টিকে থাকার কিছুটা রসদ পেলেন ব্যবসায়ীরা

সপ্তাহ দুয়েক ধরেই দোকানপাট, বিপণিবিতান ও ফুটপাতের দোকানগুলোতে পণ্য কিনতে ভিড় করছেন ক্রেতারা

ঈদের কেনাকাটায় বিপণিবিতানগুলোতে শেষ মুহূর্তে ভিড় বেড়েছে। গতকাল রাজধানীর নিউমার্কেটে
ছবি: হাসান রাজা

মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ঈদের অর্থনীতি প্রতিবছরই বড় হচ্ছিল। রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকায় ব্যবসায়ীরাও ছিলেন স্বস্তিতে। তবে সেই স্বস্তি কেড়ে নেয় করোনাভাইরাস। বিপুল লোকসানে পড়েন ব্যবসায়ীরা। হঠাৎ ভাইরাসটির দ্বিতীয় ঢেউয়ে লকডাউনের কারণে আবার লোকসানের চোখরাঙানি দেখছিলেন তাঁরা। ঝুঁকির মধ্যেই দোকানপাট খুলে দেয় সরকার। তারপর ধীরে ধীরে জমতে থাকে ঈদকেন্দ্রিক বেচাবিক্রি।

সপ্তাহ দুয়েক ধরেই দোকানপাট, বিপণিবিতান ও ফুটপাতের দোকানগুলোতে পণ্য কিনতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, সেই ভিড় বাড়ছে। তবে পোশাক, জুতা, গয়না, মোবাইল ফোনের মতো নিত্যপণ্য কিনতেই আগ্রহ বেশি দেখাচ্ছেন ক্রেতারা। আসবাব, সোনার অলংকার, ইলেকট্রনিকসের মতো বিলাসী পণ্যের বেচাবিক্রি তুলনামূলক কম।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনার কারণে গতবার ঈদে ব্যবসা না করতে বিপুল লোকসান গুনতে হয়েছে। তারপর কোরবানির ঈদে কিছুটা ব্যবসা হলেও ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা যায়নি। ঘুরে দাঁড়াতে যে যেভাবে পেরেছেন, ঋণ করে বিনিয়োগ করেছেন। তবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ রোধে সরকারের বিধিনিষেধের কারণে প্রত্যাশা অনুযায়ী ব্যবসা হচ্ছে না। তারপরও যেটুকু হয়েছে, তা টিকে থাকার জন্য সাহস জোগাবে।

পোশাকেই ভিড় বেশি

ঈদে অন্য অনেক পণ্যের বিক্রি বাড়লেও শীর্ষে সব সময়ই পোশাক। সে জন্য ফুটপাত থেকে শুরু করে ছোট-বড় কিংবা বিলাসবহুল বিপণিবিতান ও ফ্যাশন হাউসে রমজানের শুরু থেকেই ক্রেতাদের ভিড় থাকে। তবে করোনার কারণে চলতি বছর পরিস্থিতি ভিন্ন। করোনা সংক্রমণ রোধে গত ২৫ এপ্রিল থেকে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দোকানপাট ও বিপণিবিতান খোলা থাকছে। তবে ক্রেতাদের আনাগোনা থাকায় সেগুলোর ঝাঁপ বন্ধ হচ্ছে রাত ১২টায়।

গতকাল রাজধানীর মৌচাক মার্কেট, ফরচুন শপিং মল, পীর ইয়ামেনী মার্কেট ও নিউমার্কেট ঘুরে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় পাওয়া গেছে। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, আনাগোনা বাড়লেও ক্রেতারা তুলনামূলক কম কেনাকাটা করছেন। যেটুকু নয়, কেবল সেটুকুই কিনছেন তাঁরা।

রাজধানীর মৌচাক মার্কেটের নিচতলায় শোভন গার্মেন্টসের স্বত্বাধিকারী ওলিয়ুর রহমান বললেন, গতবারের লকডাউনে দুই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। দোকান চালাতে ঋণ করতে হয়েছে। গত মাসে কর্মচারীদের বেতন নিজের পকেট থেকে দিয়েছি। বেচাবিক্রি কেমন জানতে চাইলে বললেন, ‘শুরুর দিকে কোনো দিন পাঁচ হাজার টাকারও বিক্রি হয়নি। এখন বিক্রি বেড়েছে। ঈদের আগপর্যন্ত এই অবস্থা থাকলে কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়াতে পারব।’

গুলিস্তানের পীর ইয়ামেনী মার্কেটের তিনতলাজুড়ে পাঞ্জাবির দোকানের সংখ্যা ১১০। বিপণিবিতানটির ক্ল্যাসিক পাঞ্জাবি ফ্যাশনের বিক্রেতা ওমর ফারুক বলেন, ২৫ রোজা থেকে ক্রেতা বেড়েছে। তবে অনেকেই দরদাম করে ফিরে যাচ্ছেন। সকাল থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত ১০টি পাঞ্জাবি বিক্রি করেছেন বলে জানালেন তিনি।

নিউমার্কেটে ক্রেতাদের বেশ ভিড় ছিল। বিপণিবিতানের বাইরের ফুটপাতেও ক্রেতার সংখ্যা কম নয়। তবে নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দেওয়ান আমিনুল ইসলাম দাবি করলেন, জুতা, পোশাক ও কসমেটিকসের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় আছে। তারপরও বিক্রি স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ২০ শতাংশের কাছাকাছি। ব্যাগ, জুয়েলারিসহ অন্যান্য পণ্যের বিক্রির অবস্থা খুব খারাপ।

পোশাক কিনতে অনেকের পছন্দ দেশীয় ব্র্যান্ড। সে কারণে আড়ং, কে ক্র্যাফট, অঞ্জন’স, রঙ, বিশ্বরঙ, বাংলার মেলা, সাদাকালো, বিবিআনা, দেশাল, ইয়েলো, ক্যাটস আই, ট্রেন্ডস, একস্ট্যাসি, আর্টিস্টি, সারা, রিচম্যান, ইউনিক্লোসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিক্রয়কেন্দ্রে ক্রেতারা ভিড় করছেন।

স্নোটেক্স গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান পোশাকের ব্র্যান্ড সারা। গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম খালেদ বলেন, ‘বিক্রি মন্দ নয়। ২০১৯ সালের ঈদে যে পরিমাণ বিক্রি করেছিলাম, ইতিমধ্যে সেটি ছাড়িয়ে গেছে। যদিও তখন আমাদের একটি বিক্রয়কেন্দ্র ছিল। বর্তমান বিক্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা পাঁচ। সব মিলিয়ে ২০১৯ সালের তুলনায় ৫-১০ শতাংশ বিক্রি বেশি হয়েছে।’

দেশীয় ফ্যাশন হাউজ রঙ বাংলাদেশের স্বত্বাধিকারী সৌমিক দাশ প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রত্যাশা অনুযায়ী ব্যবসা হচ্ছে না। আসলে রমজান মাসের প্রতিটি দিন গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু শুরুতেই আমরা ১২ দিন হারিয়েছি। সব মিলিয়ে শেষ পর্যন্ত ২০১৯ সালের তুলনায় ৫০-৬০ শতাংশ ব্যবসা হতে পারে। এটি দিয়ে ঋণ পরিশোধ করা যাবে না। তবে টিকে থাকার রসদ হয়তো মিলবে।’

জুতার বাজারেও ক্রেতা

পোশাকের পরই ঈদে জুতার বাজার জমজমাট। কারণ, পছন্দসই জুতা, স্যান্ডেল, কেডস না কিনলে যে ঈদের আনন্দ পরিপূর্ণ হয় না। ঈদ সামনে রেখে বাটা, অ্যাপেক্স, ওরিয়ন, ক্রিসেন্ট, বে, ফরচুনের মতো ব্র্যান্ডগুলো নতুন নকশার জুতা আনে। ব্র্যান্ড ছাড়া নন-ব্র্যান্ড ও আমদানি করা জুতাও বিক্রি হয়। করোনার এই ঈদেও জুতার বেচাবিক্রি মন্দ হচ্ছে না।

জুতা ব্যবসায়ীরা জানান, সারা বছর কমপক্ষে ২০ কোটি জোড়া জুতা বিক্রি হয়। তবে ঈদের সময় ৩০ শতাংশ বা ৬ কোটি জুতা বিক্রি হয়ে থাকে। যদিও গত বছর করোনার কারণে বিক্রি ব্যাপকভাবে কমে যায়। পরে কোরবানির ঈদে বিক্রি বাড়লেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আবার ধাক্কা খায়।

মৌচাক মার্কেটে বেলা দেড়টার দিকে কথা হয় মগবাজারের বাসিন্দা নাসিমুন নাহারের সঙ্গে। তিনি দুই মেয়ের জুতা কিনতে এই বিপণিবিতানে এসেছেন। নাসিমুন নাহার প্রথম আলোকে বলেন, ‘করোনার মধ্যে এমনিতেই হাতে টাকাপয়সা কম। তাই নিজের ও স্বামীর জন্য কিছু কেনা হয়নি। মেয়েদের জামাসহ সব আছে। তবে ভালো জুতা নেই। সে জন্যই মার্কেটে আসা।’

অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (অভ্যন্তরীণ বাজার) সুদর্শন রেড্ডি প্রথম আলোকে বলেন, গত বছর বেচাকেনা হয়েছিল ২০১৯ সালের ঈদের তুলনায় মাত্র ২০ শতাংশ। চলতি বছর সেটি ৩০ শতাংশ হয়েছে। মানুষ সাধারণত ঈদের কেনাকাটা করে ইফতারের পর। কিন্তু ইফতারের কারণে দোকানপাট বন্ধ করতে হচ্ছে। ফলে ব্যবসা প্রত্যাশা অনুযায়ী হচ্ছে না।

শেষ বেলার আতর-টুপি

পাঞ্জাবির সঙ্গে আতরের সুবাস ও মাথায় টুপি কিনতে ভিড় বেড়েছে বায়তুল মোকাররম মসজিদের ফুটপাতগুলোতে। মসজিদের উত্তর গেট, দক্ষিণের গেট-সংলগ্ন ফুটপাতের দোকানগুলোতে আতর-তসবির বিক্রিবাট্টা বেশ জমে উঠেছে গত দু-এক দিনে। বিভিন্ন দামের বিভিন্ন ধরনের সুগন্ধির সঙ্গে পাওয়া যাচ্ছে টুপি, তসবি, সুরমা ও জায়নামাজ।

জানা যায়, কম দামের মধ্যে এবার বেশি বিক্রি হচ্ছে আমির আল উদ, চকলেট মাস্ক, সালমা, জান্নাতুল ফেরদাউস, রজনীগন্ধা, বকুল আর বেলি ফুলের আতর। প্রতি ছয় মিলিলিটারের দাম পড়ছে ৮০ থেকে ২০০ টাকা। বেশি দামের আতরের মধ্যে রয়েছে ২০ হাজার টাকা তোলা দরে আল হারমাইন শেখ, সৌদি আরবের ১২ হাজার টাকা প্রতি তোলা দরে উদ আতর।

আতর বিক্রেতা হাসিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘রমজান মাসের শুরুতে দিনে দেড় থেকে দুই হাজার টাকার বিক্রি হতো। গত কয়েক দিনে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকার বিক্রি হচ্ছে। লকডাউনে সংসার চালাতে ৭০ হাজার টাকা ঋণ করতে হয়েছে। ঈদে যদি বেচাকেনা ভালো হয়, তাহলে কিছু ঋণ শোধ করব।’

ইলেকট্রনিকসে এসির দাপট

কয়েক বছর ধরেই টেলিভিশন, মোবাইল, রেফ্রিজারেটরের ঈদকেন্দ্রিক বিক্রিবাট্টা বাড়ছিল। লকডাউনের মধ্যেও গতবার ঈদের সময় ওয়াশিং মেশিন ও হোম অ্যাপ্লায়েন্সের বিক্রি ছিল ব্যাপক। অবস্থা এমন হয়েছিল যে অধিকাংশ দোকানেই ওয়াশিং মেশিন পাওয়া যাচ্ছিল না। চলতি বছর ঈদের ব্যবসা ধরতে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানই মূল্যছাড় দিয়েছে। বিক্রিবাট্টাও মোটামুটি হচ্ছে। তবে অন্যান্য পণ্যের চেয়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের (এসি) বিক্রি বেশি।

সনি–র‌্যাংগসের মহাব্যবস্থাপক মো. জানে আলম বলেন, লকডাউনের মধ্যেও গতবারের ঈদে ভালো বিক্রি হয়েছে। তবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে অনিশ্চয়তা বেড়ে গেছে। মানুষ বিলাসী পণ্য কেনা কমিয়ে দিয়েছে। ফলে বিক্রিবাট্টা খুব একটা ভালো নয়। তিনি বলেন, গরমের কারণে এসির বিক্রি দ্বিগুণ হয়েছে। কিন্তু টেলিভিশনের বিক্রি গতবারের তুলনায় ২০-২৫ শতাংশের বেশি হচ্ছে না।

অবশ্য প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল জানান, ‘আমাদের ভিশন ব্র্যান্ডের ইলেকট্রনিক পণ্যের বিক্রি মোটামুটি ভালো। এসি ও সিলিং ফ্যানের বিক্রি বেশি। তারপরও ২০১৯ সালের তুলনায় বিক্রি বেশ কম।’

আসবাবে গতি ফেরেনি

ঈদে অনেকেই পুরোনো আসবাব বদলে ঘরকে নতুন করে সাজান। সে কারণে ঈদের আগে আসবাবের ব্যবসাও বেশ বাড়ে। ক্রেতা টানতে আসবাবের ব্র্যান্ডগুলোও মূল্যছাড় দেয়। করোনাকালে তার ব্যতিক্রম না হলেও বিক্রিতে খুব একটা গতি ফেরেনি।

আসবাব খাতের শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ড হাতিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম এইচ রহমান প্রথম আলোকে বলেন, লকডাউনের মধ্যেও গতবারের ঈদের আগের ১০ দিন ভালো বিক্রি হয়েছে। তবে চলতি বছর ব্যবসা খুব ভালো নয়। গতবারের চেয়েও ২৫-৩০ শতাংশ ব্যবসা কম হয়েছে। তিনি বলেন, আসবাব নিত্যপণ্য নয়। ঈদের পর করোনা পরিস্থিতির কী হবে, সেই অনিশ্চয়তার কারণে অনেকেই বিলাসী পণ্য কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

অলংকারের বেচাকেনা টুকটাক

একে তো করোনা, তার ওপর সোনার আকাশছোঁয়া দাম। লকডাউনে বিয়েশাদির অনুষ্ঠান কমে গেছে। ফলে গত বছর থেকেই জুয়েলারি ব্যবসায় মন্দা যাচ্ছে। চলতি বছর ঈদকেন্দ্রিক ব্যবসার প্রত্যাশা থাকলেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে সেটি হয়নি। তারপরও দোকানপাট খোলা থাকায় টুকটাক বিক্রি হচ্ছে। এটিকেই মন্দের ভালো বলছেন ব্যবসায়ীরা।

জুয়েলার্স সমিতির সভাপতি এনামুল হক খান প্রথম আলোকে বলেন, ঈদকেন্দ্রিক ব্যবসা খারাপ। ক্রয়াদেশ অনুযায়ী অলংকার তৈরি হয়ে পড়ে আছে, কিন্তু ক্রেতারা নিচ্ছেন না। নতুন ক্রয়াদেশও মিলছে না। টুকটাক যা বিক্রি হচ্ছে, সেটিকে কোনোভাবেই ঈদবাজার বলা যায় না। তারপরও লকডাউনের চেয়ে বর্তমানের ব্যবসা ভালো বলতে হবে। যেটুকু বিক্রি হচ্ছে, তা দিয়ে মালিকদের কোনো মুনাফা না হলেও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিতে পারছি।

পর্যটন ব্যবসায় ধস

ঈদের ছুটিতে দেশের পর্যটন ব্যবসা চাঙা হয়। পর্যটকের পদচারণে কক্সবাজার বিশ্বের বৃহত্তম সৈকত সরগরম হয়ে ওঠে। দেশের অন্যান্য পর্যটনকেন্দ্রেও ভিড় থাকে। আশপাশের বিভিন্ন দেশে ঘুরতে যাওয়ার সংখ্যা বাড়ছিল। তবে করোনার কারণে গত বছর সব থমকে যায়। মাসে শীতের সময় পর্যটন খাতে কিছু ব্যবসা হলেও আবার লকডাউনে সব স্তব্ধ। চলতি বছরও ঈদে দেশের কোনো পর্যটনকেন্দ্রে পর্যটকদের পা না পড়ার শঙ্কাই বেশি।

বাংলাদেশ ট্যুর অপারেটস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঈদে পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ থাকলে ৭০০-৮০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। দূরপাল্লার গণপরিবহন ছাড়া সবকিছু চলছে। আমরা সরকারের কাছে আবেদন করেছিলাম, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেওয়া হোক। কিন্তু সরকারের কাছ থেকে কোনো সাড়া পাইনি।’

লকডাউনে পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ থাকায় ট্যুর অপারেটররা বিপদে পড়েছেন। আর্থিক সংকটে পড়ে অনেক প্রতিষ্ঠানই কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে হেঁটেছেন। অফিস গোটানোর ঘটনাও বাড়ছে বলে জানালেন পর্যটন খাতের কয়েকজন ব্যবসায়ী।

সামগ্রিক বিষয়ে জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম প্রথম আলোকে বলেন, ঈদকেন্দ্রিক ব্যবসা গতবারের চেয়ে বেশি হলেও সেটি অপর্যাপ্ত। ঈদের পর আবার লকডাউন হলে দোকানপাট বন্ধ থাকবে। তখন দোকানের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দেওয়া ব্যবসায়ীদের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে। তাই আগামী বছরের ঈদ পর্যন্ত ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের টিকিয়ে রাখতে সরকার দোকানভাড়া, গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিল কিংবা ভ্যাটে ছাড় দিতে পারে। সেটি হলে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে নগদ টাকার প্রভাব বাড়বে। টিকে থাকার পুরো রসদ পাবেন ব্যবসায়ীরা।