পশুর সরবরাহ পর্যাপ্ত, বিপদ বাড়তি ভাড়া

প্রথম আলো ফাইল ছবি
প্রথম আলো ফাইল ছবি

রাজধানীসহ দেশের বেশির ভাগ গরুর হাট জমে উঠেছে। এবার কোরবানির জন্য গবাদিপশুর জোগানও ভালো। সরকারি হিসাবে, ৫০ লাখ গরু ও ৭০ লাখ ছাগল কোরবানির জন্য প্রস্তুত আছে। কিন্তু খামার ও স্থানীয় হাট থেকে রাজধানীতে পশু আনতে গিয়ে বিপদে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। যানজটের সঙ্গে যোগ হয়েছে ট্রাকের বাড়তি ভাড়া।

বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশন বলছে, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গা জেলা থেকে কোরবানির হাটে সবচেয়ে বেশি গরু আসে। এসব জেলা থেকে একটি পাঁচ টনের ট্রাকে ১৫ থেকে ১৬টি ছোট ও মাঝারি গরু আনা হয়। এত দিন ওই ট্রাকের ভাড়া ছিল ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। তিন দিন ধরে ভাড়া বেড়ে হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। ময়মনসিংহ ও গাজীপুর থেকে ছোট কাভার্ড ভ্যানের ভাড়া ছিল ২ হাজার টাকা। সেটা বেড়ে ৬ হাজার টাকা হয়েছে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের পণ্য পরিবহন বিভাগের আহ্বায়ক আবদুর রহিম বকশ প্রথম আলোকে বলেন, কোথাও পরিবহন ভাড়া বাড়েনি। যারা এগুলো বলছে, তারা ভুল বলছে।

রাজধানীতে গবাদিপশু আসার অন্যতম পথ হচ্ছে মাওয়া ও দৌলতদিয়া ফেরিঘাট। ডুবোচর ও নাব্যতা সংকটের কারণে মাওয়া ঘাটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সব ট্রাক গিয়ে জড়ো হচ্ছে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে। ফলে সেখানে দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট।

এই পরিস্থিতিতে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে গবাদিপশু পরিবহনে সহযোগিতা করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. হিরেশ রঞ্জন ভৌমিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘গবাদিপশু পরিবহনের বিষয়টি সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দেখভাল করে। আমরা তাদের শীর্ষ কর্মকর্তাদের গবাদিপশু পরিবহনে সহযোগিতা দিতে অনুরোধ করেছি।’

বেশ কয়েকজন গরু ব্যবসায়ী প্রথম আলোকে বলেন, বৈধ কাগজপত্র নেই এমন ট্রাকগুলোর বেশির ভাগ মানিকগঞ্জ পর্যন্ত এসে গরু নামিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। সেখান থেকে স্থানীয় দালাল ও ট্রাকমালিকেরা গরুপ্রতি দেড় থেকে দুই হাজার টাকা নিচ্ছেন রাজধানীর বিভিন্ন হাটে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। তা-ও অনেকে গরু আনার ওই ট্রাক পাচ্ছেন না।

সম্প্রতি নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনের পর সড়কে অবৈধ যানবাহন ও চালকের বিষয়ে সরকার কড়াকড়ি আরোপ করে। এতে রাস্তায় ট্রাকের সংখ্যা কমে আসে।

বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শাহ ইমরান প্রথম আলোকে বলেন, এমনিতেই তীব্র গরম ও যানজটের কারণে গরু-ছাগল পরিবহনের সমস্যা হচ্ছে। এর সঙ্গে হঠাৎ করে ভাড়া বেড়েছে। ফলে গবাদিপশু ব্যবসায়ী ও খামারিরা বিপদে পড়েছেন। গবাদিপশুর সরবরাহ পর্যাপ্ত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভাড়া নিয়ন্ত্রণে সরকার পদক্ষেপ নিলে এবং রাজধানীতে পশু সময়মতো পৌঁছালে কোনো সমস্যা হবে না।