
ঘরের পাশেই মাঠ। সেখানেই সহপাঠীদের সঙ্গে খেলাধুলা করত শিশু আরমান, এটিই যেন কাল হল। ছাত্রলীগ ও যুবলীগের মধ্যে গোলাগুলিতে গত সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় নিহত হয় আরমান (৮)।
মা আছিয়া বেগমের কাছে মুহূর্তেই দুঃসংবাদটি পৌঁছে যায়। ঘর থেকে বের হয়ে সেই মাঠে এসে আছিয়া দেখেন পড়ে আছে আরমানের নিথর দেহ। এরপর আছিয়ার আহাজারি, ‘আমার ছোট ছেলে আমারে গিয়ে কয় আম্মা আরমান ভাইয়া গুলি খায়ছে। আল্লাহ আমার এই সর্বনাশটা কেন করলা। আমার পোলার কী দোষ ছিল। আমি এর বিচার চাই।
চট্টগ্রামের সিআরবি ভবনের পাশের বস্তিতে আরমানরা থাকে। সোমবার দুপুরে সিআরবি এলাকায় দুই পক্ষের সংঘর্ষের কিছুক্ষণ আগে সে বাসা থেকে বের হয়। আশপাশে তার ছোট ভাইসহ আরও কয়েকজন সহপাঠী ছিল। গুলি এসে লাগে তার মাথায়। ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয় বলে পুলিশ জানায়। তবু তাকে নেওয়া হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। চিকিৎসকেরা কেবল আনুষ্ঠানিক মৃত্যুর ঘোষণা দেন।
বাবা সিদ্দিক আহমদ ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায়। আরমানেরা তিন ভাই। আরমান মেজ। তাদের বাড়ি কিশোরগঞ্জে।
এই ঘটনায় নিহত হন সাজু পালিত নামের আরেক যুবক। তিনি নগরের নন্দনকানন দুই নম্বর গলির কানু পালিতের ছেলে। তিনি যুবলীগের রাজনীতি করতেন বলে পারিবারিক ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। সাজুর মা মিনতি পালিত ও বোন মুন্নী দাশ হাসপাতালে ভাইয়ের লাশ ধরে বিলাপ করছিলেন।
মিনতি বলেন, ‘অজিত (সাজুর বন্ধু) আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে যায়। আমার ছেলেকে ওরা ডেকে নিয়ে মেরে ফেলল। আমি বিচার চাই।’
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, যুবলীগ নেতা হেলাল আকবরের পক্ষে সাজুকে সিআরবি এলাকায় নিয়ে যান তাঁর বন্ধুরা। ঘটনার সময় একটি চায়ের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে সাজু চা আর ডালপুরি খাচ্ছিলেন। এ সময় একটি গুলি এসে সাজুর মাথায় লাগে। সঙ্গে সঙ্গে সাজু লুটিয়ে পড়েন মাটিতে। হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।