পি কে হালদার ও তাঁর সহযোগীদের ৭০ একর জমি ক্রোকের আদেশ

প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার
ফাইল ছবি

অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের মামলায় এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে থাকা ৭০ একর জমি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এই আদেশ দেন। প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর।

পিপি মাহমুদ হোসেন বলেন, মামলার তদন্তের স্বার্থে আসামি পি কে হালদার ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে থাকা মোট ৫৯ একর সম্পদ ক্রোক করার আদেশ চেয়ে দুদকের পক্ষ থেকে আদালতে আবেদন করা হয়। শুনানি নিয়ে আদালত ৭০ একর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, মামলার তদন্তের স্বার্থে পি কে হালদার ও তাঁর সহযোগীদের নামে থাকা প্রায় ৭০ একর জমি ক্রোকের আদেশ চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। আদালত দুদকের আবেদন মঞ্জুর করেছেন। ক্রোক করা জমির ওপর একটি ১০ তলা ভবনও রয়েছে। ক্রোক করা জমির বড় অংশ পড়েছে রূপগঞ্জে।

দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন আদালতে দেওয়া লিখিত প্রতিবেদনে জানান, পি কে হালদার অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ২৭৪ কোটি ৯১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৫৫ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন।

এর আগে গত বছরের ৮ জানুয়ারি পি কে হালদারের বিরুদ্ধে ২৭৪ কোটি ৯১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৫৫ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। তাঁর বিরুদ্ধে ১ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগও আনা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পি কে হালদার ও তাঁর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে জমা হয় প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩টি প্রতিষ্ঠানের হিসাবে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা, পি কে হালদারের হিসাবে ২৪০ কোটি টাকা এবং তাঁর মা লীলাবতী হালদারের হিসাবে জমা হয় ১৬০ কোটি টাকা। এসব হিসাবে এখন ১০ কোটি টাকার কম জমা আছে।

দুদক ও আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এ মামলায় পি কে হালদারের সহযোগী সুকুমার মৃধা ও তাঁর মেয়ে অনিন্দিতা মৃধা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পি কে হালদারের মামাতো ভাই শঙ্খ ব্যাপারী আদালতে জবানবন্দি দেন। এ ছাড়া পি কে হালদারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী অবন্তিকা বড়ালও গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।

তদন্তকালে জানা যায়, আসামি পি কে হালদার বিদেশে পালিয়ে আছেন।
পি কে হালদারের জন্ম পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার দিঘিরজান গ্রামে।

বাবা প্রয়াত প্রণনেন্দু হালদার ও মা লীলাবতী হালদার। তাঁর মা ছিলেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। পি কে হালদার ও প্রিতীশ কুমার হালদার—দুই ভাইই বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। পরে ব্যবসায় প্রশাসন নিয়ে পড়াশোনা করেছেন পি কে হালদার।