পদ্মায় স্পিডবোট দুর্ঘটনা, মিলল নিখোঁজ শিশু ও ছাত্রের লাশ

ছবিটি প্রতীকী
ছবিটি প্রতীকী

মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে স্পিডবোট দুর্ঘটনায় নিখোঁজ শিশুসহ দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার সকালে পদ্মা নদীর চর থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩।

উদ্ধার হওয়া শিশুর নাম আমির হামজা (৬)। সে শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের খাড়াকান্দি গ্রামের ইমরান ফরাজির ছেলে। অপরজন হলেন মো. মিরাজ হোসেন (২০)। তিনি বরিশালের বানরীপাড়া উপজেলার উদয়কাঠি এলাকার রহমান খন্দকারের ছেলে এবং ঢাকার সরকারি কবি নজরুল কলেজের সম্মান প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।

বিআইডব্লিউটিসি কাঁঠালবাড়ি ঘাট ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে শিমুলিয়া ঘাট থেকে একটি স্পিডবোট ২০ জন যাত্রী নিয়ে কাঁঠালবাড়ি স্পিডবোট ঘাটে যাচ্ছিল। কাঁঠালবাড়ি ঘাটের কাছাকাছি এলে স্পিডবোটটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি ট্রলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে উল্টে যায়। এ সময় স্পিডবোটে থাকা যাত্রীরা পদ্মায় পড়ে যায়। এতে একজন নিহত ও শিশুসহ দুজন নিখোঁজ হয়। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে নিখোঁজ দুজনকে উদ্ধারে কাজ করছে বিআইডব্লিউটিএর ডুবুরি দল ও ফায়ার সার্ভিস। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের কোনো সন্ধান মেলেনি। পরে আজ সকাল ১০টার দিকে পদ্মার চরে ভেসে ওঠে নিখোঁজ শিশু আমির হামজার লাশ। এর কিছুক্ষণ পরই আরেকটি চরে ভেসে ওঠে কলেজছাত্র মিরাজ হোসেনের লাশ। পরে পুলিশ লাশ দুটি মর্গে পাঠায়।

নিহত মিরাজের মামা মাঈনুদ্দিন সরদার বলেন, স্পিডবোট দুর্ঘটনার পরেই তাঁরা কাঁঠালবাড়ি ঘাট এলাকায় অবস্থান করছেন। শুক্রবার সারা দিন খুঁজেও মিরাজের সন্ধান পাননি। কলেজ থেকে ছুটি পেয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন মিরাজ।
মাঈনুদ্দিন আরও বলেন, ‘এর আগের বছর মিরাজের বড় ভাই বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারা যায়। আমার বোনের দুইটা মাত্র ছেলে, এক বছরের মধ্যে দুই ছেলেকে হারিয়ে আমার বোন এখন বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।’

উদ্ধার হওয়া শিশু আমির হামজার মামা কামরুল হোসেন বলেন, ‘আমিরের মৃত্যু আমরা কেউ মানতে পারছি না।’

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন মোল্লা বলেন, স্পিডবোট দুর্ঘটনায় এক শিশুসহ তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তাঁরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন, এ ঘটনায় আর কেউ নিখোঁজ নেই। তবে কেউ যদি এ ঘটনায় নিখোঁজ আছে বলে তথ্য দেয়, তাহলে তাঁরা আবারও অভিযান চালাবেন।

ওসি জাকির আরও বলেন, এ দুর্ঘটনার পর তাঁরা অবৈধভাবে স্পিডবোট চালানোর দায়ে ১০ জনকে আটক করেছেন। পরে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা শেষে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে দুর্ঘটনার শিকার স্পিডবোটের মালিক এ ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন। তাঁকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।