নির্বাচনের সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য অপশক্তি এগুলো করে: ইসি সচিব

নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সচিব মো. আলমগীর

নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সচিব মো. আলমগীর বলেছেন, আচরণবিধি অনুযায়ী বিজয় মিছিল বের করা যাবে না। কিন্তু বিজয় মিছিল বের করা হয়েছে এবং দুষ্কৃতকারীরা একজনকে হত্যা করেছে। নির্বাচনের সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য অপশক্তি এগুলো করে।

ইসি সচিব আজ রোববার সংবাদ সম্মেলনে দ্বিতীয় পর্যায়ের পৌর নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। নির্বাচন ভবনে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, খসড়া ভোটার তালিকা অনুযায়ী এখন দেশে মোট ভোটারসংখ্যা ১১ কোটি ১২ লাখ ৮৪ হাজার ১৫৮।

দ্বিতীয় পর্যায়ে গতকাল শনিবার দেশের ৬০টি পৌরসভায় নির্বাচন হয়। এই নির্বাচনে দুই জায়গায় সংঘর্ষের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। আচরণবিধি অনুযায়ী বিজয় মিছিল বের করা যাবে না।

দুঃখজনক হলেও সত্য, বিজয় মিছিল বের করা হয়েছিল এবং দুষ্কৃতকারীরা একজনকে হত্যা করেছে। মিছিল করা ঠিক হয়নি। আর যারা হত্যা করেছে, এটা জঘন্য অপরাধ করেছে। এর কোনোটাই কাম্য নয়। নির্বাচনের সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য অপশক্তি এগুলো করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে পরিস্থিতি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে বলা হয়েছে, যাতে নির্বাচন–পরবর্তী বিজয় মিছিল না হয়।’

ইসি সচিব বলেন, ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। রিপোর্ট আসার পর বলা যাবে কী কারণে এ ঘটনা ঘটল। কারও কোনো অবহেলা আছে কি না।

এক প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, ‘মিছিল যাঁরা বের করেছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনে করেননি। অন্য জায়গায় করেছেন। সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ ছিলেন না। আমার নিরাপত্তা আগে আমাকে নিশ্চিত করতে হবে। তারপর না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সহায়তা করবে। আমি যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে না জানিয়ে রাত একটার সময় যেখানে ছিনতাই হয় সেখানে ঘুরাফেরা করি টাকাপয়সা নিয়ে, তাহলে তো ছিনতাই করবেই। এখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কীভাবে কী করবে?’
আরেক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, নিরাপত্তার দায়িত্ব নাগরিকের নিজেরও। প্রথম দায়িত্ব নিজের, শঙ্কা বোধ করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানাতে হবে। এরপর তারা কিছু না করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দোষ দেওয়া যায়।

চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ ২ মার্চ

খসড়া ভোটার তালিকা অনুযায়ী এখন দেশে মোট ভোটারসংখ্যা ১১ কোটি ১২ লাখ ৮৪ হাজার ১৫৮। ২০২০ সালে ১৪ লাখ ৬৫ হাজার ৪৬ জন নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছেন। তবে এ সময়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের তথ্য বাদ দেওয়া হয়নি।
মৃতদের নাম কাটা ও হালনাগাদ কার্যক্রমের বাইরে বছরের বিভিন্ন সময়ে যাঁরা ভোটার হয়েছেন, তাঁদের তথ্য যুক্ত করে দাবি–আপত্তি নিষ্পত্তি শেষে আগামী ২ মার্চ চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে।

প্রতিবছর একটি নির্দিষ্ট সময়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়। এবার করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে সেটি হয়নি। ২০১৯ সালে ৬৫ লাখ নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছিলেন। সে অনুপাতে এবার নতুন ভোটার অনেক কম।

বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য না নেওয়ায় আইনের লঙ্ঘন হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, এ ক্ষেত্রে আইনের লঙ্ঘন হয়নি। সারা বছরই উপযুক্ত ব্যক্তি ভোটার হতে পারেন। আর ২০১৯ সালে ১৫ ঊর্ধ্ব নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল।

তাঁদের মধ্যে যাঁদের বয়স ১৮ পূর্ণ হয়েছে, তাঁদের ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তা ছাড়া এখন জনসংখ্যার প্রবৃদ্ধিও কম। তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় নিজেদের চ্যানেলে মৃত ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহ করবে। খসড়া তালিকার বিষয়ে দাবি–আপত্তি থাকলে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে আবেদন করতে হবে। ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দাবি–আপত্তি নিষ্পত্তি করা হবে। ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।

খসড়া ভোটার তালিকা অনুযায়ী এখন মোট ভোটারের মধ্যে ৫ কোটি ৬৩ লাখ ৮৪ হাজার ৫১৩ জন পুরুষ। ৫ কোটি ৪৮ লাখ ৯৯ হাজার ২৭০ জন নারী। আর ৩৭৫ জন হিজড়া।