পাবনায় আরও ৯৮ জনের করোনা শনাক্ত

করোনাভাইরাস।
প্রতীকী ছবি

পাবনায় করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৫০৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৯৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। করোনা শনাক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার বলে দাবি করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

আশঙ্কাজনক হারে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় জেলা শহরে জেলা পুলিশের আয়োজনে ‘মাস্কআপ পাবনা’ শিরোনামে সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এ ছাড়া ঈশ্বরদী উপজেলা প্রশাসন উপজেলা সদরের বিভিন্ন এলাকায় জনসচেতনতামূলক প্রচারণা চালিয়েছে।

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কিছুদিন কম থাকার পর হঠাৎই জেলায় করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। সপ্তাহ ধরেই সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখী। এক সপ্তাহে মোট ৫ হাজার ২২১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৪৩৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৫০৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে শনাক্ত হয়েছেন ৯৮ জন।

করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে বর্তমানে মোট ২৫ জন রোগী ভর্তি। তাঁদের মধ্যে ৯ জন রেড জোনে এবং ১৬ জন ইয়েলো জোনে রয়েছেন। তবে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় কেউ মারা যাননি।

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, দুপুর ১২টার দিকে জেলা পুলিশের সদস্যরা সচেতনতামূলক শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে ‘মাস্কআপ’ কর্মসূচি শুরু করেন। তাঁরা পথচারীদের মাস্ক পরতে অনুরোধ জানানোসহ বিনা মূল্যে মাস্ক বিতরণ করেন। পরে শোভাযাত্রাটি মধ্য শহরের আব্দুল হামিদ সড়কের প্রেসক্লাব মোড়ে এসে মানববন্ধনে রূপ নেয়। কর্মসূচি থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও মাস্ক পরে ঘরের বাইরে বের হতে অনুরোধ জানানো হয়। পরে জেলা পুলিশের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে কর্মসূচিতে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা অংশ নেন।

কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার, মাসুদ আলম, প্রেসক্লাবের সভাপতি এ বি এম ফজলুর রহমান প্রমুখ।

পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান বলেন, করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে জেলা পুলিশ এই সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করছে। কাল থেকে জেলার প্রতিটি হাটবাজার ও জনসমাগম এলাকাগুলোতে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক থাকবে। কেউ স্বাস্থ্যবিধি না মানলে বা মাস্ক না পরলে জনগণের জীবনের নিরাপত্তায় পুলিশ কঠোর হতে বাধ্য হবে।

এদিকে জেলা পুলিশের পাশাপাশি ঈশ্বরদীতে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ঈশ্বরদী উপজেলা প্রশাসনও দিনব্যাপী সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পি এম ইমরুল কায়েসের নেতৃত্বে এ কর্মসূচি থেকে বিনা মূল্যে ৪০০ মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করা হয়।

জানতে চাইলে পাবনার সিভিল সার্জন মনিসর চৌধুরী বলেন, ‘সংক্রমণ একটু বৃদ্ধির দিকে থাকলেও পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে। আমরা পুরো জেলাকে পর্যবেক্ষণে রেখেছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে লকডাউনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। তবে জেলার জনগণ সচেতন থাকলে পরিস্থিতি ভালো থাকবে বলে আমি আশা করি।’