টুপি-আতরের বেচাকেনা ‘অর্ধেক’

এই টুপির দাম পাঁচ হাজার টাকা বলে জানালেন দোকানি
ছবি: আসাদুজ্জামান

চার বছর ধরে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মার্কেটে টুপি–আতর বিক্রি করে আসছেন তরুণ ব্যবসায়ী ফয়েজ উল্লাহ। তাঁর সবচেয়ে বেশি বেচাকেনা হয় ঈদের সময়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে গত পবিত্র ঈদুল ফিতরের সময় দোকানপাট বন্ধ ছিল। আশা ছিল, এই ঈদে ভালো বেচাকেনা হবে। তাই ধারদেনা করে দোকানে টুপি–আতর তুলেছিলেন বেশ। কিন্তু বেচাকেনা জমেনি। অন্যান্য ঈদের সময় যে বেচাকেনা হয়, তার অর্ধেকও বিক্রি করতে পারেননি ফয়েজ উল্লাহ।


ফয়েজ উল্লাহর মতো অবস্থা সেখানকার অন্য ব্যবসায়ীদেরও। ব্যবসায়ীরা বলছেন, টুপি–আতর সারা বছর বিক্রি হয়। তবে প্রায় ৮০ ভাগ বেচাকেনা হয় ঈদের সময়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে গত দুই ঈদে ব্যবসা হয়নি। এবারও বেচাকেনা তেমন না হওয়ায় টুপি–আতর ব্যবসায়ীরা ভালো নেই।

বাংলাদেশ আতর–টুপি বহুমুখী সমবায় সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মফিজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা যারা বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেটে টুপি, আতর, জায়নামাজসহ অন্যান্য সামগ্রী বিক্রি করে আসছি, তারা ভালো নেই। সারা বছর সেভাবে বেচাকেনা হয় না। ঈদের আগে টুপি–আতর বেচাকেনা বহুগুণ বেড়ে যায়। কিন্তু এবার বেচাকেনা সেভাবে হচ্ছে না।’ তিনি জানান, দেশে টুপির বাজার ১০০ কোটি টাকার।

ব্যবসায়ীদের কথার সত্যতা মিলল মার্কেট ঘুরে। গতকাল মঙ্গলবার টুপি–আতরের প্রধান মার্কেট বায়তুল মোকাররম ঘুরে দেখা গেল, অন্য ঈদের সময়ের তুলনায় ক্রেতাদের ভিড় কম। সেখানে কথা হয় টুপি কিনতে আসা মোজাম্মেল হকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘করোনায় আয় কমে গেছে। তবু ছেলের জন্য নতুন জামাকাপড় কিনেছি। নতুন টুপিও কিনেছি।’
বায়তুল মোকাররম মার্কেটের ২১৮টি দোকানে দেশি–বিদেশি নানা ধরনের টুপি, আতর, জায়নামাজ, তসবিসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি হয়।

এই টুপির দাম ৯ হাজার টাকা
ছবি: আসাদুজ্জামান

৯ হাজার টাকার টুপি


বায়তুল মোকাররম মার্কেটে ১০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা দামের টুপি বেশি বিক্রি হয়। তবে এখানে ৯ হাজার টাকা দামের টুপিও আছে। সর্বোচ্চ দামের এই টুপির নাম জিন্নাহ টুপি। এরপরের দামি টুপির নাম সম্রাট টুপি, দাম পাঁচ হাজার টাকা। তবে ‘দামি’ টুপির মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় মিসরীয় কারি টুপি। এর দাম আড়াই হাজার টাকা। এ ছাড়া বাজারে ওমানি টুপিরও বেশ নামডাক আছে। এই টুপি বিক্রি হয় ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকার মধ্যে।

বায়তুল মোকাররমের টুপি বিক্রেতারা বলছেন, দেশে তৈরি আল ফারুক টুপির জনপ্রিয়তা বেশি। এই টুপি পাওয়া যায় ১০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে।

‘ওমানি’ টুপি। দাম এক হাজার টাকা
ছবি: আসাদুজ্জামান

আতরের বিক্রিও কম

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, টুপির মতো আতরের বিক্রিও কম। বায়তুল মোকাররম মার্কেটের দোকানিদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বায়তুল মোকাররমে এক তোলা আতর সর্বোচ্চ সাড়ে সাত হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুবাইয়ে তৈরি আতরটির নাম উদে কাসাস। এ ছাড়া সৌদি আরবের মারিয়াম আতরের দাম সাড়ে চার হাজার টাকা। বাজারে কামার, মাজমা, আল হারামাইন ব্র্যান্ডের আতরের চাহিদা বেশি।