প্রতিটি ঘর আলোকিত করা সরকারের বড় সাফল্য: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ মঙ্গলবার তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি একনেক সভায় অংশ নেন
ছবি: বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রতিটি ঘরে বিদ্যুতের আলো জ্বালাতে পারা সরকারের একটি বড় সাফল্য।

প্রধানমন্ত্রী আজ মঙ্গলবার তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ কথা বলেন।
সভায় সভাপতিত্বকালে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য একটি বড় সাফল্য যে আমরা প্রতিটি ঘরে আলো জ্বালাতে সক্ষম হয়েছি। এটাই সবচেয়ে বড় কথা।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়ে তাঁর সরকার ইতিমধ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছে। এখন একটাই লক্ষ্য—দেশে কোনো মানুষ আর গৃহহীন বা ভূমিহীন থাকবে না।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, জাতির জনকের পদাঙ্ক অনুসরণ করেই বাংলাদেশকে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে বর্তমান সরকার সচেষ্ট।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল আমরা দেশের বৃহত্তম বিদ্যুৎকেন্দ্র ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন ও শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা দিয়েছি।’

সরকারপ্রধান বলেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দীর্ঘদিন ধরে সরকার পরিচালনা করায় এই অর্জন সম্ভব হয়েছে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতা এ ধরনের সাফল্যের আরেকটি কারণ।

শেখ হাসিনা বারবার তাঁর দলকে ভোট দিয়ে দীর্ঘ মেয়াদে দেশ পরিচালনার সুযোগ দেওয়ায় দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানান।

জনগণের কাছে সরকারের অঙ্গীকার অনুযায়ী প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করায় সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তাকে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী।

বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে সরকারের বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনুমতি প্রদানের প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর তাঁর সরকার বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ২০০১ সালে তাঁর দল ক্ষমতায় না আসায় পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করা যায়নি।

বিদ্যুৎকে শিল্পায়নের চালিকা শক্তি হিসেবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের অনেক চর এলাকায় নদী ও সাগরের তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন কেব্‌লের মাধ্যমে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। যেখানে গ্রিড লাইন নেই, সেখানে সোলার প্যানেল দিয়ে যেমন বিদ্যুৎ দিয়েছি, তেমনি সাবমেরিন কেব্‌লের মাধ্যমে মূল বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি, যাতে সেখানে শিল্পায়ন হতে পারে।’

সন্দ্বীপের উদাহরণ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেখানে প্রথমে আমরা সোলার প্যানেল দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহের পর সাবমেরিন কেব্‌ল দিয়েও বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। চর কুকরি–মুকরি, রাঙ্গাবালীতেও আমরা সেভাবে দেওয়া শুরু করেছি।’

একসময় দক্ষিণাঞ্চল অবহেলিত ছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র, পায়রা বন্দর, সেনানিবাস, সড়ক–মহাসড়ক ইত্যাদি নির্মাণের মাধ্যমে এই অঞ্চলের উন্নয়ন করেছে, যা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সহায়তা করবে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় এ অঞ্চলে সবাইকে বেশি করে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলার পাশাপাশি কৃত্রিম ম্যানগ্রোভ তৈরির আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রকৃতির প্রতিশোধ খুব কঠিন। কাজেই প্রকৃতি কীভাবে এটা করে, সেটা আমি নিজের চোখেই দেখেছি বহুবার। তারপরও আমি বলব, মানুষের সুরক্ষার যে বিষয়, সেটা আমরা নিশ্চিত করেছি। গতকাল আমি বলেছি, সবাই গাছ লাগাবেন। যে দায়িত্বটা আমাদের কৃষক লীগের ওপর ন্যস্ত থাকে, তাদেরই উদ্যোগে আষাঢ় মাসে সারা দেশে বৃক্ষরোপণ করা হয়।’

পদ্মা সেতু চালু হয়ে গেলে একসময়ের চরম দুর্দশাগ্রস্ত দক্ষিণাঞ্চলের জনগণের জীবনমান আরও উন্নত হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।