দীঘিনালায় ইউপিডিএফের সমর্থন পাচ্ছেন কোন প্রার্থী?

দীঘিনালা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আঞ্চলিক সংগঠন জেএসএস-এমএন লারমা সমর্থিত প্রার্থী থাকলেও ইউপিডিএফের (প্রসীত খীসা) সমর্থন কে পাচ্ছেন এখনো নিশ্চিত হয়নি। নির্বাচনে আওয়ামী লীগেরও প্রার্থী রয়েছেন। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা না থাকায় বিএনপি কোনো প্রার্থী দেয়নি। ১৮ মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এই উপজেলায়।

এর আগে তৃতীয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জেএসএস-এমএন লারমা সমর্থিত ও চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ইউপিডিএফ সমর্থিত প্রার্থী জয়লাভ করেছিল। এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আটজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

জেএসএস-এমএন লারমা নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চেয়ারম্যান পদে জেএসএসের দীঘিনালা উপজেলার সাবেক সভাপতি প্রফুল্ল কুমার চাকমা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাবেক সভাপতি রাজ্যময় চাকমা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। দুজনের মধ্যে যেকোনো একজন চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

চেয়ারম্যান প্রার্থী রাজ্যময় চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘জেএসএস-এমএন লারমা পক্ষ থেকে আমরা দুজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। সংগঠন যাকে সিদ্ধান্ত দেবে তিনি চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।’

আরেক আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফ কোন প্রার্থীকে সমর্থন দিচ্ছে তা নিশ্চিত হয়নি। তবে সংগঠনটির সমর্থন পেতে কয়েকজন প্রার্থী গোপনে গোপনে তদবির করছেন বলে জানা গেছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে থেকেই ইউপিডিএফ সমর্থন পেতে তদবির চালাচ্ছেন।

ইউপিডিএফের (প্রসীত খীসা) জেলা সংগঠক মাইকেল চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এখনো কোনো প্রার্থীকে শুভেচ্ছা (সমর্থন) জানাইনি। যে প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতা বেশি, জনগণের জন্য কাজ করবেন এবং দায়বদ্ধতা থাকবে এমন প্রার্থীকেই সংগঠনের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা বার্তা দেওয়া হবে।’

স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া কবাখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান বিশ্বকল্যাণ চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কোনো আঞ্চলিক দলের সমর্থন নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেয়নি। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনের পর নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি বোঝা যাবে। তবে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব বলে এখনো আশাবাদী।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নিউটন মহাজন প্রথম আলোকে বলেন, ‘তৃতীয় ও চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সামান্য ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল।

এবারের নির্বাচনে আমরা জয়লাভে আশাবাদী। এবারও আমরা দলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ কাশেমকে একক প্রার্থী করেছি।’

জেএসএস (এমএন লারমা) পক্ষের কেন্দ্রীয় সহকারী তথ্য ও প্রচার সম্পাদক প্রশান্ত চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের সংগঠনের সমর্থনে চেয়ারম্যান পদে দুইজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে একজন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে একজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।’

উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, নির্বাচনে পাঁচটি ইউনিয়নের ২৮টি কেন্দ্রে ৭৫ হাজার ৫২৯ জন ভোটার রয়েছেন। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩৮ হাজার ৬১৩ জন, নারী ভোটার ৩৬ হাজার ৯১৬ জন। নির্বাচনে ৯ হাজার ৬৫৭ জন নতুন ভোটার ভোট দেবেন।

দীঘিনালা উপজেলা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা রকর চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, মনোনয়নপত্র জমা দানের শেষ দিনে (১৮ ফেব্রুয়ারি) চেয়ারম্যান পদে ৮ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।