তাজরীন ও স্পেকট্রামের মালিকদের বিচার হলে পুনরাবৃত্তি হতো না

মালিকদের বিচার হয় না বলেই পোশাকশিল্পে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে। শ্রমিকেরা প্রাণ হারাচ্ছেন। গতকাল শনিবার রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে বিবিসির বিশেষ সংলাপে সরকার ও বিরোধীদলীয় প্রতিনিধিরা এ কথা বলেছেন। সাভারে ভবনধসের ঘটনায় শত শত শ্রমিকের মৃত্যুর দায় কার—দর্শকদের পক্ষ থেকে সংলাপের আলোচকদের এ প্রশ্ন করা হয়। প্রথমে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার বলেন, রপ্তানি আয়ের জন্য দেশ প্রায় সম্পূর্ণভাবে পোশাকশিল্পের ওপর নির্ভরশীল। প্রতিটি সরকারই পোশাকশিল্প মালিকদের ত্রুটি-বিচ্যুতি হালকাভাবে দেখে। কোথাও তাঁদের অপরাধের সুষ্ঠু বিচার হয়নি। বিজিএমইএও শক্তভাবে এগিয়ে আসেনি। প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রশাসন-বিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেন, যদি তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ও স্পেকট্রাম কারখানায় ধসের পর মালিকের বিচার হতো, তাহলে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটত না। তিনি শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে বলেন, এবারকার ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্যদিকে এম কে আনোয়ার বলেন, তিনি শতভাগ নিশ্চিত যে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। গণমাধ্যমের প্রতি ক্ষোভ বিজিএমইএর সভাপতির: বাংলাদেশের তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, সাভারের ভবনধসের সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংবাদমাধ্যম দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। তিনি বলেন, ‘মিডিয়া তাদের দায়িত্ব পালন করছে, ঠিক আছে। কিন্তু কেন আমরা বারবার এসব দেখাচ্ছি? এতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে।’দর্শকদের পক্ষ থেকে সংলাপের নির্ধারিত আলোচকদের প্রতি প্রশ্ন ছিল, সাভারে ভবনধসের ঘটনা পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না? এর উত্তরে বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিদেশিরা ২৪ ঘণ্টা টিভি চ্যানেলের সামনে বসে আছে। আমেরিকায় আজ ২৬টি শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। তাদের কারও ছবি কি দেখানো হয়েছে?’ তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক প্রবেশের ক্ষেত্রে জিএসপি শুনানি চলছে। টাকার হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির পরিমাণ কম। কিন্তু এর প্রভাব ব্যাপক। গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের গবেষণা পরিচালক ফাহমিদা খাতুন শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় ট্রেড ইউনিয়নের সমালোচনা করে বলেছেন, ইউনিয়নগুলো রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি করে। ফলে শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় তারা সঠিক অবদান রাখতে পারে না। অনুষ্ঠানটি প্রযোজনা করেন ওয়ালিউর রহমান মিরাজ এবং উপস্থাপনা করেন আকবর হোসেন।