দুর্নীতিতে লেজেগোবরে মাল্টিমিডিয়া প্রকল্প

সম্মানীর নামে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ। প্রশিক্ষণসামগ্রী কেনায় অনিয়ম। অভিযুক্তরাই আছেন প্রকল্পের দায়িত্বে।

প্রকল্পে কাজ ছিল মূলত দুটি। শ্রেণিকক্ষে মাল্টিমিডিয়া স্থাপন। আর মাল্টিমিডিয়া ব্যবহার করে ক্লাস পরিচালনার জন্য শিক্ষক-কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ। বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা। প্রকল্পের কাজ হয়েছে ৮ শতাংশ, তবে দুর্নীতি হয়েছে দেদার। সেসবের তদন্তও হয়েছে। অভিযুক্ত কর্মকর্তারাও স্বপদে বহাল আছেন। শুধু শ্রেণিকক্ষগুলো ফাঁকা পড়ে আছে।

সরকার চেয়েছিল সারা দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের ৩১ হাজার ৩৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ করবে। আর পৌনে ৬ লাখ শিক্ষক-কর্মকর্তাকে প্রযুক্তিনির্ভর ক্লাস পরিচালনার প্রশিক্ষণ দেবে। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির চোটে সব ভেস্তে গেছে।

প্রকল্পেটির মেয়াদ ছিল চার বছর। মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় অন্য প্রকল্পের সঙ্গে এই প্রকল্পের মেয়াদ আরেক বছর বাড়ানো হয়েছে। তারও ছয় মাস পার হয়ে গেছে। সরকারি তদন্ত বলছে, সাড়ে চার বছরেও কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ হয়নি এই প্রকল্প থেকে। এর নাম ‘আইসিটির মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার প্রচলন (দ্বিতীয় পর্যায়ে)’ প্রকল্প। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংস্থা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) এটি বাস্তবায়ন করছে। আগামী জুনে শেষ হচ্ছে প্রকল্পের বর্ধিত মেয়াদ।

এ প্রকল্পের দুর্নীতির তদন্ত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ)। এ পর্যন্ত প্রায় দেড় লাখ শিক্ষক-কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন বলছে, দেশের ২০ জায়গায় প্রশিক্ষণ হয়েছে।

প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) মো. আব্দুস সবুর খান সেখানে উপস্থিত না হয়েও ‘প্রোগ্রাম পরিচালক’ হিসেবে ভিন্ন ভিন্ন স্বাক্ষরে সাড়ে তিন মাসে প্রায় ১৭ লাখ টাকা সম্মানী নিয়েছেন। প্রশিক্ষণ–সংশ্লিষ্ট আরও অনেকেই এভাবে সম্মানীর নামে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

এই প্রকল্পে যা হয়েছে, তা দুঃখজনক। অবশ্যই প্রকল্প পরিচালকসহ দায়ীদের সাজা হওয়া উচিত। কেনাকাটাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আরও কেউ কলকাঠি নেড়েছেন কি না, সেটাও বের করে শাস্তির আওতায় আনা উচিত।
নজরুল ইসলাম খান ,সাবেক শিক্ষাসচিব

ক্রয়প্রক্রিয়া শুরুর আগেই পৌনে ১ কোটি টাকার প্রশিক্ষণসামগ্রী গ্রহণ করা হয়েছে বলে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। কোনো প্রকার দরপত্র বা ক্রয়বিধি ছাড়াই সোয়া ২ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। নিয়ম ভেঙে ব্যয় করা হয়েছে আরও প্রায় ২১ লাখ টাকা।

প্রকল্প শেষ হতে চলল, মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ হলো না কেন—জানতে চাইলে প্রকল্পের পরিচালক মো. আব্দুস সবুর খান তাঁর দপ্তরে বসে প্রথম আলোকে বলেন, নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রতিবন্ধকতার কারণে হয়নি। নিজের অনিয়মের বিষয়ে তাঁর জবাব, অনুমোদন আর দলিলের ভিত্তিতেই টাকা ব্যয় হয়েছে।

মাউশির সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের মেয়াদ শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালের জুলাই মাসে। মোট ১ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকার এই প্রকল্পে মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ–সংক্রান্ত উপকরণ কেনার জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৮৫৫ কোটি টাকা। আর প্রশিক্ষণ খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৪৩১ কোটি টাকা। বাকি টাকা অন্যান্য আনুষঙ্গিক খাতে ব্যয়ের জন্য ধরা হয়েছে।

মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ করার জন্য চার ধরনের উপকরণ কেনার কথা। এগুলো হলো ল্যাপটপ, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর (স্কিনসহ), ইন্টারনেট মডেম ও স্পিকার। এই চারটি মিলে একটি সেট। মোট ৪৬ হাজার ৪৪৫ সেট উপকরণ কেনার কথা। কারণ, প্রকল্পে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে একাধিক সেট উপকরণ দেওয়ার প্রস্তাব আছে।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার পর্যন্ত কোনো প্রতিষ্ঠানে এক সেট উপকরণও যায়নি। বিচ্ছিন্নভাবে ১৩ হাজার ৫৭৪টি ইন্টারনেট মডেম পাঠানো হয়েছে। কিন্তু ল্যাপটপসহ অন্যান্য উপকরণ না দেওয়ায় এই মডেমগুলো ব্যবহারের সুযোগ নেই।

শুধু ডিআইএ নয়, তার আগে মাউশির একজন পরিচালকের নেতৃত্বে হওয়া তদন্তেও এই প্রকল্পে অনিয়মের সত্যতা মিলে। প্রকল্পের অনিয়ম এখন দুর্নীতি দমন কমিশনও তদন্ত করছে।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান প্রকল্প পরিচালকের যোগ দেওয়ার আগে মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষের উপকরণ কেনাকাটার জন্য দরপত্রের কাজও শেষ হয়েছিল। কিন্তু অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে উপকরণ কেনাকাটা বন্ধ করা হয় মাউশি ও প্রকল্প সূত্র জানায়। এ নিয়ে একটি মামলাও চলমান। তখন তৎকালীন প্রকল্প পরিচালককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এরপর বর্তমান প্রকল্প পরিচালক আবদুস সবুর খানের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন মূল কাজ কিছুই করতে পারেননি। হয়েছে অনিয়ম ও দুর্নীতি।

যাঁরাই অনিয়ম–দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত হবেন, তাঁদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এই প্রকল্পের জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
মো. মাহবুব হোসেন,সচিব, মাধ্যমিক ও শিক্ষা বিভাগ

মাউশি সূত্রে জানা গেছে, শুধু ডিআইএ নয়, তার আগে মাউশির একজন পরিচালকের নেতৃত্বে হওয়া তদন্তেও এই প্রকল্পে অনিয়মের সত্যতা মিলে। প্রকল্পের অনিয়ম এখন দুর্নীতি দমন কমিশনও তদন্ত করছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের নীতি হলো যাঁরাই অনিয়ম–দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত হবেন, তাঁদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এই প্রকল্পের জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, আপাতত প্রকল্প পরিচালক আব্দুস সবুর খানকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

প্রকল্পের মেয়াদ শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালের জুলাই মাসে।
ফাইল ছবি

প্রশিক্ষণে অনিয়ম-দুর্নীতি

এ বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসজুড়ে এই প্রকল্পের অনিয়ম তদন্ত করেন ডিআইএর তিনজন কর্মকর্তা। নেতৃত্ব দেন উপপরিচালক রেহানা খাতুন। সম্প্রতি কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭-১৮ অর্থবছর থেকে এ বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি মাত্র প্রায় ৮ শতাংশ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১ লাখ ৪৪ হাজার ১৫৪ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বিদায়ী অর্থবছরে কোনো প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি। দেশের বিভিন্ন সরকারি শিক্ষণ প্রশিক্ষণ কলেজ (টিটিসি) ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, মাদ্রাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এসব প্রশিক্ষণ কার্যক্রম হয়।

প্রশিক্ষণকেন্দ্রের প্রধানেরাও বিধিবহির্ভূতভাবে আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন। যেমন পাবনার শিক্ষণ প্রশিক্ষণ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ (তৎকালীন) মো. সুজাউদদৌলা ৩০টি প্রশিক্ষণ কোর্সের প্রতিটির প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

তদন্ত কমিটি দেখেছে, শিক্ষণ প্রশিক্ষণের (বিটিটি) ৪৪৭টি ব্যাচের প্রতিটির জন্য ১ হাজার ৫০০ টাকা সম্মানী নিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক আব্দুস সবুর খান। যার মোট পরিমাণ ৬ লাখ ৭০ হাজার ৫০০ টাকা। আর প্রতিষ্ঠানপ্রধান বা সহকারী প্রধানদের প্রশিক্ষণের (এইচআইটি বা এ এইচআইটি) ৬৭৪টি ব্যাচের প্রতিটির জন্য ১ হাজার ৫০০ করে তিনি মোট সম্মানী নিয়েছেন ১০ লাখ ১১ হাজার টাকা। কমিটি বলছে, প্রকল্প পরিচালক ‘প্রোগ্রাম পরিচালক’ দেখিয়ে ২০টি শিক্ষণ স্থানের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে ভিন্ন ভিন্ন স্বাক্ষরে মোট ১৬ লাখ ৮১ হাজার ৫০০ টাকা সম্মানী গ্রহণ করেছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে তিনি প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি হিসেবেও সম্মানী গ্রহণ করেছেন। কমিটি বলেছে এই টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরতযোগ্য।

তদন্তে দেখা যায়, প্রশিক্ষণকেন্দ্রের প্রধানেরাও বিধিবহির্ভূতভাবে আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন। যেমন পাবনার শিক্ষণ প্রশিক্ষণ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ (তৎকালীন) মো. সুজাউদদৌলা ৩০টি প্রশিক্ষণ কোর্সের প্রতিটির প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর মধ্যে ছয়টি কোর্সে তিনি একই সঙ্গে প্রধান অতিথি বা বিশেষ অতিথি, প্রধান সমন্বয়কারী ও মাস্টার ট্রেইনার (প্রধান প্রশিক্ষক)—এই তিন দায়িত্ব পালন দেখিয়ে সম্মানী নিয়েছেন। প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি হিসেবে প্রকল্পের একজন সহকারী পরিচালককে দেখানো হয়েছে। কিন্তু তিনি সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না এবং নিজে কোনো সম্মানীও গ্রহণ করেননি।

প্রশিক্ষণের ভেন্যু চার্জ (অনুষ্ঠানস্থলের ভাড়া) হিসেবে ২০টি সরকারি শিক্ষণ প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানকে মোট ১ কোটি ৮৮ লাখ ১৬ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটি বলেছে, প্রকল্প প্রস্তাবে থাকলেও ভেন্যুগুলো সরকারি প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এই অর্থ তাদের প্রাপ্য নয়। এটা সরকারি অর্থের অপব্যবহার।

তদন্তে কমিটির বিভিন্ন তারিখের তথ্যপ্রমাণ যাচাই করে দেখেছে, ৭৪ লাখ ৩৮ হাজার ৩৯৫ টাকার প্রশিক্ষণসামগ্রী ক্রয়প্রক্রিয়ার আগেই গ্রহণ করে কার্যাদেশ প্রদানের মাধ্যমে শুধু কাগজে ক্রয়প্রক্রিয়া দেখানো হয়েছে। আবার কোনো প্রকার দরপত্র বা ক্রয়বিধি ছাড়াই ২ কোটি ২৫ লাখ ২ হাজার টাকা ব্যয় করা হয়েছে।

এখানে প্রকল্পের নামে সরকারি অর্থের অপচয় করা হয়েছে। আর এত লোকের সরাসরি প্রশিক্ষণেরও প্রয়োজন নেই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কিছুসংখ্যক শিক্ষককে মাস্টার ট্রেইনার বানানো যেতে পারে। তাঁরাই অন্য শিক্ষকদের বিষয়টি শেখাবেন। এ ছাড়া এখন তো অ্যাপ বানিয়েও সহজে অনেককে শেখানো সম্ভব।
মো. কায়কোবাদ, সাবেক অধ্যাপক, বুয়েট

অনিয়মের এসব তথ্য শুনে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েটের) সাবেক অধ্যাপক মো. কায়কোবাদ বলেন, এখানে প্রকল্পের নামে সরকারি অর্থের অপচয় করা হয়েছে। আর এত লোকের সরাসরি প্রশিক্ষণেরও প্রয়োজন নেই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কিছুসংখ্যক শিক্ষককে মাস্টার ট্রেইনার বানানো যেতে পারে। তাঁরাই অন্য শিক্ষকদের বিষয়টি শেখাবেন। এ ছাড়া এখন তো অ্যাপ বানিয়েও সহজে অনেককে শেখানো সম্ভব।

তদন্তে সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের হিসাব সংরক্ষণেও অস্বচ্ছতা রয়েছে। বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নামে ১৪২ কোটি ৪ লাখ ৫৩ হাজার ৫০০ টাকা বরাদ্দের অনুমোদন দেওয়া হলেও বরাদ্দ করা হয়েছে ১৪১ কোটি ৯৬ লাখ ৭৯ হাজার ৬০০ টাকা। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রধান হিসাবরক্ষণ ও ফাইন্যান্স কর্মকর্তার ব্যয় বিবরণীতে অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণে ব্যয় দেখানো হয়েছে ৯৬ কোটি ২৮ লাখ ১৯ হাজার টাকা। এ ক্ষেত্রে মোট বরাদ্দের চেয়ে ৪৫ কোটি ৬৮ লাখ ৬০ হাজার ৬০০ টাকা ব্যয় কম হয়েছে। আবার প্রকল্পের মাসিক অগ্রগতি প্রতিবেদনে (জুন, ২০১৯ পর্যন্ত) একই খাতে ব্যয় দেখানো হয়েছে ৯৬ কোটি ২৯ লাখ ৮৩ হাজার টাকা।

এ ক্ষেত্রেও প্রকৃত ব্যয়ের চেয়ে ১ লাখ ৬৪ হাজার টাকা বেশি দেখানো হয়েছে।
বিভিন্ন সময়ে নগদে কেনার বিবরণ দিয়ে তদন্ত কমিটি বলেছে, প্রকল্প পরিচালকদের দরপত্র ছাড়া বছরে সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করার ক্ষমতা আছে। কিন্তু এখানে প্রকল্প কর্মকর্তা নোটবুক বা প্যাড, কলম, ম্যানুয়াল মুদ্রণ, ব্যাগ কেনার জন্য ৩৮ লাখ ২৭ হাজার ৬৬০ টাকা খরচ করেছেন। প্রকল্প পরিচালকদের স্বল্প মূল্যের পণ্য এবং জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় সেবা সরাসরি কেনার জন্য বছরে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা ব্যয়ের ক্ষমতা আছে। কিন্তু ব্যয় করা হয়েছে ২২ লাখ ৭৫ হাজার ৬৫৫ টাকা।

সাবেক শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান প্রথম আলোকে বলেন, এই প্রকল্পে যা হয়েছে, তা দুঃখজনক। অবশ্যই প্রকল্প পরিচালকসহ দায়ীদের সাজা হওয়া উচিত। কেনাকাটাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আরও কেউ কলকাঠি নেড়েছেন কি না, সেটাও বের করে শাস্তির আওতায় আনা উচিত।