দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে কথা বলার আহ্বান

মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে নিজেদের কাজের জায়গা থেকে কীভাবে দেখেন তা নিয়ে কথা বলেছেন একদল তরুণ। সারা দিনের ওই অনুষ্ঠানে গান, কবিতা, কার্টুন, কৌতুক আর বক্তৃতার মধ্য দিয়ে তাঁরা চিন্তা আর মতের অবাধ প্রকাশের কথা বলেছেন। তাঁরা বলেছেন, দেশকে এগিয়ে নেওয়ার স্বার্থে চলুন কথা বলি। 

আন্তর্জাতিক মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ‘ভেন্ট হাউস’ বা ‘মন খোলার বাতায়ন’ নামের ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আলোকচিত্রী ও দৃকের প্রতিষ্ঠাতা শহীদুল আলম বলেন, ‘আমাদের দেশে কিছু বলতে গেলে বলা হয়, থাক না। অন্য কেউ বলুক। তোমার বলার দরকারটা কী! তোমার কি ঠেকা পড়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার ক্ষেত্রে যেটা বিশেষ করে বলে, তুমি তো শিল্পী। শিল্পীর রাজনীতি নিয়ে কথা বলার দরকারটা কী?’ এ ছাড়া কিসের বিরুদ্ধে বলা যাবে না, কোনটা নিয়ে চুপ থাকতে হবে, সেসব বিষয় নজরে এনে বলার চেষ্টা হয়, সময়টা ভালো না। শহীদুল আলম মনে করেন, ভালো সময় আপনাআপনি আসে না। ভালো সময় আনতে হয়। ভালো পরিস্থিতি তৈরি করতে হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ফাহমিদুল হক নির্বাচনের কাছাকাছি সময় সামহোয়ারইন ব্লগ বন্ধের প্রসঙ্গ টানেন। তাঁর মতে, এই ব্লগের মাধ্যমে লোকজন দীর্ঘদিন লেখালেখির চর্চা আর মতপ্রকাশের সুযোগ পেত। তাই চিন্তার বিকাশের স্বার্থে তিনি ব্লগ খুলে দেওয়ার পক্ষে মত দেন।
লেখক ও উন্নয়নকর্মী আইরিন খান বলেন, লোকজন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আর আর্থসামাজিক বৈষম্য নিয়ে বাড়ির বাইরে যা বলেন, তা চর্চা করেন না। তিনি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংকুচিত হওয়ার প্রসঙ্গ টানতে গিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কথা উল্লেখ করেন।
পাঠশালার কিউরেটর তানজীম ওয়াহাব, অভিনেতা ইরেশ যাকের, কার্টুনিস্ট সৈয়দ রাশেদ ইমাম তন্ময়, সাংবাদিক সৈয়দ তাশফিন চৌধুরী, কমেডিয়ান ইয়ামিন ও আহমেদ আশিক নিজেদের কাজের ক্ষেত্রে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলেন।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক প্রচারণা ব্যবস্থাপক সাদ হাম্মাদি বলেন, ‘আমরা দেখছি, বাংলাদেশের পত্রিকার সম্পাদকেরা প্রতিবেদন ও সম্পাদকীয় ছাপানোর ব্যাপারে বেশ সতর্ক এবং কখনো কখনো রোষের শিকার হবেন এই ভয়ে কলাম ও প্রতিবেদন ছাপানো থেকে বিরত থাকেন।’
২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে রচিত কবিতা ‘অপহৃত কিছু কণ্ঠস্বর’ পড়ে শোনান নাইম উদ্দীন। রিফাত ইসলাম এশা তাঁর কবিতায় শুনিয়েছেন প্রতিটি শব্দের মধ্যে শ্বাস নিতে হবে। আইন যদি গলা চেপে ধরে তবে শ্বাস নিয়ে অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। গান গেয়ে শোনান আরমীন মুসার দল ঘাসফড়িং কয়ার এবং আদিবাসী মানবাধিকারকর্মী ও ব্যান্ড দল মাদলের গায়ক শ্যাম সাগর মানকিন।