আট ঘণ্টা পর ফেরি চলাচল শুরু, যাত্রীদের দুর্ভোগ

ঘন কুয়াশার কারণে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে ফেরি, লঞ্চসহ নৌযান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। শুক্রবার ভোর থেকে বেলা পৌনে ১১টা পর্যন্ত প্রায় ৮ ঘণ্টা সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ ছিল। এতে করে ঘাটের উভয় পাশে প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় মাঝনদীতে আটকা পড়ে যানবাহনবোঝাই পাঁচটি ফেরি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয় জানায়, বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে নদী অববাহিকায় কুয়াশা বাড়তে থাকায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি, লঞ্চসহ নৌযান চলাচল ব্যাহত হয়। রাত তিনটার দিকে সামনের কিছুই দেখতে না পাওয়ায় ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এ সময় উভয় ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া রো রো ফেরি আমানত শাহ, এনায়েতপুরী, কেরামত আলী, কে-টাইপ কাবেরী ও ইউটিলিটি ফেরি রজনীগন্ধা মাঝনদীতে নোঙর করতে বাধ্য হয়। ফেরিতে এ সময় ৪০টির মতো যাত্রীবাহী কোচ, ১৫টি পণ্যবাহী ট্রাক ও ১৫টির মতো ব্যক্তিগত গাড়ি ছিল। যাত্রী ছিল প্রায় ১ হাজার ৩০০ জন।
মাঝনদীতে কয়েকটি ফেরি আটকে পড়ার পর দৌলতদিয়া ঘাটে রো রো ফেরি ভাষাসৈনিক ডা. গোলাম মওলা, খানজাহান আলী, শাহজালাল, ইউটিলিটি ফেরি শাপলা শালুক ও বনলতা এবং পাটুরিয়া ঘাটে রো রো ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান, কে-টাইপ ফেরি কুমারী, কপোতী এবং ইউটিলিটি ফেরি চন্দ্রমল্লিকা, হাসনাহেনা ও মাধবীলতা নোঙর করে রাখে।
ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যাত্রী ও চালকেরা চরম দুর্ভোগের শিকার হন। শুক্রবার সকালে পাটুরিয়া ঘাটে দেখা যায়, ঘাট থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের প্রায় চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যাত্রীবাহী নৈশকোচ ও পণ্যবাহী গাড়ি আটকে আছে। রাতে কুয়াশার কারণে নৌযান বন্ধের কথা শুনে সকাল সাড়ে সাতটায় গাবতলী থেকে বাসে রওনা করেন রাজবাড়ীর ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন। ১০টার দিকে বাসটি পাটুরিয়া ঘাট থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে সিরিয়ালে পড়ে। উপায় না পেয়ে তিনিসহ অসংখ্য যাত্রী হেঁটে ঘাটে পৌঁছান। রাজবাড়ী-১ আসনের সাংসদ কাজী কেরামত আলী ঢাকা থেকে ফেরার পথে সকালে ঘাটে এসে যানজটে আটকা পড়েন। তিনিও প্রায় তিন কিলোমিটার পথ হেঁটে ঘাটে পৌঁছান।
একই চিত্র দেখা যায় দৌলতদিয়া ঘাটেও। ফেরিঘাট থেকে মহাসড়কের গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদ ছাড়িয়ে প্রায় সাত কিলোমিটার লম্বা যানবাহনের দীর্ঘ লাইন সৃষ্টি হয়। মহাসড়কের কোথাও দুই থেকে তিন সারি সৃষ্টি হওয়ায় গাড়ি আসা-যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া তিনটা থেকে শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত ফেরিসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ ছিল। কুয়াশা কম দেখে ফেরি ছাড়লেও ৩০ মিনিট পর ৯টায় আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে বেলা পৌনে ১১টার দিকে ফেরি চলাচল শুরু হয়।