ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সমালোচনায় ছাত্রলীগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ছাত্রলীগ আয়োজিত সমাবেশ
ছবি: প্রথম আলো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) প্রশাসনের কথিত ‘শিক্ষার্থীবান্ধব’ ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ছাত্রলীগ। ঢাবি প্রশাসনের সমালোচনা করে ছাত্রলীগ বলেছে, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অভিভাবকসুলভ আচরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে কর্তৃপক্ষ। প্রশাসনের গাফিলতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনেক ক্ষতি হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত এক সমাবেশে এসব অভিযোগ করেন ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার নেতারা। করোনাকালে ঢাবির শিক্ষার্থীদের আবাসিক ও পরিবহন ফি প্রত্যাহার, সব শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনা, মাদকমুক্ত ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক নিশ্চয়তা, আবাসনসংকট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নের রূপরেখা প্রণয়ন, চিকিৎসাকেন্দ্রের আধুনিকায়ন ও করোনাচিকিৎসার সুব্যবস্থার দাবিতে ছাত্রলীগের ঢাবি শাখা এই ছাত্রসমাবেশের আয়োজন করে।

সমাবেশে ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, তাঁরা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে সক্রিয় ভূমিকা রাখার চেষ্টা করেছেন। করোনায় দীর্ঘ বন্ধের কারণে শিক্ষার্থীদের অনেকে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। তাঁরা দীর্ঘদিন শিক্ষা কার্যক্রমে নেই। চাকরির পরীক্ষাগুলোও হচ্ছে না। এ কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা কাজ করছে।

ঢাবি প্রশাসনের সমালোচনা করে সনজিত বলেন, প্রশাসনের গাফিলতির কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। প্রশাসনকে তাঁরা বলতে চান, কেবল আবাসিক নয়, অনাবাসিক শিক্ষার্থীদেরও দ্রুততম সময়ে করোনার টিকার আওতায় আনার ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী হল খুলে দেওয়ার বিষয়টি দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমাধান করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত করতে হবে। ঢাবি কোনো মাদকসেবী বা দুর্নীতিবাজের আশ্রয়স্থল হতে পারে না। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সমস্যার সমাধান করতে হবে।

ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। অথচ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হলের আবাসিক ফি চালু রেখেছে। প্রশাসনের প্রতি আমাদের আহ্বান, এই ফি প্রত্যাহার করে নিন। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা পরিবহনসুবিধাও নিচ্ছেন না। কিন্তু তারপরও ১ হাজার ৮০ টাকা করে পরিবহন ফি নেওয়া হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলতে চাই, আপনারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অভিভাবকসুলভ আচরণে ব্যর্থ হয়েছেন। আপনাদের শিক্ষার্থীবান্ধব ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। এসব ফি নেওয়া বন্ধ না করলে আমরা বিশ্বাস করব যে আপনাদের নৈতিকতা রং রুটে চলে গেছে।’

সাদ্দাম আরও বলেন, দেশরত্ন শেখ হাসিনা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের করোনার টিকার আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের শৈথিল্যের কারণে শিক্ষার্থীরা এখনো টিকার আওতায় আসেননি। প্রশাসনিক শৈথিল্য নিরসন করে শিক্ষার্থীদের দ্রুত করোনার টিকার আওতায় আনার সার্বিক ব্যবস্থা করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

সমাবেশে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ চৌধুরী ও মাহবুব খান, মানবসম্পদ উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক নাহিদ হাসান, ত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক সম্পাদক ইমরান জমাদ্দারসহ সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ও বিভিন্ন হল শাখার দুই শতাধিক নেতা-কর্মী অংশ নেন।