প্রথম আলোর তিনজনসহ ২২ প্রতিবেদক পেলেন ডিআরইউ পুরস্কার
ছাপা পত্রিকা, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের ২২ জন প্রতিবেদক পেলেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) পুরস্কার। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (কেআইবি) মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তাঁদের হাতে সেরা প্রতিবেদনের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। এতে সহায়তা দিয়েছে মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান নগদ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। তিনি তাঁর বক্তব্যে নৈতিকতা মেনে সাংবাদিকতা করার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, গণমাধ্যম জনজীবনের এক অপরিহার্য অনুষঙ্গ। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে অনেক নাশকতার ঘটনা ঘটছে। সাংবাদিকদের সেসব থেকে জনগণকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার পরিচয় দিয়ে বিশ্বাসযোগ্য, নির্ভরযোগ্য এবং যথাযথ তথ্যভিত্তিক সংবাদ পরিবেশন করতে হবে। যে গণমাধ্যম জনগণের যত আস্থা অর্জন করতে পারবে, সেই গণমাধ্যম তত এগিয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিআরইউ সভাপতি মুরসালিন নোমানী। তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগ থেকে সাংবাদিকদের রক্ষা করতে সরকারকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
স্বাগত বক্তব্যে ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান খান বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যেও ঝুঁকি নিয়ে সাংবাদিকেরা সংবাদ প্রচার করেছেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নগদের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, সুষ্ঠু সাংবাদিকতা ন্যায়বিচার এনে দেয়, অবকাঠামোগত পরিবর্তন আনে। এ পুরস্কার সাংবাদিকদের আরও ভালো কাজে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।
আরেক বিশেষ অতিথি নগদের নির্বাহী পরিচালক নিয়াজ মোর্শেদ বলেন, সুস্থ ও ভালো সাংবাদিকতার সঙ্গে রয়েছে নগদ।
এ পুরস্কারের জন্য গঠিত ১০ সদস্যের জুরিবোর্ডের চেয়ারম্যান জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শাহজাহান সরদার জানান, এবার পুরস্কারের জন্য মোট ২২টি ক্যাটাগরিতে ২৩০টি প্রতিবেদন জমা পড়ে। এর মধ্যে ছাপা পত্রিকা ও অনলাইনের জন্য নির্ধারিত ১৩টি ক্যাটাগরিতে জমা পড়ে ১৫৪টি প্রতিবেদন। ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের (টেলিভিশন ও রেডিও) ৯টি ক্যাটাগরিতে ৭৬টি প্রতিবেদন জমা হয়। তিনি জানান, ২৫ বছর আগে ৩টি পুরস্কারের মধ্য দিয়ে ডিআরইউ পুরস্কার যাত্রা শুরু করে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন এবারের পুরস্কারের জন্য গঠিত কমিটির আহ্বায়ক ডিআরইউর সাংগঠনিক সম্পাদক মইনুল হাসান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জুরিবোর্ডের কয়েক সদস্য এবং ডিআরইউ কার্যনির্বাহী কমিটির প্রতিনিধিরা।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিবেদনের জন্য যাঁরা নগদ-ডিআরইউ বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড ২০২১ পেলেন: ছাপা পত্রিকা ও অনলাইন থেকে—দৈনিক সমকালের আবু সালেহ রনি (মুক্তিযুদ্ধ, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি), দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের আব্বাস উদ্দিন নয়ন (শিক্ষা) ও জেবুন নেসা আলো (আর্থিক খাত—ব্যাংক, বিমা ও পুঁজিবাজার), দ্য ডেইলি স্টারের এ কে এম রাশিদুল হাসান (অপরাধ ও আইনশৃঙ্খলা), দৈনিক আমাদের সময়ের মো. কবির হোসেন (রাজনীতি, প্রশাসন, বিচার, সংসদ ও নির্বাচন কমিশন), ঢাকা পোস্টের মো. জোবায়ের হোসেন (ক্রীড়া), বাংলা ট্রিবিউনের মো. শাহেদুল ইসলাম (সেবা খাত), দৈনিক যুগান্তরের এস এ এম হামিদ-উজ-জামান (কৃষি ও পরিবেশ), দৈনিক কালের কণ্ঠের জিয়াদুল ইসলাম (অর্থনীতি), দৈনিক সময়ের আলোর রফিকুল ইসলাম সবুজ (বৈদেশিক সম্পর্ক—কূটনীতি ও জনশক্তি), দৈনিক প্রথম আলোর রোজিনা ইসলাম (স্বাস্থ্য), নাজনীন আখতার (নারী, শিশু ও মানবাধিকার) ও আসাদুজ্জামান (তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি)। ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম থেকে—যমুনা টিভির সুশান্ত সিনহা (অর্থনীতি), একাত্তর টেলিভিশনের কাবেরী মৈত্রেয় (আর্থিক খাত—ব্যাংক, বিমা ও পুঁজিবাজার), একাত্তর টেলিভিশনের মো. আদনান খান (সুশাসন ও দুর্নীতি—অনুসন্ধানী), মাছরাঙা টেলিভিশনের মো. মাজহারুল ইসলাম (অপরাধ ও আইনশৃঙ্খলা), মাছরাঙা টেলিভিশনের কাওসার সোহেলী (নারী, শিশু ও মানবাধিকার), নাগরিক টিভির শাহনাজ শারমীন (তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি), চ্যানেল-২৪-এর সাদমান সাকিব (ক্রীড়া), যমুনা টিভির আবু সালেহ মো. পারভেজ সাজ্জাদ (স্বাস্থ্য) এবং এনটিভির শফিক শাহীন (সেবা খাত)।