নোয়াখালীতে ডায়রিয়ায় আরও ৬৭ জন হাসপাতালে ভর্তি

নোয়াখালীতে ডায়রিয়ার প্রকোপ কমছে না। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় নতুন করে আরও ৬৭ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে হাতিয়ার ভাসানচরের ১২ জন রোহিঙ্গা রয়েছেন। বুধবার জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়। তবে এ সময়ে জেলায় ডায়রিয়ায় কারও মৃত্যু হয়নি।

সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে নোয়াখালীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ২২ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। ৩০ জন ভর্তি হয়েছেন জেলার সুবর্ণচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। তিনজন ভর্তি হয়েছেন সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এ ছাড়া হাতিয়ার ভাসানচরে ২০ শয্যার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১২ জন রোহিঙ্গা।

সূত্র জানায়, গত সাত দিনে জেলায় ১ হাজার ১৮৪ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৪৯৬ জনই আক্রান্ত হয়েছেন সুবর্ণচর উপজেলায়। বাকিদের মধ্যে ৩৪৫ জন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ভাসানচরে রোহিঙ্গা আক্রান্ত হয়েছেন ৯৯ জন। এ ছাড়া বেগমগঞ্জে ১০ জন, সোনাইমুড়ীতে ৫১ জন, চাটখিলে ৩৯ জন, সেনবাগে ৬৫ জন, কোম্পানীগঞ্জে ১৫ জন, হাতিয়ায় ৫৯ জন ও কবিরহাটে ৫ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। এক সপ্তাহে ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত একজনের মৃত্যু হয়েছে।

জেলার ডায়রিয়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য-শিক্ষা কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। উপদ্রুত এলাকাগুলোতে স্বাস্থ্য বিভাগের জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য সহকারীরা ওয়ার্ডভিত্তিক উঠান বৈঠকের মাধ্যমে মানুষজনকে ডায়রিয়ার প্রকোপ থেকে রক্ষা পাওয়ার বিষয়ে সচেতন করার চেষ্টা করছেন। এ ছাড়া জেলার হাতিয়ার ভাসানচরে বসবাসকারী রোহিঙ্গা নাগরিকদেরও ডায়রিয়ার বিষয়ে সচেতনতামূলক স্বাস্থ্য-শিক্ষা বৈঠক করা হয়েছে।

সিভিল সার্জন মাসুম ইফতেখার প্রথম আলোকে বলেন, ভাসানচরসহ জেলার ডায়রিয়ায় আক্রান্ত এলাকাগুলোতে তাঁর কার্যালয়ের প্রতিনিধি, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য সহকারীরা ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য-শিক্ষা বিষয়ে সচেতনতামূলক উঠান বৈঠক ও প্রচারপত্র বিলি করা শুরু করেছেন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য বিভাগ ও জনস্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে উপদ্রুত এলাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি বিশুদ্ধকরণ বড়ি বিতরণ করা হয়েছে। তিনি জানান, স্বাস্থ্য বিভাগের নানা পদক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে জেলার ডায়রিয়া পরিস্থিতি বর্তমানে অনেকটাই উন্নতি হয়েছে।

প্রসঙ্গত টানা অনাবৃষ্টি, খরা ও ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির সংকটে জেলার সুবর্ণচর, হাতিয়া, কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাটে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দেয়। এতে গত প্রায় পৌনে তিন মাসে অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়। আর আক্রান্ত হয় ছয় হাজারের বেশি। মৃত ও আক্রান্তদের মধ্যে শিশুর সংখ্যা বেশি।