দিনাজপুরে লকডাউন এক সপ্তাহ বাড়ল

করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় দিনাজপুরে আরও এক সপ্তাহের লকডাউন বাড়ানো হয়েছে। দ্বিতীয় দফার এ লকডাউন চলবে ২৮ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত। রোববার রাত ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এর আগে ১৫ জুন সকাল ৬টা থেকে এক সপ্তাহের লকডাউন কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। রোববার ছিল প্রথম ধাপের লকডাউন ঘোষণার ষষ্ঠতম দিন।

সভায় জানানো হয়, জেলায় করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রথমে কঠোর বিধিনিষেধ এবং পরে ১৫ জুন থেকে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল। এ সময়ের মধ্যে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্বেচ্ছাসেবকদের সমন্বয়ে লকডাউন সফল করার নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। পুরো শহরের প্রধান প্রধান প্রবেশমুখ এমনকি শহরের অভ্যন্তরে ছোট ছোট গলিমুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিনা প্রয়োজনে মানুষের চলাচল কিছুটা হলেও রোধ করা সম্ভব হয়েছে। তবে সংক্রমণ কমেনি। সেই সঙ্গে মৃত্যুর হারও বেড়েছে। সংক্রমণ পরিস্থিতির প্রকৃত অবস্থা বুঝতে অন্তত ১৪ দিন এ অবস্থা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে।

দ্বিতীয় দফার লকডাউনে আগের মতো জরুরি পণ্যসেবা ছাড়া অন্য সব দোকান ও যান চলাচল বন্ধ থাকবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কাঁচাবাজার খোলা থাকবে বেলা দুইটা পর্যন্ত। মুদিখানা খোলা রাখা হবে সকাল ছয়টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত।

সভায় আরও জানানো হয় শিগগিরই নতুন করে একটি আইসোলেশন সেন্টার প্রস্তুত করার কথা। এতে করে করোনা সংক্রমিত আর কাউকে বাসায় থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে না। এ ছাড়া স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন থেকে অসহায় ও দুস্থ ব্যক্তিদের জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা করার কথাও জানানো হয়।

জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সময় অনলাইনে যুক্ত হন সদর আসনের সাংসদ ও জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব নুরুল ইসলাম। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আজিজুল ইমাম চৌধুরী, সিভিল সার্জন আবদুল কুদ্দুস, দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক নাজমুল ইসলাম, এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক আবু রেজা, প্রেসক্লাবের সভাপতি স্বরূপ বকসী প্রমুখ।

এদিকে দিনাজপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার ১৯২টি নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছেন ৬৭ জন। লকডাউন ঘোষিত সদর উপজেলার ৭৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩২ জনের। এ ছাড়া সদর উপজেলায় ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন একজন। এ নিয়ে জেলায় করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ১৫১ জন। যার মধ্যে সদর উপজেলারই ৭৫ জন। রোববার পর্যন্ত জেলায় মোট করোনা রোগী ৯৭৪ জন। তার মধ্যে সদর উপজেলায় রোগী সংখ্যা ৬৬০ জন। হাসপাতালে রোগী ভর্তি আছেন ৯৪ জন। অবশিষ্টরা হোম আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করছেন।