ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন গণমাধ্যমের স্বাধীনভাবে কাজের ক্ষেত্রে অন্তরায়: সম্পাদক পরিষদ

ডিজিটাল যুগে বাংলাদেশে সাংবাদিকতা নানা ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এর মধ্যে যেটি নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হচ্ছে তা হলো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। এটি গণমাধ্যমের স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।

আজ ৩ মে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ কথা বলেছে সম্পাদক পরিষদ। পরিষদের সভাপতি মাহ্ফুজ আনাম ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে ডিজিটাল মাধ্যমে কাজের ক্ষেত্রে সাংবাদিকেরা যে বাধা ও আক্রমণের মুখোমুখি হচ্ছেন, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

এ বছর বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসের প্রতিপাদ্য ‘ডিজিটাল নজরদারিতে সাংবাদিকতা’। ডিজিটাল নজরদারি এবং আক্রমণের মুখে সাংবাদিকতা আজকের দিনে বিশ্বজুড়ে যে হুমকি মোকাবিলা করছে, সে বিষয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই এ প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বছর ২ থেকে ৫ মে উরুগুয়ের পুন্টা ডেল এস্টে শহরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে গ্লোবাল কনফারেন্স। দিবসটির প্রতিপাদ্য সামনে রেখে এ সম্মেলনে ডিজিটাল যুগে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, তথ্যের অধিকার ও গোপনীয়তার বিষয়ে আলোচনা হবে।

সম্পাদক পরিষদের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অনেক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে এবং অনেকে গ্রেপ্তারও হয়েছেন। শুধু সাংবাদিক নন, বিভিন্ন ক্ষেত্রের অ্যাকটিভিস্ট, শিল্পী, লেখকেরাও এ আইনে মামলার মুখোমুখি হয়েছেন। শুরু থেকেই সম্পাদক পরিষদ এবং সাংবাদিকেরা এ আইনের বিষয়ে উদ্বেগ ও আপত্তি জানিয়েছেন। কিছুদিন আগে আইনমন্ত্রীও বলেছেন, এ আইনের বিভিন্ন রকমের অপব্যবহার হয়েছে এবং তিনি আইনটি সংশোধনেরও ইঙ্গিত দিয়েছেন। মন্ত্রীর বক্তব্য সম্পাদক পরিষদের উদ্বেগকে যথার্থ বলে প্রমাণ করেছে।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ আরও অনেক প্রতিবন্ধকতা ও হুমকি মোকাবিলা করে বাংলাদেশের সাংবাদিকেরা তাঁদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। ফ্রান্সভিত্তিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসের তৈরি করা ২০২১ সালের বিশ্ব গণমাধ্যম সূচকে বিশ্বে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৫২তম। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস সাংবাদিকদের কাজ করার স্বাধীন ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিতের যে অঙ্গীকার তুলে ধরে, সম্পাদক পরিষদ তার সঙ্গী।