ট্রাকের চাপায় মা ও দুই মেয়ে নিহত

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নওগাঁ সদর উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় ট্রাকের চাপায় মা ও দুই মেয়ে নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন একজন। আজ সোমবার সকাল আটটার দিকে উপজেলার ডাক্তার মোড় এলাকায় নওগাঁ-রাজশাহী আঞ্চলিক মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত তিনজন হলেন আদুরী খাতুন (৪০) এবং তাঁর দুই মেয়ে শিমু (১০) ও শম্পা (৮)। তাঁদের বাড়ি সদর উপজেলার বর্ষাইল ইউনিয়নের ধোপাইপুর গ্রামে। আদুরী খাতুনের স্বামীর নাম শহিদুল ইসলাম। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আদুরী খাতুনের বাবা আবদুল জলিল (৬৫)। নওগাঁ সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সকালে সদর উপজেলার লক্ষণপুর থেকে অসুস্থ বাবা ও দুই মেয়েকে নিয়ে নিজের বাড়ি ধোপাইপুরে যাচ্ছিলেন আদুরী খাতুন। সকাল আটটার দিকে তাঁরা বাসে ওঠার জন্য ডাক্তার মোড় এলাকার নওগাঁ-রাজশাহী সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় নওগাঁ থেকে আসা একটি ট্রাক রাস্তার বিপরীত পাশ থেকে আসা একটি পিকআপকে পাশ কাটাতে গিয়ে তাঁদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই আদুরী ও তাঁর ছোট মেয়ে শম্পা নিহত হন। স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত শিমু ও আবদুল জলিলকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিমুকে মৃত ঘোষণা করেন। আবদুল জলিলের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ডাক্তার মোড়ের চা-বিক্রেতা আবদুল জব্বার বলেন, ‘তাঁরা আমার দোকানের পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল। সেখানে দাঁড়ানো বয়স্ক ব্যক্তিটির সঙ্গে আমার কথাও হয়। তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করছিলেন, বাস কখন আসবে? আমি জানাই, এই রাস্তায় ১০-১২ মিনিট পর পর বাস চলে। তাঁরা রাস্তার পাশে পিচ থেকে অনেক দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় নওগাঁ থেকে আসা একটি খালি ট্রাক বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিকআপকে পাশ কাটাতে গিয়ে তাঁদের গায়ের ওপর উঠে যায়।’

সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ঘটনার পর মহাসড়কে বাস চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। লাশ উদ্ধার করেছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। আদুরীর স্বামী শহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে এসে স্ত্রী ও মেয়ে শম্পার লাশ দেখে অচেতন হয়ে পড়েন। স্থানীয় লোকজনকে তাঁর মাথায় ঢালতে দেখা যায়।

দুর্ঘটনার পর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক উত্তম কুমার রায় ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান।

আদুরীর চাচা মোকবুল হোসেন জানান, গত শুক্রবার আদুরীর মা মারা যান। এ জন্য আদুরী মেয়েদের নিয়ে লক্ষণপুর এসেছিলেন। আজকে মেয়েদের ও বাবাকে নিয়ে স্বামীর বাড়ি যাচ্ছিলেন। তাঁর বাবা অসুস্থ। তাঁকে চিকিৎসার জন্য দু-এক দিনের মধ্যে রাজশাহী নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিলেন আদুরী।

নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, দুর্ঘটনার পর ট্রাকটি ফেলে রেখে চালক ও তাঁর সহকারী পালিয়ে যান। ট্রাকটি আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।