তালহা স্মৃতি সাহসিকতা পুরস্কার পেলেন প্রথম আলোর আসাদুজ্জামান

পুরস্কার নিচ্ছেন প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আসাদুজ্জামানছবি: প্রথম আলো

সাহসিকতাপূর্ণ সাংবাদিকতার জন্য ‘খন্দকার আবু তালহা স্মৃতি সাহসিকতা পুরস্কার’ পেলেন প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আসাদুজ্জামান। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগ এবং খন্দকার আবু তালহা মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন যৌথভাবে প্রথমবারের মতো এ পুরস্কার প্রবর্তন করে।

আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে প্রধান অতিথি হিসেবে এ পুরস্কার প্রদান করেন সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার ও আজকের পত্রিকার সম্পাদক গোলাম রহমান।

প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া ক্যাটাগরিতে একমাত্র সাহসী সাংবাদিক হিসেবে এ পুরস্কার পান প্রথম আলোর আসাদুজ্জামান। প্রদান করা হয় ৫০ হাজার টাকা, একটি ক্রেস্ট ও সনদ।

২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারি ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না…’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে প্রথম আলো। প্রতিবেদন প্রকাশের পর হাইকোর্ট স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন। জাহালমকে সব মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের আদেশে ছাড়া পান নিরীহ জাহালম। সেই সংবাদের জন্যই পুরস্কৃত হন আসাদুজ্জামান।

২০১৭ সালের অক্টোবরে ছিনতাইকারীদের হাত থেকে প্রতিবেশীকে বাঁচাতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারান খন্দকার আবু তালহা। এ সাহসিকতার স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৭ সালে ফারাজ হোসেন সাহসিকতা পুরস্কারও পেয়েছিলেন তালহা। তাঁর পরিবারের সদস্যদের কাছে এ সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়েছিল তখন।

আজকের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খন্দকার আবু তালহা মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান প্রয়াত খন্দকার আবু তালহার বাবা আবু রিয়াজ মো. নুরুদ্দিন খন্দকার, বিশ্ববিদ্যালয়টির মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এ এম এম হামিদুর রহমান এবং স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্স পরিচালক সৈয়দ মিজানুর রহমান। সভাপতি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান তৌফিক এলাহী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে গোলাম রহমান বলেন, সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা, একটি গর্বের পেশা। যুগ যুগ ধরে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও সাংবাদিকেরা সমাজের অন্যায়, অবিচার সবার সামনে তুলে ধরছেন। আদালতে লাখ লাখ মামলা ঝুলে আছে। বিলম্বিত বিচার মানুষের মধ্যে হতাশাবোধ তৈরি করে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক গোলাম রহমান আরও বলেন, করোনার কারণে অনেক সাংবাদিক কষ্টে দিন পার করছেন, এটি অস্বীকার করার উপায় নেই। তারপরও সাংবাদিকেরা সমাজের জন্য, দেশের জন্য কাজ করে গেছেন। যাঁরা একটি প্রতিবেদন তৈরির জন্য দিনের পর দিন লেগে থাকেন, গবেষণা করেন, তাঁদের কাজ সমাদৃত হয়। মানুষের উপকারে আসে।

ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র খন্দকার আবু তালহা তাঁর সাহসিকতার জন্য মানুষের মধ্যে বেঁচে থাকবেন বলে মন্তব্য করেন সাবেক তথ্য কমিশনার গোলাম রহমান।
বিশেষ অতিথি আবু রিয়াজ মো. নুরুদ্দিন খন্দকার বলেন, সাংবাদিকদের অব্যাহত অনুসন্ধানের জন্যই তালহা হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত রহস্য উন্মোচিত হয়েছে এবং অপরাধীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় এসেছে।

‘খন্দকার আবু তালহা স্মৃতি সাহসিকতা পুরস্কার’ আগামীতে চ্যালেঞ্জিং ও সাহসিকতাপূর্ণ সাংবাদিকতায় অবদান রাখতে সাংবাদিকদের অনুপ্রাণিত করবে বলেও আশা তাঁর।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন