নারায়ণগঞ্জে ডিবি পুলিশের দুই এসআইকে গণপিটুনি

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় পাঁচ শিক্ষার্থীকে ধরে নিয়ে মাদক ব্যবসায়ী আখ্যা দিয়ে মারধর ও পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করায় ডিবি পুলিশের দুই কর্মকর্তাকে গণপিটুনি দিয়েছে জনতা। পরে ডিবি পুলিশের অন্য কর্মকর্তারা গিয়ে আটক ছাত্রদের ছেড়ে দিয়ে দুই কর্মকর্তাকে ছাড়িয়ে আনেন।
গত শুক্রবার রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বন্দর উপজেলার মদনপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের মারধরে আহত শিক্ষার্থীদের স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এলাকাবাসী জানান, বন্দরের মদনপুরে লাউসার বাসস্ট্যান্ডে শুক্রবার রাত নয়টার দিকে একটি মুদি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে টেলিভিশনে ক্রিকেট খেলা দেখছিলেন ইস্টার্ন আইডিয়াল কলেজের ছাত্র এমরান ভূঁইয়া, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র শরীফ, মদনপুর রহমানিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র আনোয়ার, মাজহারুল ও হাফিজুল। তাঁরা সবাই স্থানীয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, খেলা দেখার সময় হঠাৎ এসআই জাকির ও এসআই আনোয়ারের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশের একটি দল সেখানে অভিযান চালায়। তারা ওই পাঁচ শিক্ষার্থীকে পেটাতে পেটাতে একটি গাড়িতে তোলে। গাড়িতে তুলেও তাঁদের মারধর করা হয়। পরে দুই পুলিশ কর্মকর্তা ঘোষণা দেন, পাঁচজনকে ছাড়া পেতে হলে পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে ডিবি অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। ইতিমধ্যে ডিবি পুলিশের গাড়িটি মদনপুর বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে নষ্ট হয়ে যায়। পরে দুই পুলিশ কর্মকর্তা গাড়ি থেকে নেমে আটককৃত ছাত্রদের একটি মাইক্রোবাসে তুলে কয়েকজন কনস্টেবলকে সঙ্গে পাঠান।
এদিকে পাঁচ ছাত্রকে আটকের ঘটনা দ্রুত এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সহস্রাধিক লোক রাস্তায় নেমে আসে। বিক্ষুব্ধ জনতা মদনপুর বাসস্ট্যান্ডে এসআই জাকির ও এসআই আনোয়ারকে দেখতে পেয়ে তাঁদের গণপিটুনি দেয় এবং আটকে রাখে। খবর পেয়ে ডিবির ওসি মাহাবুবুর রহমান ও ওসি (তদন্ত) আবদুল আউয়াল এবং এসআই ফজলুল হক ঘটনাস্থলে গিয়ে আটক ছাত্রদের ছেড়ে দিয়ে দুই কর্মকর্তাকে ছাড়িয়ে নেন।
জানতে চাইলে ডিবি পুলিশের ওসি মাহাবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, পাঁচ শিক্ষার্থীকে মাদক সেবনের অভিযোগে আটক করা হয়েছিল। এ খবরে স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে দুই কর্মকর্তাকে কিছু সময়ের জন্য আটকে রাখে। তিনি বলেন, যেহেতু মাদক সেবন ২৯০ ধারায় পড়ে, তাই ওই পাঁচ শিক্ষার্থীকে ছেড়ে দিয়ে দুই কর্মকর্তাকে মুক্ত করে আনা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে ডিবি পুলিশের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে কাঁচপুরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। অন্যদিকে গত সপ্তাহে পুলিশের চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় শহরের রিভারভিউ মার্কেটের এজাজ নামের এক ব্যবসায়ীকে ধরে এনে আদালতে চালান দেয় ডিবি পুলিশ।