নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা দ্রুত বাস্তবায়ন অসম্ভব

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে গত বৃহস্পতিবার কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ২০ আগস্টের মধ্যে রাজধানীতে অটো সিগন্যাল ও রিমোট কনট্রোলড অটোমেটিক বৈদ্যুতিক সিগন্যালিং পদ্ধতি চালু করতে হবে। বিআরটিএ ও ঢাকা মহানগর পুলিশকে এ নির্দেশনা দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।

এ সময়সীমার মধ্যে নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি—সেই বিষয়ে প্রথম আলোর ফেসবুক পেজে পাঠকের মতামত চাওয়া হয়। শতাধিক পাঠক তাঁদের সুচিন্তিত মতামত দিয়েছেন। প্রত্যেকেই নানা ধরনের প্রস্তাব দেওয়ার পাশাপাশি এটাও বলেছেন, নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতে জনগণের সচেতনতার বিকল্প নেই। ট্রাফিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে সবাইকে।

জাকির হোসেইন লিখেছেন, ‘বিআরটিএ, ট্রাফিক পুলিশ, সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ তৎপর হলে আস্তে আস্তে ফল পাওয়া যাবে। আর কেউ যদি গাফিলতি করে, তা হলে সরকার তাদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করুক। কাজে অবহেলাকারী দু-এক জন চাকরি খোয়ালেই বাকিরা সতর্ক হবে বলে আমি মনে করি।’

আর এ রাসেল লিখেছেন, ‘ভিন্ন ভিন্ন বাসের জন্য ভিন্ন ভিন্ন বাস স্টপ নির্ধারণ করতে হবে। প্রত্যেক পয়েন্টে ক্যামেরা বসাতে হবে। টোল পরিশোধের জন্য সব যানবাহনে বার কোড ব্যবস্থা চালু করতে হবে, যাতে চলন্ত অবস্থায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে বারকোড স্ক্যান হয়ে টোল পরিশোধ হয়ে যায়। তবে সবার আগে জনগণকে সভ্য হতে হবে।’

প্রতি সিগন্যালে ক্যামেরা চান মোহাম্মদ হান্নানও। তিনি লিখেছেন, ‘প্রতিটি সিগন্যালে সিসিটিভি ক্যামেরা রাখা যেতে পারে। যারা অমান্য করবে, ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর যারা সিগন্যাল মানবে না, সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে তাঁদের ড্রাইভিং লাইসেন্স পাঁচ বছরের জন্য বাতিল ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে।’

মিজানুর রহমান, সিরাজুল ইসলাম, আলিনাসহ অনেকেই সিসিটিভি ক্যামেরার পক্ষে মত দিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, ট্রাফিক ব্যবস্থা তত্ত্বাবধানের জন্য এটি খুব প্রয়োজন।

মো. জুবায়ের আহমেদ মনে করেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য প্রশাসন থেকে ১০০ কর্মকর্তা বাছাই করতে হবে। এরপর তাঁদের নিয়ে একটি দল গঠন করতে হবে, যা মাঠপর্যায়ে কাজ করবে। তিনি লিখেছেন, নিরাপদ সড়ক তখনই নিশ্চিত করা যাবে।

এইচ. এম. ইমরানের মতে, যে কোনো ট্রাফিক সিগনাল অমান্যকারীদের তাৎক্ষণিক জরিমানা করতে হবে। ব্যস্ত মোড়গুলোতে পদচারী সেতু রাখতে হবে। থাকতে হবে ইউ টার্নের আলাদা ব্যবস্থা।

মুক্তাদির রহমানের অভিযোগ, বর্তমানে রাজধানী ঢাকার সবখানেই বাস থামে। তাই কোনটি বাস দাঁড়ানোর জন্য নির্ধারিত, আর কোনটি নয়—তা বোঝা কঠিন। তাঁর প্রস্তাব, সবখানের জেব্রা ক্রসিংগুলো রং করে দিতে হবে। জেব্রা ক্রসিং ছাড়া কেউ রাস্তা পারাপার করতে যাতে না পারে, সে জন্য প্রচারণা চালিয়ে যেতে হবে। জেব্রা ক্রসিংয়ের ওপর গাড়ি রাখা যাবে না।

ফারুক চৌধুরী লিখেছেন, লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে অনিয়ম, দুর্নীতি, দালালদের দৌরাত্ম্য দূর করে বিআরটিএ-কে আরও কঠোর হতে হবে। সবার ক্ষেত্রে আইনের যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে পুলিশকে। সড়ক পর্যবেক্ষণের জন্য মহাসড়কগুলোতে রাডার মনিটরিং ব্যবস্থা চালুর প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।

তবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাম্প্রতিক নির্দেশনা ২০ আগস্টের মধ্যে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না বলে মনে করেন এটিএম রুবায়েত আলী। তাঁর মতে, কাজগুলো করতে অনেকটা সময় লাগবে। রাফিয়া আক্তারও মনে করেন ২০ আগস্টের মধ্যে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।