নওগাঁয় ৮৬১ বিদেশফেরতের হদিস নেই

নওগাঁয় ১ মার্চ থেকে গত শনিবার (২১ মার্চ) পর্যন্ত ২ হাজার ১৩৫ জন ব্যক্তি বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন। এর মধ্যে আজ সোমবার পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত হয়েছে ১ হাজার ২৭৪ বিদেশফেরত ব্যক্তির। বাকি ৮৬১ জন বিদেশফেরত ব্যক্তি কোথায়, কীভাবে আছেন, এ বিষয়ে প্রশাসনের কারও কাছে কোনো তথ্য নেই। জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা ও জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

নওগাঁ জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা (ডিএসবি) সূত্রে জানা গেছে, ইমিগ্রেশন বিভাগের বরাত দিয়ে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) শাখা থেকে পাঠানো তালিকা অনুযায়ী ১ থেকে ২১ মার্চ পর্যন্ত নওগাঁর ঠিকানা ব্যবহারকারী ২ হাজার ১৩৫ জন ব্যক্তি বিদেশ থেকে ফিরেছেন।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) আবদুল মান্নান মিয়া জানান, পাসপোর্টে বগুড়ার ঠিকানা ব্যবহার করে বিদেশে গেছেন এবং চলতি মাসে যাঁরা দেশে ফিরেছেন, তাঁদের নাম এই তালিকায় স্থান পেয়েছে। এ তালিকা জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগেও পাঠানো হয়েছে।

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সোমবার পর্যন্ত জেলায় ১ হাজার ২৭৪ জন প্রবাসীর হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা গেছে। এর মধ্যে হোম কোয়ারেন্টিনের মেয়াদ শেষ হয়েছে ১৬১ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪৭ জন বিদেশফেরত ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।

সিভিল সার্জন আ. ম আখতারুজ্জামান বলেন, ‘গোয়েন্দা তালিকায় নওগাঁর ঠিকানা ব্যবহারকারী বিদেশফেরত ব্যক্তির সংখ্যা দুই হাজারের অধিক। কিন্তু এখন পর্যন্ত ১ হাজার ২৭৪ জন ব্যক্তিকে খুঁজে বের করে হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা গেলেও আট শতাধিক ব্যক্তির কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁরা কোথায়, কীভাবে রয়েছেন, কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন, নাকি নেই, তা গোয়েন্দা তালিকা ধরে বাড়িতে গিয়ে খুঁজে বের করার কাজ চলছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রে স্থানীয় বাসিন্দারা আমাদের ফোন করে নিশ্চিত করছেন, তাঁদের এলাকায় বিদেশফেরত ব্যক্তি রয়েছেন। সে ক্ষেত্রে আমরা ওই ব্যক্তিদের হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করছি।’

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘অনেক প্রবাসী হয়তো পাসপোর্টে নওগাঁর ঠিকানা ব্যবহার করেছেন। কিন্তু তাঁরা যে নওগাঁয় অবস্থান করবেন, বিষয়টি ধারণা করা ভুল হবে। কেউ হয়তো ১০ বছর, ২০ বছর আগে পাসপোর্টে নওগাঁর ঠিকানা ব্যবহার করেছেন। এর মধ্যে হয়তো তাঁর বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তিত হয়েছে। তাঁরা ঢাকা অথবা অন্য কোনো স্থানে অবস্থান করছেন। তবে তারপরও যেসব বিদেশফেরত ব্যক্তিকে নওগাঁয় পাওয়া যাচ্ছে না, তাঁদের বিষয়ে আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি। অন্য কোথাও থাকলে সে বিষয়টিও আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অবহিত করছি।’

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে গতকাল রোববার নওগাঁয় সাপ্তাহিক বড় হাট-বাজার এক সপ্তাহের জন্য বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এ ছাড়া হোটেল, রেস্তোরাঁ ও চায়ের দোকানে জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে।