নির্দিষ্ট সময়ের পর লাইভ, বিব্রত চমস্কি চলে গেলেন

ফেসবুক লাইভে নোয়াম চমস্কি (ডানে)।
ছবি: সংগৃহীত

প্রখ্যাত মার্কিন ভাষাতাত্ত্বিক ও দার্শনিক অধ্যাপক নোয়াম চমস্কি বাংলাদেশ বিষয়ে এ দেশের তরুণ তানভিরুল মিরাজ রিপনের সঙ্গে ফেসবুক লাইভে এসে আলাপ করবেন, এমন তথ্য গত কয়েক দিন ধরে প্রচারিত হয়েছিল দেশের গণমাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তবে হতাশই হতে হলো নেট নাগরিকদের। নির্ধারিত সময়ে শুরু করার জন্য চমস্কি বারবার তাগাদা দিলেও আয়োজক তরুণ সেটি বুঝতে না পেরে এক ঘণ্টা পর লাইভ শুরু করেন। এই সময় বিব্রত চমস্কি সময়সূচি ঠিক না রাখায় লাইভ চালিয়ে যেতে অস্বীকৃতি জানান। এরপরও ওই তরুণ চমস্কিকে জোর করে প্রশ্নপর্ব চালিয়ে যান। প্রায় পাঁচ মিনিটের এই আলাপচারিতায় নোয়াম চমস্কি বেশ কয়েকবার তার অসুবিধার কথা জানিয়ে লাইভ শেষ করেন।

মিরাজ রিপন পরিচালিত ‘টি কাপ’ ফেসবুক পেজের আয়োজনে এই লাইভ প্রচারিত হওয়ার কথা ছিল আজ বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের স্থানীয় সময় রাত আটটায়। যুক্তরাষ্ট্রের সময়ের ব্যবধান বুঝতে না পারায় আয়োজক মিরাজ রিপন শুরু করতেই এক ঘণ্টা দেরি করেন। এই সময় চমস্কি তাঁকে অপেক্ষা করার কথা জানিয়ে মেইল করলেও তিনি সেটা বুঝতে পারেননি। বরং সেই মেইল শেয়ার করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

আলাপের শুরুতে চমস্কিকে দেরির কথা তুলতে দেখা গেলেও বিষয়টির কোনো ব্যাখ্যাই দেননি মিরাজ রিপন। তিনি প্রশ্ন করে গেছেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই বিরূপ মন্তব্য করেছেন। চমস্কির মতো পণ্ডিত ব্যক্তির সঙ্গে যথাযথ আচরণ করা হয়নি বলেও মত দিয়েছেন অনেকে। এ ছাড়া লাইভ অনুষ্ঠানে একটি ফ্যাশন হাউসের বিজ্ঞাপন প্রচারের যথার্থতা নিয়েও নেট নাগরিকেরা প্রশ্ন তুলেছেন।

প্রায় পাঁচ মিনিটের এই লাইভে মিরাজ রিপন সাকল্যে তিনটি প্রশ্ন করতে পেরেছেন নোয়াম চমস্কিকে। এর মধ্যে দুটি প্রশ্ন ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে ও অপর প্রশ্নটি রোহিঙ্গা শরণার্থী বিষয়ক। প্রতিবারই সময়ের কথা মনে করিয়ে দিয়ে আলাপ চালিয়ে গেছেন চমস্কি। পরবর্তী সময়ে আবারও সুবিধাজনক সময়ে আলাপ হতে পারে বলে বিনয়ের সঙ্গে জানান তিনি।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা প্রসঙ্গে চমস্কিকে বলতে শোনা যায়, হেনরি কিসিঞ্জার বেইজিং এ একটি গোপন সফরের পরিকল্পনা করেছিলেন। তিনি সেই সফরকে দেখতে চাইছিলেন নিজের বড় সাফল্য হিসেবে। আর এ জন্য পাকিস্তানের ওপর নির্ভর করতে হয় তাঁকে। এ কারণে তাদের অপরাধকেও তিনি মেনে নেন। ভারতকে অবরোধ করতে চেয়েছেন। নৌবহর পাঠিয়েছেন।

এদিকে বাংলাদেশে নোয়াম চমস্কিকে প্রথম লাইভে এনেছেন রিপনের এমন প্রচারণা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন নেট নাগরিকেরা। প্রখ্যাত আলোকচিত্রী শহীদুল আলম এ নিয়ে তাঁর ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, ২০০৯ সালে ছবি মেলার আয়োজনে ঢাকার গ্যোটে ইনস্টিটিউটে কথাসাহিত্যিক মহশ্বেতা দেবীর সঙ্গে অনলাইনে যুক্ত হয়ে আলাপ করেছিলেন নোয়াম চমস্কি।

প্রথমে স্বীকার করতে না চাইলেও পরে সমালোচনার মুখে পরে ক্ষমা চান মিরাজ রিপন। তিনি বলেন, ‘প্রফেসর নোয়াম চমস্কির সঙ্গে কথা হয়েছে, তিনি আবারও আমার সাক্ষাৎকারে আসবেন। তাঁর কাছেও আমি দুঃখ প্রকাশ করেছি। আমি নতুন শোর ভালো করে প্রস্তুতি নেব। আপনারা আমাকে সহযোগিতা করবেন আগামী শোর জন্য।’