পাঁচজন মন্ত্রী পেয়ে আনন্দিত মানুষ

>

টিপু মুনশি বাণিজ্য, নুরুল ইসলাম রেলপথ ও নুরুজ্জামান আহমেদ সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন।

নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় রংপুর বিভাগ থেকে পাঁচজন স্থান পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রংপুরের টিপু মুনশি বাণিজ্য, পঞ্চগড়ের নুরুল ইসলাম রেলপথ ও লালমনিরহাটের নুরুজ্জামান আহমেদ সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন। এ ছাড়া দিনাজপুরের খালিদ মাহমুদ চৌধুরী নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং কুড়িগ্রামের মো. জাকির হোসেনকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে। এসব মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী পেয়ে পাঁচ জেলার মানুষ আনন্দিত। আওয়ামী লীগের কর্মী–সমর্থকেরা আনন্দ মিছিল এবং মিষ্টি বিতরণ করেছেন।

রংপুর: সাংসদ টিপু মুনশিকে বাণিজ্যমন্ত্রী করায় রংপুরের জনগণ আনন্দিত। তিনি রংপুর-৪ আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন। তিনি পরপর তিনবার এলাকা থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়ে হ্যাটট্রিক করেছেন। তাঁকে বাণিজ্যমন্ত্রী করার ঘোষণা বিভিন্ন অনলাইন, টেলিভিশনে প্রচার পাওয়ার পর মন্ত্রীর বিষয়টি রংপুরের সর্বত্র আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে। সবার মুখে ছিল হাসির ঝিলিক। এবার রংপুর থেকে পূর্ণ মন্ত্রী হওয়ায় মানুষজন শুধু খুশিই নন, আনন্দ-উল্লাসে উদ্ভাসিত।

রংপুরের সাংস্কৃতিক অঙ্গন টাউন হল চত্বর ও পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে লোকজন জটলা করে আড্ডা মারছিলেন। সেখানে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানও চলছিল। কথা হয় নানা শ্রেণি-পেশার সুধীজনের সঙ্গে। একটি বেসরকারি কলেজের শিক্ষক মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এবার আমরা পূর্ণ মন্ত্রী পেয়েছি। আনন্দ লাগারই কথা।’

সন্ধ্যায় পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে ছোট ছোট জটলা। সেখানে গিয়ে অনেকের কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে সবার ভাষ্য, ‘আমরা রংপুরবাসী আনন্দিত।’ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তুহিন ওয়াদুদ বলেন, মন্ত্রী টিপু মুনশির মাধ্যমে এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পসহ অন্যান্য কারখানা গড়ে উঠবে।

পঞ্চগড়: স্বাধীতার পর পঞ্চগড় থেকে আওয়ামী লীগের প্রথম মন্ত্রী হলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পঞ্চগড়-২ আসনে পরপর তিনবার নির্বাচিত সাংসদ নূরুল ইসলাম। গতকাল রোববার বিকেলে নূরুল ইসলামের মন্ত্রী হওয়ার খবরে উৎফুল্ল হয়ে ওঠেন জেলাবাসী। সন্ধ্যায় শহরে আনন্দ মিছিল করেন জেলা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ–সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। মিছিল শেষে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নেতা-কর্মীরা একে অপরকে মিষ্টি খাইয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।

পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত বলেন, ‘নূরুল ইসলাম মন্ত্রী হওয়ায় জেলা আওয়ামী লীগ তথা জেলাবাসী আনন্দিত। আমরা পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমাদের পঞ্চগড়বাসীর দীর্ঘদিনের দাবি এবার পূরণ হয়েছে।’

দিনাজপুর: মন্ত্রিসভায় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে ডাক পেয়েছেন দিনাজপুর-২ (বিরল-বোচাগঞ্জ) আসনের সাংসদ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। খবরটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বিরল-বোচাগঞ্জসহ দিনাজপুরের সর্বস্তরের মানুষ আনন্দ প্রকাশ করে মিষ্টি বিতরণ করে। বিরল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। আমরা মনে করি, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী তাঁর যোগ্যতার মূল্যায়ন পেয়েছেন।’

কুড়িগ্রাম: স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর কুড়িগ্রাম–৪ আসনের মানুষ মন্ত্রী পেল। আর কুড়িগ্রামের মানুষ পেল ২৯ বছর পর। ওই আসনের সাংসদ মো. জাকির হোসেনকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী করার খবরে ওই তিন উপজেলাসহ কুড়িগ্রামে বিভিন্ন স্তরের মানুষের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে। প্রতিমন্ত্রী হওয়ার সংবাদে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা রৌমারী, রাজীবপুর, চিলমারীতে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছেন। মন্ত্রী হওয়ার সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে গতকাল বিকেলে রাজীবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ থানার মোড় থেকে আনন্দ মিছিল বের করে। রৌমারী উপজেলা চেয়ারম্যান মজিবর রহমান বঙ্গবাসী বলেন, ‘আমরা আনন্দিত। অবহেলিত জনপদের উন্নয়নে নেত্রী মো. জাকির হোসেনকে মন্ত্রী করেছেন।’

লালমনিরহাট: লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী-কালীগঞ্জ) আসনের সাংসদ নুরুজ্জামান আহমেদকে সমাজকল্যাণমন্ত্রী করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।

লালমনিরহাট উন্নয়ন আন্দোলন পরিষদের আহ্বায়ক সুপেন্দ্রনাথ দত্ত বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন থেকে লালমনিরহাটের সার্বিক আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য লালমনিরহাট-পাটগ্রাম-বুড়িমারী জাতীয় মহাসড়কটিকে চার লেনে উন্নীতকরণ, লালমনিরহাটের পরিত্যক্ত বিমানবন্দরটি চালুকরণ এবং মোগলহাট শুল্ক ও স্থলবন্দর স্থাপনের সরকারি ঘোষণার বাস্তবায়নসহ লালমনিরহাটে ইপিজেড স্থাপনের জন্য আন্দোলন করছি। যৌক্তিক এসব দাবি পূরণে সংসদে এবং সংসদের বাইরে একজন মন্ত্রী হিসেবে নুরুজ্জামান আহমেদের ইতিবাচক ভূমিকা আশা করছি।’

(প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর এবং প্রতিনিধি, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও সংবাদদাতা, দিনাজপুর)