প্রথম আলো দেশকে এগিয়ে নিচ্ছে

প্রথম আলোর ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল বিকেলে কুমিল্লা টাউন হলের মাঠ থেকে শোভাযাত্রা বের করা হয়। ছবিটি শহরের পূবালী চত্বর থেকে তোলা l প্রথম আলো
প্রথম আলোর ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল বিকেলে কুমিল্লা টাউন হলের মাঠ থেকে শোভাযাত্রা বের করা হয়। ছবিটি শহরের পূবালী চত্বর থেকে তোলা l প্রথম আলো

প্রথম আলো একটি আলোকবর্তিকা। যার মাধ্যমে মানুষ, সমাজ ও দেশ আলোকিত হচ্ছে। এ দৈনিকটি শুধু সংবাদ পরিবেশন করেই দায়িত্ব শেষ করে না, সমাজ উন্নয়নে নানা ধরনের ভূমিকা রেখে চলেছে। একটি পত্রিকা যে সমাজের সব শ্রেণির মানুষের নির্ভরতার জায়গা হতে পারে, তা প্রথম আলো প্রমাণ করেছে। এভাবে এই পত্রিকা দেশকে এগিয়ে নিচ্ছে। প্রথম আলোর এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকুক যুগ যুগ।
প্রথম আলোর ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। জেলা, উপজেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় মিলিয়ে দেশের ৮৭টি জায়গায় গতকাল শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। এসব কর্মসূচি পালনে সহযোগিতা করে প্রথম আলো বন্ধুসভা।
বক্তারা আরও বলেন, প্রথম আলো দলনিরপেক্ষ কাগজ। এ দৈনিকটি সূর্যের কিরণের মতো জ্ঞানের আধার। নারী শক্তিকে জাগ্রত করে। শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হলে প্রথম আলো পড়তে হবে।
আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক, আঞ্চলিক কার্যালয়, প্রতিনিধি ও সংবাদাতাদের পাঠানো খবর:
 কুমিল্লা:  বিকেল সোয়া তিনটায় নগরের কান্দিরপাড় থেকে শোভাযাত্রা বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কুমিল্লা টাউন হল মাঠে গিয়ে শেষ হয়। এরপর ভাষাসৈনিক রফিকুল ইসলাম মুক্তমঞ্চে মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। এতে বক্তব্য দেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আমীর আলী চৌধুরী, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ, কুমিল্লা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ নাজনীন রহমান প্রমুখ। শিক্ষাবিদ আমীর আলী চৌধুরী বলেন, ‘প্রথম আলো মিডিয়া জগতে এক আন্দোলনের নাম। বাংলাদেশের মানুষের জীবনের চাওয়া-পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রথম আলোর রয়েছে বিশেষ ভূমিকা, আর তা হলো দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।’

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল সিলেট নগরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মুক্তমঞ্চে সংগীত পরিবেশ করছেন নগরনাটের শিল্পীরা l ছবি: প্রথম আলো
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল সিলেট নগরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মুক্তমঞ্চে সংগীত পরিবেশ করছেন নগরনাটের শিল্পীরা l ছবি: প্রথম আলো


ময়মনসিংহ:
বেলা তিনটায় ময়মনসিংহ শহরের ফিরোজ জাহাঙ্গীর চত্বর থেকে একটি শোভাযাত্রা বের করেন ময়মনসিংহ, আনন্দ মোহন কলেজ ও মুমিনুন্নিসা সরকারি কলেজ বন্ধুসভার বন্ধুরা। এতে পাঠকেরাও অংশ নেন। বিকেল চারটায় টাউন হল মাঠে কেক কেটে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এ সময় শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম রাফিক উদ্দিন, কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ এখলাস উদ্দিন খান, ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদের সাধারণ সস্পাদক ইয়াজদানী কোরায়শী, কবি শামসুল ফয়েজ প্রমুখ বক্তৃতা করেন। বক্তারা বলেন, প্রথম আলো মানুষের কথা বলে।
সিলেট: আমন্ত্রণ পেয়ে সুনামগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চল দিরাই থেকে এসেছিলেন বাউল বশিরউদ্দিন সরকার। তিনি প্রথম আলোকে নিয়ে তাৎক্ষণিক একটা গান রচনা করে ফেলেন। বশিরউদ্দিন গাইলেন, ‘ভাবতে ভাবতে সতেরো বছর পার হইয়া গেল/ প্রথম আলো না পড়িলে লাগে না যে ভালো/ দেশ-বিদেশে ৫৫ লাখ পাঠকও হইল/ নারী-পুরুষ সবাই মিলে প্রথম আলো বলো’। বেলা তিনটায় নগরের চৌহাট্টা এলাকার সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ গান পরিবেশন করেন। পরে এখানে আয়োজিত সভায় বক্তব্য দেন কবি শুভেন্দু ইমাম, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী, সিলেট কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তাক আহমাদ দীন প্রমুখ।
শেরপুর: সকাল সাড়ে ১০টায় শেরপুর জেলা শহরের নিউমার্কেট এলাকায় অবস্থিত পাতাবাহার খেলাঘর আসর প্রাঙ্গণ থেকে এক আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে খেলাঘর প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। পরে এখানে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন শেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যাপক সুধাময় দাস, সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক শিবশংকর কারুয়া প্রমুখ।

টাঙ্গাইল: বিকেলে স্থানীয় শহীদ মিনার থেকে একটি শোভাযাত্রা বের করা হয়। এটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ফিরে আসে। সেখানে প্রথম আলোকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য দেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) টাঙ্গাইল শাখার সহসভাপতি বাদল মাহমুদ, আইনজীবী এস আকবর খান, মহিলা পরিষদ টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শাহানাজ খান প্রমুখ।

 চাঁদপুর: বেলা তিনটায় চাঁদপুর প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণ থেকে শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে চাঁদপুর শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সড়কের পাশে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে এসে শেষ হয়। বিকেল পৌনে চারটায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ শহীদ মিনারে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন।

প্রথম আলোর ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল শেরপুর শহরের পাতাবাহার খেলাঘর আসর প্রাঙ্গণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। এতে শিশু শিল্পী প্রিয়ন্তী হোড় একক নৃত্য পরিবেশন করে l প্রথম আলো
প্রথম আলোর ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল শেরপুর শহরের পাতাবাহার খেলাঘর আসর প্রাঙ্গণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। এতে শিশু শিল্পী প্রিয়ন্তী হোড় একক নৃত্য পরিবেশন করে l প্রথম আলো

মৌলভীবাজার: বিকেলে মৌলভীবাজার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহীদ মিনারে আবার ফিরে এলে শুরু হয় অনুষ্ঠান। সূচনা বক্তব্য দেন প্রথম আলোর মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি আকমল হোসেন। এতে আরও বক্তৃতা করেন লেখক-গবেষক মোহাম্মদ আবদুল খালিক ও প্রভাষক শক্তিপদ পাল।
সুনামগঞ্জ: বিকেল চারটায় জেলা শহরের পৌর ভবন চত্বরে অনুষ্ঠান হয়। এতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জ মুক্তিযুদ্ধ চর্চা ও গবেষণা কেন্দ্রের আহ্বায়ক বজলুল মজিদ চৌধুরী, জেলা উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি বিজন সেন রায়, শিক্ষক আলী হায়দার, হাসন রাজা ট্রাস্টের সভাপতি দেওয়ান ইমদাদ রেজা চৌধুরী প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সুনামগঞ্জ বন্ধুসভার সভাপতি মো. রাজু আহমেদ।
জামালপুর: বিকেল সাড়ে তিনটার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে তমালতলা এলাকার প্রেসক্লাব মাঠ প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। বিকেল চারটায় আলোচনা সভা শুরু হয়। আলোচনা সভায় বন্ধুসভার উপদেষ্টা রফিকুল ইসলাম, তরুণ পাঠক আহনাফ শাহাদ নিয়ন, নারী পাঠক বেগম রোকেয়া সরদার, জামালপুর বন্ধুসভার সভাপতি নাজমুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক কমল হাছান প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া: বেলা তিনটায় জেলা শহরের পাওয়ার হাউস রোড এলাকা থেকে একটি শোভাযাত্রা শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে অবকাশ এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। এখানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বন্ধুসভার সভাপতি অভিজিৎ রায়ের সভাপতিত্বে পাঠক শাহীন মৃধা, মাহমুদুল হক, সেঁজুতি আক্তার, চিকিৎসক আবু সাঈদ, সদর মডেল থানার এএসপি তাপস রঞ্জন ঘোষ শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।

নেত্রকোনা: বেলা সাড়ে তিনটার দিকে প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণ থেকে শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে এসে শেষ হয়। বিকেল চারটায় বন্ধুসভার খুদে সদস্য অনসূয়া সরকার ও সম্পদের কণ্ঠে ‘তুমি নির্মল কর, মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে’ যৌথ গানের মধ্য দিয়ে আলোচনা সভা শুরু হয়। সভায় বন্ধুসভার সভাপতি আবদুর রাজ্জাক, তরুণ পাঠক নিহার সরকার, লিটন মিয়া, নারী পাঠক রেহানা সিদ্দিকী প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

কিশোরগঞ্জ: বিকেলে স্থানীয় বিয়াম স্কুল মাঠে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন কিশোরগঞ্জ বন্ধুসভার সভাপতি জিয়াউর রহমান। বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক শামীম রেজার সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন পাঠক সেলিম জাবেদ, আসাদুল হক, সোহেলী শিরিন ও বিপুল মেহেদী। রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করেন বন্ধুসভার অনুষ্ঠান সম্পাদক জান্নাতুন নাঈম।

হবিগঞ্জ: সন্ধ্যায় হবিগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে আলোচনা সভা হয়। এতে হবিগঞ্জ বৃন্দাবন সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ইকরামুল ওয়াদুদ, সাংবাদিক জিয়া উদ্দিন দুলাল, পাঠক জান্নাত ফেরদৌস ও মো. মোছাব্বির চৌধুরী বক্তৃতা করেন। সমাপনী বক্তব্য দেন বন্ধুসভার হবিগঞ্জ জেলা শাখার সহসভাপতি সৈয়দ আবদুল বাকী মো. ইকবাল।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়: বিকেল সাড়ে তিনটায় কলাভবনের সামনে থেকে শোভাযাত্রা বের হয়। এরপর শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুরাতন শহীদ মিনার এলাকায় এসে শেষ হয়। সেখানে বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জি এম মনিরুজ্জামান, মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাহিদ শাহ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভার সভাপতি নাজমুল হক, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়: বেলা তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে এসে শেষ হয়। মিলনায়তনের ‘মুক্তমঞ্চ’-এ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। বন্ধুসভার সভাপতি শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে পশুপুষ্টি বিভাগের শিক্ষক মো. কামরুজ্জামান, শিক্ষার্থী কিশোর কুমার ও শিউলি আক্তার বক্তব্য দেন।

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়: বেলা সোয়া তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। এখানে আয়োজিত সভায় উপাচার্য মো. আমিনুল হক ভূঁইয়া, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক মো. রাশেদ তালুকদার, অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক মুন্সী নাসের ইবনে আফজাল, বাংলা বিভাগের শিক্ষক মো. সোহেল রানা, অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী শতাব্দী পাল প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

এ ছাড়া নানা অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর, জামালপুরের সরিষাবাড়ী ও মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপন করা হয়।