ডেসটিনির সাবেক চার কর্মকর্তা কারাগারে

ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি
ছবি: সংগৃহীত

অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের এক মামলায় ডেসটিনির সাবেক সহসভাপতি মেজর (অব.) সাকিবুজ্জামানসহ চারজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম আজ বুধবার এ আদেশ দেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কৌঁসুলি আহমেদ আলী সালাম বলেন, এই মামলায় দণ্ডিত পলাতক আসামি সাকিবুজ্জামানসহ চারজন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে তাঁদের জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। অন্য তিনজন  হলেন ডেসটিনির অর্থ বিভাগের প্রধান সুনীল বরন কর্মকার ও কাজী মো. ফজলুল করিম এবং ডেসটিনি গ্রুপের বেস্ট অ্যাভিয়েশনের সহকারী ব্যবস্থাপক মোল্লা আল আমীন।

১২ মে অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের এক মামলায় রফিকুল আমীন, ডেসটিনির প্রেসিডেন্ট সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদসহ ৪৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের পাশাপাশি অর্থদণ্ডাদেশ দেন আদালত। রফিকুল আমীনকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ২০০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড হয়।

ডেসটিনির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অর্থদণ্ড হয় ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট ও সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদকে ৪ বছরের কারাদণ্ড এবং ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। অন্য আসামিদের ৫ থেকে ৯ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি অর্থদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।

ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি ও ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের নামে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই রফিকুল আমীনসহ ডেসটিনির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর কলাবাগান থানায় দুটি মামলা করে দুদক। দুই মামলায় মোট ৪ হাজার ১১৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়।

দুই বছর তদন্তের পর ২০১৪ সালের ৪ মে দুই মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির মামলায় ৪৬ জনের বিরুদ্ধে এবং ট্রি প্ল্যান্টেশনের মামলায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
দুই মামলায় মোট আসামি ৫৩ জন। রফিকুলসহ ১২ জনের নাম দুই মামলাতেই রয়েছে। আগে থেকেই কারাগারে আছেন মোহাম্মদ হোসেন ও রফিকুল আমীন।

মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন মোহাম্মদ গোফরানুল হক, মোহাম্মদ সাঈদ-উর-রহমান, মেজবাহ উদ্দিন, সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন, ইরফান আহমেদ, ফারাহ দিবা, জামসেদ আরা চৌধুরী, শেখ তৈয়েবুর রহমান, নেপাল চন্দ্র বিশ্বাস, জাকির হোসেন, আজাদ রহমান, আকবর হোসেন, মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, সাইদুল ইসলাম খান, সুমন আলী খান, শিরীন আকতার, রফিকুল ইসলাম সরকার, মজিবুর রহমান, দিদারুল আলম, এম হায়দার উজ্জামান, জয়নাল আবেদীন, শফিউল ইসলাম, জিয়াউল হক মোল্লা, সিকদার কবিরুল ইসলাম, ফিরোজ আলম, ওমর ফারুক, ফরিদ আকতার, এস সহিদুজ্জামান চয়ন, আবদুর রহমান, সাকিবুজ্জামান, এস এম আহসানুল কবির, এ এইচ এম আতাউর রহমান, জি এম গোলাম কিবরিয়া, আতিকুর রহমান, খন্দকার বেনজীর আহমদ, এ কে এম সফিউল্লাহ, শাহ আলম, দেলোয়ার হোসেন, জেসমিন আক্তার ও শফিকুল হক।

দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়, ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির নামে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১ হাজার ৯০১ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়। সেখান থেকে ১ হাজার ৮৬১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়। এই অর্থ আত্মসাতের কারণে সাড়ে আট লাখ বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হন।