ত্রাণের চাল বরাদ্দে সম্পৃক্ততা চান সাংসদেরা

জাতীয় সংসদ ভবন
ফাইল ছবি

স্থানীয় সাংসদদের সঙ্গে পরামর্শ করে সরকারি ত্রাণসহায়তার চাল (জিআর) বরাদ্দের তালিকা চূড়ান্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। আজ বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়।

বিভিন্ন দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায়, দুস্থ ও গরিব জনসাধারণের মধ্যে মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় দেশের সব জেলার জেলা প্রশাসক বরাবর জিআর চাল ও টাকার থোক বরাদ্দ দেয় সরকার। বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে একাধিক সাংসদ অভিযোগ করেন, সরকারি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ত্রাণসহায়তার চাল ও টাকা (জিআর চাল ও ক্যাশ) বিতরণ করা হয়। এ তালিকা করার ক্ষেত্রে অনেক জায়গায় স্থানীয় সাংসদদের মতামত নেওয়া হয় না বা জানানো হয় না। এ নিয়ে সাংসদদের কেউ কেউ বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বৈঠকে এক সাংসদ ত্রাণসহায়তা বরাদ্দের পাশাপাশি মুজিব বর্ষ উপলক্ষে গৃহহীনদের ঘর নির্মাণ প্রকল্পে সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত বৈঠকেও এই কমিটি একই সুপারিশ করেছিল। সূত্র জানায়, গতকালের বৈঠকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় জানায়, জিআর বরাদ্দের ক্ষেত্রে মানবিক সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন নির্দেশিকা ২০১২-১৩ কার্যকর আছে। এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন কমিটিতে সাংসদদের উপদেষ্টা রাখা হয়েছে। জেলা প্রশাসকদের অনুকূলে জিআর বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রে মানবিক সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন নির্দেশিকা অনুসরণ করে বণ্টন ও বিতরণ নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়ে থাকে। তবে মন্ত্রণালয়ের এ বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত জানান একাধিক সদস্য।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি এ বি তাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, কমিটির সদস্যদের অনেকে বলেছেন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা শতভাগ প্রতিপালন করা হচ্ছে না।

এ জন্য তাঁরা বলেছেন, যে চিঠি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়, তার একটি কপি যেন স্থানীয় সাংসদদেরও দেওয়া হয়। যাতে জনপ্রতিনিধিরা এ কাজে সম্পৃক্ত থাকেন। সংসদ সদস্যরা জনপ্রতিনিধি। এলাকায় কার কী অবস্থা, এটা সরকারি কর্মকর্তাদের চেয়ে জনপ্রতিনিধিরা ভালো জানেন। এ জন্য সবার সমন্বয়ে কাজ করতে বলেছে কমিটি, যাতে কাজটি গতিশীল হয় এবং প্রকৃত প্রাপ্য ব্যক্তিরা সহায়তা পান।

জিআর বরাদ্দে সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কোনো অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে এ বি তাজুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তাঁরা দেখেছেন, গৃহহীনদের দেওয়া ঘর অনেক জায়গায় ভেঙে পড়েছে।

নদীর পাড়, পুকুর পাড়, নিচু জমিতে ঘর করা হয়েছে। অনেক জায়গায় নিচ থেকে মাটি সরে গেছে। এতে সরকারেরও ক্ষতি হচ্ছে। এটা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। কাজ যেন টেকসই হয়, সেটা তাঁরা বলেছেন। সেই সঙ্গে গৃহহীনদের ঘর নির্মাণে বরাদ্দ বাড়ানোর কথাও তাঁরা বলেছেন।

এ বি তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটি সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ, জুয়েল আরেং, মজিবুর রহমান চৌধুরী, মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী ও কাজী কানিজ সুলতানা অংশ নেন।