নয়াদিল্লি ও কলকাতায় বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উদ্‌যাপিত

ভারতের নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনে আয়োজিত স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উদ্‌যাপনের অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়
ছবি: সংগৃহীত

১৯৭২ সালে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দেশে ফেরার পথে নয়াদিল্লিতে তাঁর সংক্ষিপ্ত যাত্রাবিরতির উদ্দেশ্য ছিল ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা। সেখান থেকেই দুই দেশের মধ্যে অনন্য সম্পর্কের শুরু। আজ রোববার ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উদ্‌যাপন উপলক্ষে এসব কথা বলেন ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহম্মদ ইমরান।

মুহম্মদ ইমরান বলেন, সেদিন নয়াদিল্লিতে হাজারো মানুষের জমায়েতে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও রাষ্ট্রপতি ভি ভি গিরির কাছে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের সাড়ে ৭ কোটি মানুষের হয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছিলেন। সেই থেকে যে সম্পর্কের শুরু, আজ তা আরও বিকশিত হয়েছে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।

বাংলাদেশ হাইকমিশনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে নতুন প্রজন্মের উদ্দেশে মুহম্মদ ইমরান বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবন ও তাঁর সংগ্রাম সম্পর্কে পরিচিত হওয়া জরুরি। তাঁকে জানলে ও তাঁর সংগ্রামের সঙ্গে পরিচিত হলে বঙ্গবন্ধুর সাধের সোনার বাংলা গড়ে তোলার স্বপ্ন সার্থক হবে।

কলকাতায় বাংলাদেশ উপহাইকমিশনেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসটি পালিত হয়। এ উপলক্ষে উপহাইকমিশনের বঙ্গবন্ধু কর্নারে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। বিকেলে কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ উপহাইকমিশনার তৌফিক হাসানের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ গ্যালারিতে আলোচনা সভা হয়। সভায় অংশ নেন আকাশবাণীর সাবেক আঞ্চলিক অধিকর্তা ও বিশিষ্ট কবি পঙ্কজ সাহা এবং সাংবাদিক বিকচ চৌধুরী।

আলোচনা সভায় আলোচকেরা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদান কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে বলেন, এই ক্ষণজন্মা মহাপুরুষের আগমনই বাঙালিদের জন্য বিশ্বের বুকে একটি স্বাধীন দেশের জন্ম দিয়েছে।

নয়াদিল্লি ও কলকাতার অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ওপর একটি তথ্যচিত্র দেখানো হয়। পাকিস্তানের জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তাঁর লন্ডন যাওয়া, সেখানে তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথের সঙ্গে সাক্ষাৎকার, সংবাদ সম্মেলন, দিল্লি আসা, সংবর্ধনা, কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন, ঢাকা অবতরণ, রেসকোর্স ময়দানের ঐতিহাসিক সমাবেশে আবেগাপ্লুত বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ইত্যাদি বিষয় তথ্যচিত্রটিকে সমৃদ্ধ করেছে।

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার ফরিদ হোসেন ঢাকায় ১০ জানুয়ারির ওই সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন। স্মৃতিচারণা করে তিনি বলেন, প্রকৃত জনসমুদ্রের স্বরূপ কেমন, সেদিন তা প্রথম অনুভূত হয়েছিল।

নয়াদিল্লিতে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উদ্‌যাপিত হয় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মধ্য দিয়ে। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতিতে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাণী পড়া হয়।