নারী-পুরুষ সমতায় দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে বাংলাদেশ

নারী-পুরুষের সমতার দিক থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান সবচেয়ে ভালো। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বৈশ্বিক লিঙ্গবৈষম্য প্রতিবেদন-২০২০-এ এই তথ্য উঠে এসেছে। ১৫৩টি দেশের নারী-পুরুষের সমতার চিত্র তুলে ধরে গতকাল মঙ্গলবার ডব্লিউইএফের ওয়েবসাইটে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

নারীর অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ ও সুযোগ, শিক্ষায় অংশগ্রহণ, স্বাস্থ্য ও আয়ু এবং রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন—এই চার মূল সূচকে বাংলাদেশের স্কোর ৭২ দশমিক ৬ শতাংশ। তবে প্রতিটি সূচকেই গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশ কিছুটা পিছিয়েছে। বৈশ্বিক সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ৫০, যা আগের বছর ছিল ৪৮। তবে বাংলাদেশ ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার আর কোনো দেশ ১০০-এর মধ্যে নেই।

নারী-পুরুষের সমতার শীর্ষ পাঁচে রয়েছে আইসল্যান্ড, নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, সুইডেন ও নিকারাগুয়া। আর সবার শেষে ইয়েমেন।

নারী-পুরুষের সমতায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের পর রয়েছে নেপাল, অবস্থান ১০১তম। শ্রীলঙ্কা ১০২, ভারত ১১২, মালদ্বীপ ১২৩, ভুটান ১৩১। সবার পরে পাকিস্তান, অবস্থান ১৫১।

দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষ অবস্থান ধরে রাখার পাশাপাশি ১৪টি উপসূচকের মধ্যে চারটি উপসূচকে বাংলাদেশ বিশ্বের সব দেশের ওপরে স্থান পেয়েছে। ক্ষেত্রগুলো হলো ছেলে ও মেয়েশিশুদের বিদ্যালয়ে ভর্তি, মাধ্যমিকে ছেলে ও মেয়েদের সমতা, জন্মের সময় ছেলে ও মেয়েশিশুর সংখ্যাগত সমতা এবং সরকারপ্রধান হিসেবে কত সময় ধরে একজন নারী ক্ষমতায় রয়েছেন। ২০১৮ সালেও এই উপসূচকগুলোতে বাংলাদেশ একই অবস্থানে ছিল।

>

বৈশ্বিক লিঙ্গবৈষম্য প্রতিবেদন প্রকাশ। দীর্ঘ সময় ধরে সরকারপ্রধান হিসেবে নারীর ক্ষমতায় থাকার রেকর্ডও বাংলাদেশের।

প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। দীর্ঘ সময় ধরে (গত ৫০ বছরে) সরকারপ্রধান হিসেবে নারী থাকার রেকর্ডও বাংলাদেশের।

এই বৈশ্বিক প্রতিবেদনের বিষয়ে গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী প্রথম আলোকে বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ শীর্ষে থাকলেও আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই। নারী-পুরুষের সমতায় বেশ কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে। যেমন দীর্ঘদিন ধরে সরকারপ্রধান নারী হলেও সংসদে বা দলীয় পর্যায়ে নেতৃত্বে বা সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ নারীদের কম। শিক্ষা, স্বাস্থ্যেও নারীদের অনেক বিষয় অবহেলিত থাকে। তিনি বলেন, যেহেতু বাংলাদেশ নারী-পুরুষের সমতা এই পর্যায়ে এসেছে, সুতরাং কোথায় পিছিয়ে আছে, সেটা চিহ্নিত করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিলে বাংলাদেশ আরও ভালো করবে।