পাঁচ বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিশিল্পে লোকসান প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা

গত পাঁচ বছরে ৩ হাজার ৯৩৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছে চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি)। ক্রমাগত লোকসানের পেছনে আটটি কারণ চিহ্নিত করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত এ প্রতিষ্ঠান।

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত শিল্প মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে উপস্থাপন করা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। প্রতিবেদনে বিএসএফআইসি জানিয়েছে, ২০১৫–১৬ অর্থবছর থেকে ২০১৯–২০ অর্থবছর পর্যন্ত ৫ বছরে প্রতিষ্ঠানটির আয় হয়েছে ৩ হাজার ১৪৭ কোটি ২২ লাখ টাকা। এ সময়ে ব্যয় হয়েছে ৭ হাজার ৮৬ কোটি ২ লাখ টাকা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চিনির উৎপাদন খরচের চেয়ে বিক্রয়মূল্য কম হওয়া, বিশ্বব্যাপী চিনির দাম কমে যাওয়া, পুঞ্জীভূত ঋণ ও সুদের পরিমাণ অনেক বেশি হওয়া, পোকা ও রোগবালাই প্রতিরোধ সক্ষম আখের জাত উদ্ভাবন না হওয়া, কারখানাগুলো দীর্ঘদিনের পুরোনো ও জরাজীর্ণ, বেসরকারি খাতে আমদানি করা ‘র’ সুগার থেকে রিফাইন্ড সুগার উৎপাদন করে কম মূল্যে বাজারজাত করার ফলে বিএসএফআইসির চিনি অবিক্রীত থাকা, আখের মূল্য ও চিনির মূল্যের মধ্যে সামঞ্জস্য না থাকার কারণে ক্রমাগত লোকসানের মুখে ব্যাংকঋণ নিয়ে পরিচালনা করার কারণে ঋণের সুদ বৃদ্ধির পাশাপাশি উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া এবং চিনি সংগ্রহের হার কমে যাওয়ায় লোকসান হচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের বর্তমানে দায়দেনার পরিমাণ ৮ হাজার ৮৪৮ কোটি ৩২ লাখ টাকা।

বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে বন্ধ চিনিকলগুলো চালু করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া, চিনিশিল্পে লোকসানের মূল কারণ উদ্‌ঘাটন করে অপ্রয়োজনীয় জনবল ছাঁটাই এবং অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীর মতো ট্রেড ইউনিয়নের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরও যথানিয়মে কাজে উদ্বুদ্ধ করতে কমিটি সুপারিশ করে।

কমিটির সভাপতি আমির হোসেন আমুর সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, এ কে এম ফজলুল হক, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন, মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান ও কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ এবং শফিউল ইসলাম বৈঠকে অংশ নেন।