তারেক–জোবাইদা পলাতক কি না, সেই প্রশ্নে পরবর্তী শুনানি ১৯ জুন

হাইকোর্ট ভবন
ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তাঁর স্ত্রী জোবাইদা রহমান পলাতক কি না এবং তাঁদের পক্ষে আইনজীবী লড়তে পারবেন কি না—এমন প্রশ্নে আজ রোববার হাইকোর্টে দ্বিতীয় দিনের মতো শুনানি হয়েছে।

বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ শুনানি গ্রহণ করেন। আদালত শুনানির জন্য ১৯ জুন পরবর্তী দিন রেখেছেন।

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও হিসাব বিবরণীতে সম্পদ গোপন করার অভিযোগে করা মামলা দায়ের ও এর প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে তারেক ও তাঁর স্ত্রী জোবাইদা ১৫ বছর আগে হাইকোর্ট পৃথক তিনটি রিট করেন। তখন হাইকোর্ট রুল দিয়েছিলেন। রুল শুনানির জন্য তারেক রহমানের করা দুটি রিট ও জোবাইদা রহমানের করা একটি রিট গত ২৯ মে হাইকোর্টের কার্যতালিকায় ওঠে। সেদিন পলাতক তারেক রহমানের পক্ষে আইনজীবী সময়ের আরজি জানাতে পারেন কি না—তা নিয়ে প্রশ্ন রাখেন দুদকের আইনজীবী। এরপর ৫ জুন তারেক রহমান ও তাঁর স্ত্রী জোবাইদা রহমান পলাতক কি না এবং তাঁদের পক্ষে আইনজীবী লড়তে পারবেন কি না—এমন প্রশ্নে শুনানি হয়। সেদিন শুনানি নিয়ে আদালত ১২ জুন পরবর্তী শুনানির জন্য দিন রাখেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ শুনানি হয়।

আদালতে তারেক–জোবাইদার রিটের বিষয়ে শুনানি করেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, তাঁর সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী কায়সার কামাল। দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন শুনানিতে অংশ নেন।

আজ শুনানিতে দুদকের আইনজীবী বলেন, তিনটি মামলায় তারেক রহমান দণ্ডিত হয়েছেন। তাঁর সাজা পরোয়ানা এখনো ঝুলছে। যদি তিনি দণ্ডিত না হতেন আর মামলাগুলোর বিচার শেষ না হতো, তাহলে ভিন্ন কথা। তারেক রহমান এই মামলায় পলাতক। একই মামলা বাতিল চেয়ে জোবাইদা রহমানের করা আবেদনের ওপর সর্বশেষ আপিল বিভাগ গত ১৩ এপ্রিল রায় দেন। এই রায়ে আপিল বিভাগ বলে দিয়েছেন জোবাইদা রহমান পলাতক। পলাতক বলে তাঁদের পক্ষে আইনজীবী শুনানি করতে পারেন না। রিট খারিজ করে দিয়ে আইন অনুসারে মামলা চলতে নির্দেশ দেওয়ার আরজি জানান তিনি।

অন্যদিকে আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, মামলাটি ভ্রূণ অবস্থায়। এখনো অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়নি। তাই আত্মসমর্পণ করার পর্যায়ে আসেনি। জোবাইদা রহমানের ক্ষেত্রে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করা হবে—তাই এ বিষয় নিয়ে বলছি না। তবে তারেক রহমান যখন রিট করেন, তখন তিনি পলাতক ছিলেন না। কোনো মামলায় কেউ দণ্ডিত হলে বিচারাধীন অপর মামলায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে পলাতক হয়ে যাবেন—এমন কিছু দেখছি না।

আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলীর উদ্দেশে একপর্যায়ে আদালত বলেন, ‘গ্রেপ্তার দেখানোর আগে আপনি (তারেক রহমান) রিট দায়েরের জন্য লেটার অব অথরিটি (ক্ষমতা অর্পণপত্র) দিয়েছেন দেখা যাচ্ছে। গ্রেপ্তার দেখানোর আগে কীভাবে লেটার অব অথরিটি দিলেন? কোন মামলায় ক্ষমতা অর্পণপত্র দেওয়া হয়েছে তা–ও উল্লেখ নেই। তিনি (তারেক) পলাতক বলে আমরা মনে করছি।’

এ জে মোহাম্মদ আলীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আদালত আগামী রোববার শুনানির পরবর্তী দিন রাখেন।