পাবনায় পচেই নষ্ট হলো সেই ১৫ গাছের লিচু

এই লিচু বাগানের লিচু পচে নষ্ট হয়েছে। জয়নগর মধ্যপাড়া গ্রাম, ঈশ্বরদী, পাবনা
ছবি: প্রথম আলো

পারিবারিক বিরোধের জেরে বাগান থেকে লিচু পাড়তে ‘মানা করেছিল’ পুলিশ। শেষ পর্যন্ত শত চেষ্টা করেও সেই লিচু আর বিক্রি করা সম্ভব হলো না। কারণ, অতিরিক্ত পেকে পোকা ধরে যাওয়ায় লিচু কিনতে আগ্রহ দেখাননি ক্রেতারা। ফলে বাগানেই পচে নষ্ট হলো সেই ১৫ গাছের লিচু।

ঘটনাটি পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের জয়নগর মধ্যপাড়া গ্রামের। এ নিয়ে গত ৩১ মে ‘পুলিশের “মানা”, পচে নষ্ট হচ্ছে ১৫ গাছের লিচু’ শিরোনামে প্রথম আলো অনলাইনে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। পরে পাবনার পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান বাগানের লিচুগুলো বিক্রির জন্য সলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেন।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে সলিমপুর ইউপির চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ বাবুল মালিথা প্রথম আলোকে বলেন, ‘যত্নের অভাবে লিচুগুলো ভালো হয়নি। অপুস্ট অবস্থায় পেকে লিচুতে পোকা ধরে গেছে। পুলিশ সুপারের নির্দেশের পর আমরা লিচু বিক্রির জন্য কয়েকজন ক্রেতাকে বাগানে এনেছি। কিন্তু কিছুতেই তারা এই লিচু কিনতে রাজি হয়নি। এখন বাগানেই লিচুগুলো পচে ঝরে যাচ্ছে।’

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘দুই পক্ষই বাগানের মালিকানা দাবি করছে। বিষয়টি নিয়ে আমরাও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে আছি। পুলিশ সুপারের নির্দেশনা অনুযায়ী, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় দুই পক্ষকে নিয়ে একটি বৈঠকের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আশা করছি, আলোচনার মধ্য দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে।’

প্রসঙ্গত ভুক্তভোগী ওই বাগানমালিকের নাম শামসুল হক প্রামানিক (৫৫)। লিচু বিক্রি করতে না পেরে তিনি প্রায় দুই লাখ টাকা ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলে দাবি করেছেন। শামসুল হকেরা তিন ভাই ও চার বোন। তাঁদের মধ্যে শামসুল হক নিঃসন্তান। ২০০০ সালে তাঁদের বাবা মহিউদ্দিন প্রামানিক মারা যান। এ সময় পৈতৃক জমিজমা ভাইবোনের মধ্যে ভাগাভাগি হয়। শামসুল হক বাবার জমি থেকে লিচুবাগানসহ ৫৯ শতক জমি পান। এর মধ্যে ২২ শতক জমি পরবর্তী সময়ে বিক্রি করে দেন। বাকি জমিতে নতুন করে কিছু লিচুগাছ রোপণ করেন। সেখানে বাগানের পাশাপাশি ঘর তৈরি করে বসবাস করতে থাকেন তিনি। ২০ বছর ধরে তিনি বাগানটি ভোগদখল করছেন। এর মধ্যেই হঠাৎ করে তাঁর ভাই, ভাতিজা ও ভাগনেরা জমিটির মালিক দাবি করেন। দুই পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। ফলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের পক্ষ থেকে দুই পক্ষকেই লিচুবাগানে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।