তিন হাজার শিক্ষার্থীর ব্যবহারিক ক্লাস!

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে বিজ্ঞানবিষয়ক ব্যবহারিক ক্লাসে অংশ নিয়ে তৈরি করা চুম্বক দেখছে দুই শিক্ষার্থী। ছবিটি গতকাল তোলা l প্রথম আলো
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে বিজ্ঞানবিষয়ক ব্যবহারিক ক্লাসে অংশ নিয়ে তৈরি করা চুম্বক দেখছে দুই শিক্ষার্থী। ছবিটি গতকাল তোলা l প্রথম আলো

বিশাল প্যান্ডেলের নিচে সারি সারি সাজানো ৮০০ বেঞ্চ। তাতে বসা পাক্কা ৩ হাজার ২০০ শিক্ষার্থী। এমন পরিসরেই হচ্ছিল বিজ্ঞানের একটি ব্যবহারিক ক্লাস। সেখানে লোহা, তার ও ব্যাটারি দিয়ে বৈদ্যুতিক চুম্বক তৈরি করতে পেরে আনন্দে কেঁদেই ফেলে কুলিয়ারচর পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী সেঁজুতি রানী দাস ও হাসিবা আক্তার। নবীন শিক্ষার্থীর নিজের হাতে প্রথম এমন মজার কিছু করার আনন্দ হয়তো এমনই।
গতকাল বুধবার সকালে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনেস্থানীয় থানার মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তিবিষয়ক এই ব্যতিক্রমধর্মী ব্যবহারিক ক্লাস। আয়োজকদের আশা, বিজ্ঞানের বৃহত্তম ব্যবহারিক ক্লাস হিসেবে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান করে নেবে তাদের এ উদ্যোগ।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ প্রধান অতিথি হিসেবে এ আয়োজনের উদ্বোধন করেন। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর) আসনের

 সাংসদ নাজমুল হাসান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক আজিম উদ্দিন বিশ্বাস, পৌর মেয়র ইমতিয়াজ বিন মুছা, স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার জিল্লুর রহমান প্রমুখ।

পাঠদানে ‘রিসোর্স পার্সন’ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তাঁকে সহযোগিতা করেন প্রথম আলোর যুব উন্নয়ন কর্মসূচির সমন্বয়ক মুনির হাসান। এ ছাড়া ক্লাসে উপস্থিত ছিলেন উপজেলার বিভিন্ন স্কুলের বিজ্ঞান ও আইসিটি বিষয়ের ৮০ জন শিক্ষক। এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে বৈদ্যুতিক চুম্বক ও কম্পাস তৈরি করা শেখানো হয়।

মুহম্মদ জাফর ইকবাল শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ছোট শহরেও যে বড় আয়োজন হতে পারে, এ উপজেলার খুদে শিক্ষার্থীরা তা প্রমাণ করে দিল।

আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে গত ১৬ আগস্ট একসঙ্গে ২ হাজার ৯০০ শিক্ষার্থীকে বিজ্ঞান বিষয়ে পাঠদানের ঘটনা গিনেস বুকে স্থান করে নেয়। সে রেকর্ড ভাঙতেই কুলিয়ারচরের এ আয়োজন।

জুনাইদ আহ্‌মেদ বলেন, কুলিয়ারচরের এ আয়োজন বাংলাদেশকে নতুন করে বিশ্বদরবারে উপস্থাপন করবে।

আয়োজনের মূল পরিকল্পনাকারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উর্মি বিনতে সালাম বলেন, ‘গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের পরিচালনা পর্ষদের দেওয়া শর্তগুলো আমরা পুরোপুরি পূরণ করেছি।’