দিনাজপুরে করোনায় তিনজনের মৃত্যু

করোনাভাইরাস
প্রতীকী ছবি

দিনাজপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬৫ জন। আক্রান্ত লোকজনের ৫৫ জনই সদর উপজেলার। সেই হিসাবে সদর উপজেলায় আক্রান্তের হার ৮৫ শতাংশ। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৩ জন। এ নিয়ে জেলায় করোনা সংক্রমিত হয়ে মৃতের সংখ্যা ১৫০ জন। তাঁদের ৭৪ জনই এই উপজেলার।

নতুন মারা  যাওয়া তিনজন হলেন চিরিরবন্দর উপজেলার ভিয়াইল তালপুকুর এলাকার আনিসুর রহমান (৮৪), হাকিমপুর উপজেলার হিলি বাজার এলাকার রোকেয়া বেগম (৫০) ও ফুলবাড়ি উপজেলার কাটাবাড়ি এলাকার এম এ হান্নান।

আজ শনিবার পর্যন্ত এ জেলায় করোনা রোগী রয়েছেন ৯৩৪ জন, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪৮৮ জন। মোট রোগীর ৯৬ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এম আব্দুর রহিম মেডিকেল হাসপাতালে শয্যার সংকুলান না হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার থেকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালেও রোগী ভর্তি শুরু হয়। প্রথম দিন ২ জন রোগী ভর্তি হলেও মাত্র ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে সেখানে বর্তমানে রোগী ভর্তি আছেন ১৯ জন।

জেলায় গত ১ সপ্তাহের করোনা পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এই সময়ের মধ্যে ১ হাজার ৬৭৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন ৬৫০ জন। এঁদের মধ্যে সদর উপজেলারই ৪৪৮ জন। তার আগের সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১ হাজার ৪৭ জনের। পজিটিভ হয়েছিলেন ২৭৮ জন। এর মধ্যে সদর উপজেলার ১৯৬ জন। এ ছাড়া গত সপ্তাহে করোনায় মৃত ১২ জনের মধ্যে সদর উপজেলারই ৭ জন এবং তার আগের সপ্তাহে করোনায় মৃত ৪ জনের মধ্যে ৩ জন সদর উপজেলার।

এদিকে করোনার সংক্রমণ রোধে সদর উপজেলায় লকডাউন কর্মসূচির আজ পঞ্চম দিন। লকডাউন পালন করতে মানুষকে বাধ্য করছে প্রশাসন। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মানাতেও চলছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রমসহ বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণা।
আজ শহর ঘুরে দেখা যায়, শহরের প্রধান প্রবেশপথসহ প্রায় সব কটি গলিমুখেই দেওয়া হয়েছে বাঁশের ব্যারিকেড। প্রতিটি মোড়ে পুলিশ-আনসার-স্বেচ্ছাসেবকদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত জরুরি পণ্য সেবা ছাড়া অন্য দোকানগুলোকে অর্ধেক শার্টার নামিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে দেখা গেলেও আজ শহরের মুন্সিপাড়া, লিলির মোড়, মডার্ন মোড়, মালদহপট্টিতে সব কটি দোকানই বন্ধ রাখা হয়েছে।

মুঠোফোনে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী বলেন, ‘চলমান ১ সপ্তাহের লকডাউন কর্মসূচির সুফল পেতে অন্তত ১৪ দিন সময় লাগবে। লকডাউন কর্মসূচির আজ ৫ম দিন চলছে। সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখীই রয়েছে। আগামীকাল রোববার জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি পুনরায় বৈঠকে বসবে। যদি সংক্রমণ পরিস্থিতি ৪৫ শতাংশের ওপরে থাকে, সে ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ অন্যদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। তবে মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টিকে অধিকতর প্রাধান্য দিয়েই পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।