প্রধানমন্ত্রীর মাল্টা ও ফ্রান্স সফর বাতিল
প্যারিসের হামলার পর ইউরোপের পরিস্থিতি এবং দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিকে বিবেচনায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাল্টা ও ফ্রান্স সফর বাতিল করা হয়েছে। কমনওয়েলথ সরকারপ্রধানদের সম্মেলনে যোগ দিতে ২৭ নভেম্বর থেকে মাল্টায় এবং জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ৩০ নভেম্বর শেখ হাসিনার প্যারিস যাওয়ার কথা ছিল।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পরিবর্তে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী কমনওয়েলথ সরকারপ্রধানদের বৈঠকে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবেন। অন্যদিকে পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবেন।
ইউনেসকোর সাধারণ সম্মেলনে যোগ দিতে ১৬ ও ১৭ নভেম্বরের প্যারিস সফরের পর এ নিয়ে চলতি মাসে প্রধানমন্ত্রীর তিনটি ইউরোপ সফরই বাতিল করা হলো।
সরকারের উচ্চপর্যায়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মাল্টা সফরটি নিয়ে গত বুধবার দিনের প্রথম ভাগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্রসচিবসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আলোচনা হয়। এরপর ওই দিন দুপুরেই সফরটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মাল্টা সফর বাতিলের আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা দিয়ে গতকাল সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে।
গত বুধবারের আলোচনায় উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে বলেন, ইউরোপের পরিস্থিতির চেয়ে মাল্টা সফর বাতিলের ক্ষেত্রে দেশের পরিস্থিতি, বিশেষ করে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের ফাঁসির আদেশ বহালকে কেন্দ্র করে জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপি কী ধরনের তৎপরতা চালাবে সেটি বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া গত বুধবার দিনাজপুরে ইতালির ধর্মযাজকের ওপর হামলার পর বিদেশিদের ওপর হামলার সঙ্গে মানবতাবিরোধী বিচারের যোগসূত্র দেখছে সরকার। সব মিলিয়ে এ মুহূর্তে মাল্টা যাওয়া সমীচীন হবে না মেনে সফরটি বাতিল করা হয়েছে।
জানা গেছে, মাল্টা থেকেই প্রধানমন্ত্রীর জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে প্যারিস যাওয়ার কথা ছিল।
ঢাকা ও প্যারিসের কূটনৈতিক সূত্র বলেছে, শুক্রবারের হামলার পর প্যারিসের সামগ্রিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. শহীদুল ইসলাম পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দুই দফা প্রতিবেদন পাঠান। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত রোববার সকালে বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের উদ্বোধনী অধিবেশনের পর ফ্রান্সের সর্বশেষ পরিস্থিতি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী প্যারিস সফর বাতিলের সিদ্ধান্ত নেন।