েছে। এ জন্য অনলাইনে পাঠদানের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে তাদের প্রফুল্ল রাখতে হবে।

কোভিড জাতীয় টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজরি কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে আশাবাদ তৈরি হয়েছে। তবে টিকা ঠিক কত দিন সুরক্ষা দিতে পারে, তার নিশ্চয়তা পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, করোনার শুরুর দিকে জনস্বাস্থ্য বিশেষ কোনো মনোযোগ পায়নি। তাই করোনা প্রতিরোধের কথা ভাবতে হবে। এ জন্য মাস্ক পরা ও শারীরিক দূরত্ব মানার বিকল্প নেই।
ঢাকার কোভিড হাসপাতালগুলোতে কোভিড রোগীরা বেশি ভিড় করছে বলে মন্তব্য করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এ বি এম খুরশিদ আলম। তিনি বলেন, ‘দেশের সব অঞ্চল থেকে মানুষ ঢাকায় চলে আসছে। ঢাকার বাইরের মেডিকেল কলেজগুলোতে করোনা চিকিৎসার পরিপূর্ণ ব্যবস্থা আছে।’

বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক বলেন, ‘তৈরি পোশাক খাতে ৪০ লাখ শ্রমিক কাজ করছেন। লকডাউনের পর গার্মেন্টস খুলে দেওয়া নিয়ে অনেক তোপের মুখে পড়তে হয়েছিল। কিন্তু আমরা শ্রমিকদের জীবিকা নিয়ে চিন্তিত ছিলাম। তাঁদের জীবন ও জীবিকার জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্ব দেওয়ায় পোশাকশিল্পে তেমন সমস্যা হয়নি।’
করোনাকালে মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ওপর সিটি করপোরেশনকে অধিক গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান ব্র্যাকের আরবান ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের পরিচালক লিয়াকত আলী।

এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, মেডিকেল বর্জ্য উচ্চ ঝুঁকি তৈরি করে। মাস্ক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নগরবাসীকে সচেতন হতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে বুয়েট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সাদিকুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, বিভিন্ন সমীক্ষায় বলা হয়েছে, প্রতিবছর বায়ুদূষণে দেশে ১ লাখ ২৫ হাজার মানুষ মারা যান। বায়ুদূষণের কারণে কোভিডে মৃত্যুঝুঁকিও বাড়ছে। তবু বায়ুদূষণ রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না কেন?

এ ছাড়া অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ স্কাউটের সিনিয়র কর্মকর্তা ও বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক নিজাম উদ্দিন আহমেদ, একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু, এডিবির সিনিয়র প্রজেক্ট অফিসার ফারহাত জাহান চৌধুরী, ইউএনডিপির প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট আরিফ আবদুল্লাহ খান ও রোটারি ইন্টারন্যাশনালের জেলা গভর্নর মো. রুবাইয়েত হোসেন বক্তব্য দেন।