নারীর প্রতি সহিংসতার ক্ষেত্রে ন্যায়বিচারপ্রাপ্তিতে বাধা আছে

নারীর প্রতি সহিংসতার ক্ষেত্রে ন্যায়বিচারপ্রাপ্তিতে এখনো বাধা আছে। নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে নানা আইন আছে। তবে প্রতিকার পেতে গেলে কেমন আইন হওয়া উচিত এবং আইনটি প্রতিকার দিতে পারবে কি না, সেই বিশ্লেষণে অনেক ফাঁক রয়ে গেছে।

গতকাল মঙ্গলবার বেসরকারি সংগঠন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এসব কথা তুলে ধরা হয়। আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস (২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর) পালনের অংশ হিসেবে গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় সংগঠনের কার্যালয়ে আনোয়ারা বেগম, মুনিরা খান মিলনায়তনে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সভায় মহিলা পরিষদ জানায়, ১৩টি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, এ বছরের প্রথম ১০ মাসে ৩ হাজার ১২৮ জন নারী ও মেয়েশিশু ধর্ষণ, হত্যাসহ নানা নির্যাতনের শিকার হয়েছে।

সভায় এক ভুক্তভোগী নারী জানান, একটি বাসায় তিন বছর গৃহকর্মীর কাজ করতে গিয়ে নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হন তিনি।

‘নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ কর, সম–অধিকার নিশ্চিত কর’ স্লোগানে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে শুধু আইনগত পরিবর্তন নয়, দৃষ্টিভঙ্গিরও পরিবর্তন প্রয়োজন। সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. সাবিরুল ইসলাম বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সমন্বিতভাবে কাজ করছে। মাদক ও ইন্টারনেটের অপব্যবহার অপরাধ প্রবণতাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে।

একই বিভাগের আরেক যুগ্ম সচিব আনার কলি মাহবুব বলেন, সরকারের উদ্যোগের কোনো কমতি নেই। তারপরও কিছু সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। সহিংসতা মোকাবিলায় সরকারি-বেসরকারি সংস্থাসহ সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, সমাজের মূল ভিত্তি হচ্ছে আইন। আইন বাস্তবায়নে নানা ত্রুটি আছে।

আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (নারী সহায়তা ও তদন্ত বিভাগ) লায়লা ফেরদৌসী, সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিরা তারান্নুম রাবেয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক তাসলিমা ইয়াসমীন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোহাম্মদ মাকসুদ, সুপ্রিম কোর্টের লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা (অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ) ফারাহ্ মামুন এবং অবস্ট্রেটিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের (ওজিএসবি) সভাপতি অধ্যাপক ফেরদৌসী বেগম।

সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু। কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষে বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংগঠনের আইনজীবী রামলাল রাহা।