নিজামীর সিদ্ধান্তে ছাত্র সংঘ আলবদরে রূপান্তরিত হয়

মতিউর রহমান নিজামী।

জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গতকাল সোমবার দ্বিতীয় দফায় যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। যুক্তি উপস্থাপনকালে রাষ্ট্রপক্ষ বলেছে, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে নিজামীর সিদ্ধান্তে জামায়াতের তৎকালীন ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘ আলবদর বাহিনীতে রূপান্তরিত হয়।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আনোয়ারুল হকের সমন্বয়ে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ গতকাল যুক্তি উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মোহাম্মদ আলী। এ সময় আসামির কাঠগড়ায় নিজামী হাজির ছিলেন।
যুক্তি উপস্থাপনকালে মোহাম্মদ আলী বলেন, একাত্তরে পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগী বাহিনী আলবদরের ওপর নিজামীর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ছিল। তিনি আলবদর বাহিনীর সদস্যদের অপরাধ করতে উসকানি এবং বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করতে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, একাত্তরে অখণ্ড পাকিস্তানের পক্ষে অনেক বুদ্ধিজীবী ছিলেন, যাঁদের আলবদররা হত্যা করেনি। বরং সেই সব বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করা হয়েছে, যাঁরা স্বাধীন বাংলাদেশের পক্ষে ছিলেন। পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে পরামর্শ করে বুদ্ধিজীবীদের হত্যার তালিকা তৈরি করা হয়।
গতকাল প্রায় আড়াই ঘণ্টা যুক্তি দেন মোহাম্মদ আলী। এ সময় এজলাসে রাষ্ট্রপক্ষের ১৩-১৪ জন কৌঁসুলি উপস্থিত ছিলেন।
নিজামীর বিরুদ্ধে মামলাটির কার্যক্রম গত বছরের নভেম্বরে শেষ হয়। মামলাটি রায়ের অপেক্ষায় থাকা অবস্থায় ৩১ ডিসেম্বর এই ট্রাইব্যুনালের তৎকালীন চেয়ারম্যান বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীর অবসরে যান। পরে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমকে চেয়ারম্যান করে ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনাল এই মামলায় দ্বিতীয় দফায় যুক্তি উপস্থাপনের আদেশ দেন। ওই আদেশ অনুসারে গতকাল থেকে যুক্তি উপস্থাপন শুরু হয়েছে।
গতকাল রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন অসমাপ্ত অবস্থায় এই মামলার কার্যক্রম আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে।