দুটি লাল পতাকা উড়লেই বুঝতে হবে গুপ্তখাল

‘কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে এখন থেকে যেখানে একসঙ্গে দুটি লাল পতাকা উড়তে দেখা যাবে, ধরে নিতে হবে সেখানে গুপ্তখাল রয়েছে। জোয়ার হোক আর ভাটাই হোক, সাগরের ওই স্থানে নেমে গোসল করা তখন মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হবে। তাই এ ব্যাপারে আপনাদের (উপস্থিত পর্যটকদের) সতর্ক থাকতে হবে।’ গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ছয়টায় কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের লাবণী পয়েন্টে নিরাপদ গোসল সম্পর্কে প্রচারণা চালাতে গিয়ে জেলা প্রশাসক মো. জয়নুল বারী এসব কথা তুলে ধরেন। জেলা প্রশাসক বলেন, ‘বিশ্বের এই দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতে গোসল করার জন্য সারা দেশ থেকে লোকজন ছুটে আসছেন। কিন্তু অসাবধানতার জন্য অনেকে বিপদের সম্মুখীন হচ্ছেন। আনন্দ করতে এসে দুঃখ-কষ্ট-বেদনা নিয়ে ঘরে ফিরতে হচ্ছে। এ নিয়ে আমরাও উদ্বিগ্ন। তাই নিরাপদ গোসলের জন্য এই বিশেষ প্রচারণা শুরু করেছি।’ গতকাল সন্ধ্যায় কলাতলী থেকে শৈবাল পয়েন্ট পর্যন্ত সৈকতের প্রায় চার কিলোমিটার সৈকতে চারটি স্থানে একসঙ্গে দুটি লাল পতাকাবিশিষ্ট একাধিক খুঁটি উত্তোলন করা হয়। এ সময় পর্যটকদের মধ্যে পাঁচ হাজারের বেশি প্রচারপত্র বিলি করা হয়। প্রচারপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, সমুদ্রে নামার আগে পতাকার সংকেত দেখে নিশ্চিত হয়ে নিন, লাল পতাকা ওড়ানো থাকলে সমুদ্রে নামবেন না, ভাটার সময় এবং চোরাবালি/চোরাগুপ্তা খাল চিহ্নিত স্থানে নামা বিপজ্জনক। এতে প্রাণহানির ঝুঁকি রয়েছে। শিশুদের কোনো অবস্থাতেই সমুদ্রের পানিতে নামাবেন না, কখনো সমুদ্রের পানিতে একাকী নামবেন না। সাঁতার না জানলে লাইফ জ্যাকেট পরে নামুন, কেউ সমুদ্রে নেমে বিপদে পড়লে আপনি উদ্ধারের চেষ্টা না করে লাইফ গার্ডের সাহায্য নিন, নিজে নিরাপদ থাকুন, অন্যকে সতর্ক করুন। সৈকতের সচেতনমূলক এই পথসভায় পুলিশ সুপার সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমরা এই সৈকতকে পরিবেশবান্ধব ও নিরাপদ সৈকত হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। ইতিমধ্যে সৈকতের অবৈধ স্থাপনা, ভ্রাম্যমাণ দোকানপাঠ উচ্ছেদ করেছি। বালুচরে পর্যটকদের হাঁটাচলার স্থানে ঘোড়া ও বিচ বাইকের বিচরণ ও চলাচল বন্ধ করে দিয়েছি। পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশকে সার্বক্ষণিক সতর্ক রাখা হয়েছে। কিন্তু নিরাপদ গোসল নিয়ে পর্যটকদের বেশি সতর্ক থাকতে হবে।’ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নূরুল আলম নিজামী বলেন, ‘এখন থেকে সৈকতের কলাতলী, সুগন্ধা, লাবণী ও শৈবাল পয়েন্টে (যেখানে গুপ্তখাল রয়েছে) একসঙ্গে একাধিক লাল পতাকা ওড়ানো হবে এবং ওই স্থানে চারটি হাত-মাইকে সাগরে না নামার জন্য দিন-রাত সমানে প্রচারণা চালানো হবে। বাড়ানো হবে উদ্ধারকর্মীর সংখ্যা। কিন্তু পর্যটকদের এ ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বনের পাশাপাশি নির্দেশনাও মেনে চলতে হবে। তা না হলে নিরাপদ গোসল নিশ্চিত করা কঠিন হবে।’