ডেল্টা লাইফের কর্তাদের বিরুদ্ধে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ

ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের স্থগিত পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আত্মসাৎ ও দুর্নীতি, রাজস্ব ফাঁকি ও অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ৩ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা ক্ষতি সাধনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

একটি নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে বলে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) জানিয়েছে। গত ১ ডিসেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহকে এ বিষয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন আইডিআরএর পরিচালক মো. শাহ আলম। চিঠির একটি অনুলিপি অর্থমন্ত্রীর নজরে আনার জন্যও দিয়েছে আইডিআরএ। চিঠিতে ৭৪ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটিও সংযুক্ত করা হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডে নিয়োগ করা অডিট ফার্ম মেসার্স একনবীন, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বরাবর দেওয়া প্রভিশনাল ইন্টেরিম রিপোর্ট পর্যালোচনায় দেখা যায়, এই কোম্পানিতে প্রাথমিকভাবে উদ্‌ঘাটিত ৩ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা অর্থ আত্মসাত ও দুর্নীতি, রাজস্ব ফাঁকি/বকেয়া এবং অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কোম্পানিটির আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। প্রতিবেদনে মানি লন্ডারিংয়ের মতো অপরাধ সংঘটিত হওয়ার কথাও উল্লেখ রয়েছে।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য আইডিআরএর চেয়ারম্যান এম মোশাররফ হোসেনকে ফোন করা হলে তিনি সাড়া দেননি। আইডিআরএর পরিচালক শাহ আলম প্রথম আলোকে বলেন, অডিট ফার্ম যে ডকুমেন্ট দিয়েছে, তার আলোকে চিঠিটা পাঠানো হয়েছে। এখন কর্তৃপক্ষ মামলা করতে বললে বা কোনো নির্দেশনা দিলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে এই প্রতিবেদনকে ‘বানোয়াট’ বলেছেন ডেল্টা লাইফের সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আদিবা রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিবেদনে সরাসরি আত্মসাৎ বা দুর্নীতির কথা বলা হয়নি। তারা অধিকতর তদন্ত করে দেখতে বলেছে। আদিবা রহমান বলেন, এটি প্রভিশনাল ইন্টেরিম প্রতিবেদন, চূড়ান্ত নয়। তা ছাড়া প্রতিবেদনটি তৈরি করার সময় সাবেক ব্যবস্থাপনা কমিটির কোনো বক্তব্য নেওয়া হয়নি। এটা একটা বানোয়াট রিপোর্ট, এর কোনো ভিত্তি নেই।

গ্রাহকের স্বার্থ ক্ষুণ্নের অভিযোগ তুলে চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের পরিচালনা পর্ষদকে চার মাসের জন্য স্থগিত করে আইডিআরএ। তারপর ১০ জুন ডেল্টা লাইফের পরিচালনা পর্ষদের স্থগিতাদেশের মেয়াদ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অব্যাহত রাখার আদেশ জারি করে আইডিআরএ।