পিয়াস করিমের দাফন সম্পন্ন
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পিয়াস করিমের মরদেহ গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এর আগে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সামনে ও ধানমন্ডিতে দুই দফা জানাজা হয়।
গত সোমবার ভোরে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে স্কয়ার হাসপাতালে মারা যান পিয়াস করিম। তাঁর মরদেহ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়।
গতকাল সকালে পিয়াস করিমের প্রথম জানাজা হয় ধানমন্ডির বায়তুল আমান জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে। জানাজার আগে তাঁর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান কবি ফরহাদ মজহার, গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ, সাংবাদিক নূরুল কবীর, অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, অধ্যাপক সি আর আবরারসহ অনেকে।
এরপর দুপুর ১২টার দিকে পিয়াস করিমের মরদেহ বায়তুল মোকাররম মসজিদে নেওয়া হয়। জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের খতিব মাওলানা সালাহউদ্দিন দ্বিতীয় জানাজা পড়ান। এতে বিএনপির নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মওদুদ আহমদ, এম কে আনোয়ার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজসহ বিপুলসংখ্যক মানুষ অংশ নেন।
পরে মরদেহ কিছু সময় মসজিদের দক্ষিণ প্রাঙ্গণে রাখা হয়। সেখানে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষে মির্জা ফখরুল ইসলাম ফুল দিয়ে পিয়াস করিমের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
এ সময় মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘পিয়াস করিম অধিকারসচেতন মানুষ ছিলেন। তাঁর কথা ও লেখনী মানুষকে গণতান্ত্রিক আন্দোলন, অধিকার রক্ষা ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে উজ্জীবিত করেছে। কিন্তু মৃত্যুর পর তাঁকে শহীদ মিনারে সম্মান দেখানোর বিষয়ে একটি মহল অত্যন্ত ঘৃণিত আচরণ করেছে। এর তীব্র নিন্দা জানাই।’
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘শহীদ মিনার আমাদের জাতীয় ঐক্যের প্রতীক। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে এটি অর্জিত হয়েছিল। যেখানে দল-মত-ধর্মনির্বিশেষে সব সম্প্রদায়ের মানুষ একত্র হতে পারত। সরকার এ জায়গাটা ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন তারা ধর্মীয় ক্ষেত্রে জাতীয় ঐক্য গড়তে জনগণকে বাধ্য করল বায়তুল মোকররমে যেতে। এর পরিণতি হবে ভয়াবহ।’
প্রসঙ্গত, এর আগে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য পিয়াস করিমের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি না পাওয়া এবং কয়েকটি সংগঠনের মরদেহ শহীদ মিনারে নেওয়া প্রতিহত করার ঘোষণার কারণে পিয়াস করিমের পরিবার ও শুভানুধ্যায়ীরা আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।