দাওয়াতের কার্ডে প্লাস্টিকের আবরণ দেওয়া যাবে না

সরকারি দাওয়াতপত্র, নির্বাচনী প্রচারপত্র, বইমেলা, বাণিজ্য মেলা এবং সরকারি বিজ্ঞাপন ও প্রচারপত্রে প্লাস্টিক আবরণের ব্যবহার বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সব সচিব, বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সংযোগ শাখা থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকার ২০০২ সালে পলিথিন, পলিপ্রপাইলিনের তৈরি শপিং ব্যাগ ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সারা দেশে সরকারি দাওয়াতপত্র, নির্বাচনী প্রচারপত্র, বইমেলা, বাণিজ্য মেলা এবং সরকারি বিজ্ঞাপন, প্রচারপত্র কিংবা কাগজে প্রকাশিত বিজ্ঞাপন-লিফলেটকে সুরক্ষা দিতে ও আকর্ষণীয় করতে প্রিন্টেড সারফেসের ওপর প্লাস্টিকজাত থার্মাল ল্যামিনেশন ফিল্মের মতো ‘সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক’ ব্যবহার করা হচ্ছে। অপচনশীল ‘সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক’ দেশের প্রাকৃতিক জলাশয়, নদ-নদী এবং সাগরে জমা হয়ে জলজ প্রতিবেশ এবং মানবস্বাস্থ্যের ক্ষতি করেছে।

গতকাল সোমবার বিভিন্ন মন্ত্রণালয় তাদের সংস্থাগুলোকে পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে প্লাস্টিকজাত থার্মাল ল্যামিনেশন ফিল্ম ব্যবহার বন্ধ করার বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে।

এর আগে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মনসুর আলম মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো চিঠিতে জানান, প্লাস্টিকজাত থার্মাল ল্যামিনেশন ফিল্ম পচনশীল নয় এবং এ ধরনের অপচনশীল সামগ্রীর পরিবেশসম্মত পরিত্যাজ্য পদ্ধতি ব্যয়বহুল। এ ছাড়া কাগজগুলো রিসাইকেল করার জন্য প্লাস্টিকের আবরণ অপসারণ করা সম্ভব হয় না। ফলে এগুলো কাগজের সঙ্গে থেকে যায়। ‘সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক’ দেশের জলজ প্রতিবেশ এবং মানবস্বাস্থ্যের ক্ষতি সাধন করছে। এসব কথা জানিয়ে পরিবেশ মন্ত্রণালয়সহ সব মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়ার অনুরোধ জানান।

ঢাকার জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ হিসেবে পলিথিনকে দায়ী করা হয়। অথচ পলিথিন ঠেকাতে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেই। এদিকে পলিথিন ও প্লাস্টিক-বর্জ্য উৎপাদনে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান দশম। এ তালিকায় প্রথম হয়েছে চীন, ভারত ১২তম অবস্থানে, পাকিস্তান ১৫তম ও মিয়ানমার ১৭তম অবস্থানে আছে। ক্ষতিকর দিকের কথা ভেবে ২০০২ সালে প্রথম পলিথিন নিষিদ্ধ করা হয়। সে সময় কাগজের ঠোঙার ব্যবহার বেড়েছিল। তবে থামেনি পলিথিনের ব্যবহার।

এর আগে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় ২০১৫ সালের ১৭ ডিসেম্বর ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার ও চিনি সংরক্ষণ এবং পরিবহনে বাধ্যতামূলকভাবে পাটের বস্তা ব্যবহারের নির্দেশ দিয়ে আদেশ জারি করে। এরপর ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে দুই দফায় আদেশ দিয়ে আরও ১১টিসহ মোট ১৭টি পণ্যের মোড়ক হিসেবে পাটের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়।
পলিথিন ও একবার ব্যবহার উপযোগী (ওয়ান টাইম) প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার বন্ধে আদালতেরও নির্দেশনা রয়েছে।