ধর্ষণ প্রতিরোধে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড চান আলেমরা

ধর্ষণ প্রতিরোধে জনসমক্ষে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন ইসলামি দলের নেতারা।
হাসান রাজা

ধর্ষণ প্রতিরোধে জনসমক্ষে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন ইসলামি দলের নেতারা। তাঁরা বলেছেন, কেবল কঠোর শাস্তির বিধান করলেই ধর্ষণ রোধ হবে না, ধর্ষণের উৎসমুখগুলো বন্ধ করতে হবে।

আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর সমমনা ছয়টি ইসলামি দল বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ থেকে মিছিল নিয়ে বিজয়নগরে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। ‘সারা দেশে ধর্ষণ, জেনা ব্যভিচারের’ বিরুদ্ধে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, একদিকে করোনাভাইরাসে দেশ হাবুডুবু খাচ্ছে, অপর দিকে মা-বোনদের ইজ্জত-আবরু লুণ্ঠন হচ্ছে, তাঁদের হত্যা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘পশ্চিমা সংস্কৃতির কারণে সমাজ থেকে লজ্জা–শরম উঠে গেছে। আজ আমরা লজ্জা-শরম ধ্বংস করে দিয়েছি বলেই সমাজে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এভাবে সমাজ চলতে পারে না।’

নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, এই পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে সমাজে ন্যায়বিচারের আইন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ইসলামি আইন ছাড়া ন্যায়বিচার সম্ভব নয়।

ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি প্রকাশ্যে কার্যকরের দাবি জানান বাংলাদেশ খেলাফতে মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। তিনি বলেন, এমন সাজা হলে লম্পটদের বুকে কম্পন সৃষ্টি হয়। তবে শুধু কঠোর শাস্তির মাধ্যমে ধর্ষণ রোধ করা যাবে না। এর উৎসমুখগুলো বন্ধ করতে হবে। মাদকের উৎস, সরবরাহ এবং প্রাপ্তির ব্যবস্থা বন্ধ করতে হবে। নারীকে ভোগ্যপণ্য এবং ব্যবসার পণ্য হিসেবে অশ্লীলভাবে উপস্থাপনের সব অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে।

সমাবেশে ধর্ষণ ও জেনা-ব্যভিচার প্রতিরোধে সমমনা ইসলামি দলগুলোর পক্ষ থেকে ৬ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে জেনা, ব্যভিচার ও ধর্ষণ প্রতিরোধে জনসমক্ষে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা। পর্নোগ্রাফির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ। মাদকদ্রব্যের অবাধ প্রাপ্তি ও ব্যবহার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা। নারীদের অশ্লীলভাবে উপস্থাপনা ও পণ্য হিসেবে ব্যবহার বন্ধ করা। আইনের নিরপেক্ষ প্রয়োগ, বিচারকাজকে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক হস্তক্ষেপমুক্ত রাখা এবং নারীর মর্যাদা এবং অধিকার সংরক্ষণে কোরআন-হাদিসের শিক্ষা জাতীয় শিক্ষা কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত করা।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমির মোহাম্মদ ঈশা সাহেদী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নায়েবে আমির আবদুর রব ইউসুফী, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের, বাংলাদেশ খেলাফতে আন্দোলনের নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান হামিদী, মুসলিম লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান প্রমুখ।

এদিকে চরমোনাইয়ের পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বাদ জুমা বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে ধর্ষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের নায়েবে আমির মুফতি ফয়জুল করিম।