রাজধানীর মধ্য বাড্ডায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) সাবেক চেয়ারম্যান খিজির খান হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার করা তরিকুল ইসলামসহ দুজন জড়িত বলে মনে করছেন খিজির খানের ছোট ছেলে ও মামলার বাদী আশরাফুল ইসলাম। ওই দুজনের কাছ থেকে উদ্ধার করা দুটি ল্যাপটপই তাঁদের বাড়ি থেকে লুট হয়েছিল।
এই হত্যা মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, গ্রেপ্তার করা দুজনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে।
৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় মধ্য বাড্ডায় নিজ বাড়ির দোতলায় ‘রহমতিয়া খানকা শরিফে’ হাত-পা বেঁধে খিজির খানকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। তিনি ওই খানকা শরিফের পীর ছিলেন। তাঁকে হত্যার আগে তৃতীয় তলায় তাঁর পরিবারের সদস্যদের মুখ, হাত-পা বেঁধে রাখা হয়। এ হত্যার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা সাত-আটজনকে আসামি করে মামলা করা হয়।
এ ঘটনায় ১৪ অক্টোবর টাঙ্গাইল থেকে তরিকুলকে ও ঢাকার মিরপুর থেকে গাড়িচালক আলেক ব্যাপারীকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। তাঁদের কাছ থেকে খিজির খানের বাড়ি থেকে লুট হওয়া দুটি ল্যাপটপ, দুটি ক্যামেরা ও স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়। তরিকুল নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর সদস্য।
গতকাল বুধবার মামলার বাদী আশরাফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডিবি কার্যালয়ে তরিকুলকে দেখেছি। তাকে আমাদের মুখোমুখি করানো হয়নি। ওকে আমাদের পরিবারের কেউ চিনতে পারেনি। এর কারণ তরিকুল তৃতীয় তলায় যায়নি। দ্বিতীয় তলায়ও বেশ কয়েকজন ছিল। তবে তরিকুলের কাছ থেকে আমাদের দুটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে। ডিবি কার্যালয়ে ল্যাপটপ দুটি দেখেছি। এ দুটি আমাদের। যেহেতু ওদের কাছে ল্যাপটপগুলো পাওয়া গেছে, তাই ওরা যে হত্যায় জড়িত তাতে কোনো সন্দেহ নেই।’
তরিকুল ও আলেককে গ্রেপ্তারের পরদিন সংবাদ ব্রিফিংয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মনিরুল ইসলাম বলেন, তরিকুল ওই ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। ধর্মীয় মতাদর্শের কারণে তাঁরা খিজির খানকে হত্যা করেছেন। পলাতক অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এর বাইরে নির্দেশদাতা বা গুরু কেউ আছে কি না, তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
এ ঘটনায় আর কেউ এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। তরিকুল ও আলেককে গ্রেপ্তারের পর প্রথম দফায় তাঁদের তিন দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দ্বিতীয় দফায় ১৯ অক্টোবর তাঁদের আরও পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।