নীলফামারীতে গৃহবধূ হত্যা মামলায় বাদীসহ দুজনের যাবজ্জীবন

নীলফামারীতে গৃহবধূ শাহিনা খাতুন (২৭) হত্যা মামলার প্রথম বাদী জাফর আলীসহ (৩৮) দুজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডসহ প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা, আনাদায়ে আরও তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নীলফামারীর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মাহবুবুল আলম এ রায় দেন।
সাজাপ্রাপ্ত জাফর আলী জেলার ডিমলা উপজেলার উত্তর খড়িবাড়ি গ্রামের আবদুল মালেকের ছেলে। অপর সাজাপ্রাপ্ত হলেন একই গ্রামের ধলু শেখের ছেলে বাহাজ আলী (৩৫)। তাঁরা দুজনই হত্যার শিকার ওই গৃহবধূর চাচাশ্বশুরের ছেলে। তাঁরা বর্তমানে কারাকারে আছেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০০৬ সালে উত্তর খড়িবাড়ি গ্রামের শাপলা যুবসংঘ নামের একটি সঞ্চয় সমিতির অর্থ সম্পাদক ছিলেন হত্যাকাণ্ডের শিকার ওই নারীর স্বামী ওই গ্রামের রফিকুল ইসলাম। সমিতির সাড়ে ১৪ হাজার টাকা গচ্ছিত ছিল তাঁর কাছে।
রফিকুলের চাচাতো ভাই জাফর আলী ও বাহাজ আলী ওই বছরের ২৯ জুলাই রাত দুইটার দিকে রফিকুলের টেবিলের ড্রয়ারে রাখা সমিতির গচ্ছিত টাকা নিতে তাঁর ঘরে ঢোকেন। এ সময় রফিকুলের মুখ চেপে ধরে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকাটা নেওয়ার সময় শব্দে ঘুম ভেঙে যায় রফিকুলের স্ত্রী শাহিনার। তিনি আসামিদের চিনে ফেলে নাম ধরে চিৎকার করতে থাকেন ও বাধা দেন। এ সময় আসামিরা শাহিনাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেন।
এ ঘটনার পর রফিকুলকে মামলা না করার জন্য হুমকি দেন হত্যাকারীরা। তবে পরদিন ৩০ জুলাই ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রফিকুলের চাচাতো ভাই হিসেবে জাফর আলী অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় মামলা করেন।
মামলার তদন্তে মূল ঘটনা বেরিয়ে এলে তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিমলা থানার উপপরিদর্শক মিজানুর রহমান বাদী হয়ে আগের বাদী জাফর আলীসহ বাহাজ আলীকে আসামি করে আরেকটি হত্যা মামলা করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। এর পরপরই জাফর ও বাহাজকে আসামি গ্রেপ্তার করা হয়।
দীর্ঘ শুনানির পর গৃহবধূকে হত্যার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় গতকাল দুপুরে আদালতের বিচারক আসামিদের বিরুদ্ধে ওই রায় দেন।